অর্থবাহার
হাদিসে কুদসিতে যেমন ঈশ্বর নিজের দিকে তাকালেন। পরে আলো প্রস্ফুটিত হলে দেখা গেলো একটি দোয়েল সুর হয়ে ব্রহ্মাণ্ড চড়ে বেড়াতে লাগলো। ঝরে যাওয়া মৃত পাতাটি ভাসতে লাগলো জলের বানে। একটি বৃক্ষের আত্মকথনে পৃথিবী ভারী হয়ে উঠলো।
তথাপি তিনি বললেন,-নাচোর আমরা নৃত্যের তালে শৈল্পিক এক বেদনা লয় পেলাম।
তিনি বললেন, গাও— আমরা সুরে’র দিকে ধাবিত হতে হতে হয়ে উঠলাম প্রার্থনার মতো নির্জন ফল!
আপাত নদীবিধৌত কোনো প্রাণ নেই যেহেতু, আমাদের চলমানে তাহার আয়নাটি স্পষ্টতর রয়। বস্তুত ঈশ্বর মানুষকে অর্থবহ করে তুলতেই মস্তিষ্কে সেটাপ করলেন শূন্যতা নাকি?
যেখানে শূন্য বিলীনে মনসুর এক খেলার পুতুল ঈশ্বর-রসিকতার মস্ত ছল। এই মর্মে ‘আনাল হক’ সকল কিছুতে তুলে আনে জপ! এদিকে নাস্তিকদের দিলেন তার বিরোধে ফুটে উঠা সুমিষ্ট খাবার। যেন পুতুল, পুতুল পুতুল খেলে তাহার ভেতর তাহারেই হাসায়। মূলত তিনি চাইছিলেন মানুষের নিছক সফলতা নয়, স্বয়ং অর্থবাহার!
সহজ
অনেক সহজ হয়ে মিশে দেখেছি-
সহজের মতোন গভীর, ছুঁতে পারে না তারা।
পেয়ে প্রেম, মেকি হাসি, সহে যতো যাতনা তার
অগভীরে ভাসে কেবল, তথা সহজ হয় নি তারা।
যতোটা না গহীনে জল, যতোটা না হ’লে পরে সহজ
অতোটা সয় না তারা, অতোটা হয় না তাদের গরজ
দেখো তুমুল বাজে মাদল, ওইখানে কার বসত?
যতোটা সুর, অতোটা ঈশ্বর ক’রে বিনোদন
তোমরা তা’রে চাও, চাও প্রতি প্রার্থনাবেলায়
পাও কী তোমাদের? পাও কি নিজেরে অতোটা?
যতো সহজ হ’লে পরে আরো নিগূঢ় হয় বেদনা?
পরমের দিকে
জন্মে যে ভ্রমণ, এখানে শিশির সিক্ত ভাষা
গহীনের দিকে যেতে যেতে দৃশ্যত অপার!
আয়ত্তহীন ব্রহ্মাণ্ডের সূত্র ধরে পরিপ্রেক্ষিত
এই ভ্রমণ সতত পদক্ষেপ।
ক্রমশ আগামীর জন্য ছলনা ছেড়ে প্রকাশিত হয়।
নদীর ছায়া পরে, মন ও মগজে অনুতাপ,
হায় যাপন দাগ!
ফেটে উদিত হতে থাকে জন্মান্তর মানুষের
যা কিছু অনুধাবনের বাহিরে অবোধগম্য-
হাল ধরে, নিথর তথা অমোঘ ভাষা বেয়ে বেয়ে
পরম প্রার্থনা’র দিকে যায়!
পূর্বপুরুষ
আমার পূর্বপুরুষ ওই মন্দিরটা
তার ধর্ম ছিলো সুর আর
উত্তরপুরুষ তার দাদারই বিপন্নবোধ
তারও পূর্বে ডেবিড (দাউদ আঃ) গাইতে শুরু করে
পাখি এসে প্রার্থনায় নত হয় আর মাছেরা ঘোরগ্রস্ত হয়ে
ধরা দেয় এই মানুষের উদরে।
আমার পূর্বপুরুষ ওই যাযাবর
তার ‘আমি’ ছিলাম। যা বস্তুত সেও!
ধারায় বহমান এক স্রোতস্বিনী নদী
বুকে বেদনা-বাঁশি আঁকড়ে এ জন্মেও-
নোনতা থেকে যায়!