তবুও বৃদ্ধ হই
দৃশ্যের পর দৃশ্য ক্ষয়ে যায়
বৃদ্ধ হয় কালের খেয়া-
নদী ও মৃত্তিকায় শুধু-ই কান্নার ধ্বনি
পাওয়া-না পাওয়ার সহস্র রোদন-
তবুও অপেক্ষায় দাঁড়াই-দাঁড়িয়েছি।
নতজানু শ্মশান মৃত্তিকা-
দহকালের মন্ত্রণা ছুঁয়ে অগ্নির তপস্যা।
শস্যমূলে খুঁজি জন্মের নিরন্তর জিজ্ঞাসা-
নীলাকাশে চিৎকার শুধু মাতৃজঠরের জ্বালা।
বটবৃক্ষ হয়ে ছায়াবতী তোমার আঁচলখানি-
তবুও দৃশ্যের পর দৃশ্য ক্ষয় হয়ে যায়
বৃদ্ধ হই তুমি আমি।
সূর্যস্নান
রাত জাগা ভোর শিশিরের ফোঁটা
চঞ্চল চরণ ফেলি-বনপথে।
চাঁদের সঞ্চয় ফুরিয়েছে-
শুকতারার নিবু নিবু আলো…
আজও হয় জানালায় স্বপ্নের কানাকানি-
চোখাচুখি শুধু মৌমাছির।
পতঙ্গের জন্ম রহস্য ভেদ করে-ভোরের ডাহুক
ফুটে প্রজাপতির ডানায় রংধনু।
পথের ধারে হলুদ বেগুনী ফুল
সূর্যস্নান করে সবুজ বনভূমি…
তোর গান আজও বাজে
ধর তুই-আমি শুয়ে আছি ভীষ্মের শরশষ্যায়-
তপ্ত সূর্য ছিলো সাক্ষী, সাক্ষী ছিলো নীলকণ্ঠি
অথচ পাতার মর্মরে ছিলো বিকেলের গান-
তবুও আমি-তুই জেগে আছি ভীষণ ব্যথায়।
পথের টানে, পথ গিয়েছে পাহাড়ের কোলে-
তবুও লালমাটির দ্যাশে তোর গান আজও বাজে।
ধর তুই-আমি হবো একলব্যের বাণ অদম্যতায়-
কর্ণমূলে ধুতরা, জেগে থেকেছি গভীর তপস্যায়
কদমরেণু উড়িয়ে হাওয়ায় সূর্যপ্রণাম সেরে নেবো-
দ্রৌপদ কন্যারূপে অমীমাংসিত শ্রাবণ সন্ধ্যায়।
পথের গানে, ধূসর পথ গিয়েছে সবুজে মিশে-
তবুও লালমাটির দ্যাশে আজও তোর মল বাজে।
নহতি
চা বিরতিতে কবিতা দাঁড়াল-স্মৃতির বনতলে।
নীল ওড়নায় হাওয়ার দোলন ভুলে
চুলগুলো গুছিয়ে নিতে নিতে বললাম-
বড্ড সেজেছো কালো টিপে।
একগাল হেসে, হাত বাড়িয়ে বললো-
চল দুজনে হারাই, হারাবার নিয়মে।
তথাকথিত নিয়ম মানি না বলেই-
সংসারের টানপোড়নে ব্যতিব্যস্ত
চোখ কান নাক-এমন কি মনন-
ইচ্ছে ছিলো সব লিখে যাবো
-সাদা কাগজের পরতে।
ইচ্ছে ছিলো দেহের প্রতিটি অঙ্গ
-দান করে যাবো রিসোর্স কেন্দ্রে।
হয়তো কবির ভাষা বুঝে নিবে অকবি ডাক্তার
সারাংশ বুঝে একদিন লিখবে-ই লিখবে
শিহরিত হবার মতো-ই রোমাণ্টিক উপন্যাস।