বেলা করেই ঘুম ভাঙে । তারপর কাকার দোকানে গিয়ে বসি । পরোটা-ঘুগনি-চা । সিগারেট জুটছে না, ফলত বিড়িতেই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে ।
বাণীপুর । জলরঙে আঁকা । এই যে আমি সেই পথে আসি, যাই । গাছের নিবিড়ে গিয়ে বসি । এত চুপচাপ, এত শান্ত সমাহিত যে, আমিও চুপ হয়ে যাই । চুপ হয়ে থাকতে ভালো লাগে । খুব নিবিড়ভাবে চুপ করে থাকলে গাছের কথা শোনা যায় । তার ভাষা বোঝার চেষ্ট করি রোজ । অথচ যে ধ্যান দরকার, তা নেই আমার ।
আজ সকালটা অন্যরকম ছিল । শূন্যতার উপলব্ধিগুলি যখন আচ্ছন্ন করেছিল আমায় । সব মিথ্যে বলে উড়িয়ে দিয়েছিলাম । জানতাম সেই প্রিয় মানুষীর সাথে কথা হবে না আর এ জীবনে । অথচ কেন এমন হয় বলো ! কেন এমন হবে ! হঠাত্ ফোন বেজে উঠলো । দীর্ঘ একমাস পর । পরিচিত সেই ছবি, যা আমার খুব প্রিয় । হাত কাঁপতে থাকে বিস্ময়ে । ভাবতে পারছি না সন্দেশ ফোন করেছিল । বুঝতে পারছিলাম না, কী করবো ! কী করা উচিত । আহা, যার সঙ্গে আমার প্রাণের খেলা । যে আমার পরম প্রিয় । সেই মনের মানুষ । যাকে পেয়েছিলাম শহরের শীতের ধুলোয় । সন্ধ্যার নির্জনে । বইমেলার দুপুর রোদে । যার ঘামে ভেজা আঙুল, আদুরে আবদার । সব মনে পড়ে যাচ্ছে আমার ।
দেরী হয়ে গেল । যেই ফোনটা ধরে কাঁপা কাঁপা গলায় বললাম, হ্যালো… কেটে গেল । জানি ও আর ফোন রিসিভ করবে না আজ । খুব জেদ তার । খুব রাগ ।
পাশে বসা বন্ধুকে বললাম, আমি জিতে গেছি । সন্দেশ কথা দিয়েছিল যে, ও আর কখনও ফোন করবে না আমায় । কিন্তু জানতাম, করবে । করেছে সে ফোন । এই যে পাওয়া, তা অনেক, আমার বিশ্বাসটাকেই খুঁজে পাওয়া । আমি না, জিতে গ্যাছে আমার বিশ্বাস ।
৩১.০৩.২০১৬
অমিতাভ দাস
কবি, গল্পকার
সম্পাদক : অবগুণ্ঠন