মৃত শালিক
সৌন্দর্যের দ্যুতি ছড়িয়ে দাঁড়িয়ে আছ নিষ্পলক
মাল্টিকালার আলোয় ঝলমল আইলাইনার টানা
চোখদুটি; আগন্তুকের দৃষ্টি খোঁজে কালারফুল
ব্রা-র ফিতে অথবা উত্তেজক ওষ্ঠজোড়া
মোহন দৃষ্টিতে কাছে ডেকে বিলিয়ে দাও
ঝকঝকে দাঁতের শুষ্ক হাসি
বিবিধ কৌশলে
একটু দেখ, এয়ারকন্ডিশনড ঘরের গ্লাস সরিয়ে
মৃত কপোতাক্ষের বুকে মরে পড়ে আছে একটি শালিক
দেশভ্রমণের ক্লান্তি নিয়ে।
ভুল সুর
চেতনার ফাঁক গলে বেজে উঠে ভুল সুর
বাতাসের গায়ে জড়িয়ে যেতে থাকে ক্রমশ
নগরের দেয়ালে প্রতিধ্বনিত হলে
আকাশের তারাগুলো দূরে সরে যেতে থাকে;
মনে পড়ে মাঠে দৌড়ে ফড়িং ধরতে গেলে
হাত বাড়ালেই উড়ে যেত নিপুণ কৌশলে।
একান্ত রাতের দৃশ্যগুলো বদলে গেলে
তেলাপোকা ডিম পাড়ে ডায়েরির ভাঁজে।
ভুল সুর বাজে
আর কুয়াশার গাঢ়তা বাড়ে ক্রমশ
সম্মিলিত নিশ্বাস পড়ত আমাদের
কুঁড়ির নরম বুক চিড়ে প্রতিটি সকালে
বিকশিত হয় গোলাপ, কাঁটার স্পর্শ মেখে
পাপড়ির চুমো মেখে করিম চাচার স্টলে
চায়ের ভেতরে ঢেলে দেই আমাদের ঘুমক্লান্তি
স্বপ্নসহবাসে বেড়ে ওঠা ক্রমাগত
বালুর সৌধ গড়ে তোলার ক্লান্তি নিয়ে
কুকুর-ডাকা রাতে যাই নগ্ননৃত্য উপভোগে;
রাশি রাশি অন্ধকার স্তরে স্তরে রেখে
পকেটের ভাঁজে অথবা মানিব্যাগের শূন্যতায়
দোলনায় চড়ে মনে পড়ে না
সম্মিলিত নিশ্বাস পড়ত আমাদের।
যাপিত মুহূর্তগুলো তোমার উড়ে গেছে
নাটাই ছেঁড়া ঘুড়ির মতো।
রক্তাক্ত হাস্নাহেনা
উৎকণ্ঠার ঊর্ধ্বমুখি টানে
বাতাসের বুক চিরে যায় গাঢ়-তপ্ত শ্বাস;
নাগরিক কোলাহলে মিশে যেতে থাকে
ফুটন্ত এক হাস্নাহেনার
নির্ঘুম চোখের পাললিক ক্লান্তি।
ইলেকট্রনিক বাতির শোষণে
উড়ে যেতে থাকে কোমল হাসি-পিণ্ড;
দুপুরের গ্রামিণ নির্জনতা, বিকেলের গল্প আর পানের রঙিন পিক
পিষ্ট হতে থাকে সেলাই মেশিনের ঘড়ঘড় শব্দে
দিন সমাপনে শূন্য ভাঁড়ারে জমে শুধু
এক-দুই করে অনেকগুলো দীর্ঘশ্বাস…
একদিন অন্ধকারের সুতো বেয়ে
আচমকা নামা দুঃস্বপ্নের ভেতর দিয়ে
রক্তাক্ত হাস্নাহেনা ঝরে পড়ল ভবিষ্যতের কর্কশ পিঠে।