আবার পারমিতা
ঘুরেফিরে সেই পারমিতা! প্রজ্ঞাপারমিতা ঠিকই আছে কিন্তু শীলপারমিতা ? শীল যে ক্লীবলিঙ্গ? তুমি বললে: তুই ব্যকরণ গিলেগিলে মর। আমি দেখি, পারম্যং থেকে পারমি সেই সঙ্গে ‘তা’, পারমিতা-পরমের ভাব। থাক দোষ, আমি মেনে নিচ্ছি দান পারমিতাকেও। তুমি বললে মূর্খ, পাঁচটি পারমিতা পেরিয়ে তবে না প্রজ্ঞাপারমিতা! আমি মুখ খোলার আগেই তুমি বললে-এই পাঁচ পারমিতার সঙ্গে প্রজ্ঞাপারমিতা মিশলে তবেই না পূর্ণ পারমিতা। আমি অবাক হয়ে তাকাই, আমি বুঝি, আমি মূর্খ, আমারই সমস্ত অজ্ঞান, পারমিতাকে তাই অর্জন করতে পারি না।
পুনর্পাঠের
মন ভোলানোর খেলাগুলো ভুলে যেতে চাইছি
ভুলে যাচ্ছি ভুলে যাচ্ছি ভুলে যাচ্ছি যত
জেগে উঠছে নামহীন ভূখ- এক
অন্তরঙ্গ পাখি এসে খুঁটে খায়
নির্জন অক্ষরের দানা
অস্থিকাঠামোর ভেতর
সামনে পেছনে ডাইনে বাঁয়ে সমস্ত কৌণিক বিন্দু জুড়ে ছেয়ে নামছে নিরঙ্কুশ নির্জনতা
যুগপৎ দর্শকের দেখা
সমস্ত সংশ্লেষ ও মোচনগুলো
বিচ্যুতি ও কৌশলগুলো
এই সবই অক্ষর সংকেতে ছড়ানো ছিটানো
বাক্যের চোখ ও ঠোঁটের কোণে লেগে আছে অন্তর্গত কৌতুক
যার অর্থের আবেগে ভেসে যায় হৃদয় চরাচর
তারপরও ঘুরে ঘুরে মর অভিমানী?
ঘুরে ঘুরে কেঁদেকেটে তুমি ফতুর হয়ে যাও?
অথচ এই নশ্বর দেহভা- সাঁকো
অপেক্ষায় অপেক্ষায় রচনা করেছিল
তোমারই বন্দনা
উড়ে যায় নিপাখি
সে ছিলো সে আছে
তোমারই অস্থিকাঠামোয় এখনও
ছোঁও, ছুঁয়ে দেখো
নিজেকে ছুতে তো কোনও অজুহাত লাগে না
পৃথিবী পাখিটা
আর স্বপ্নে পাওয়া ধোপায় কাচা টাঙানো হৃদয়
আসলে কারোর জন্য নয়
এমন নগদ নিঃসঙ্গতায় যে কেউ
স্তব্ধতার ভাষায় ভুল বকতে থাকে
আর সুরের নেশায় উড়তে থাকে উড়তেই থাকে
পৃথিবী পাখিটা
মানুষের ঘিলুর ভেতর
মানুষের ঘিলুর ভেতর অদ্ভুত কিছু দানা পাওয়া গেছে
সেই সব দানার কপাট খোলা গেলে জানা যাবে
কিভাবে খুনি ও সন্ত প্রেম ও প্রতারণা প্যাঁচ খেলে বসে আছে
কিছুটা আলো বেচে অন্ধকার খরিদ করলে কিরকম আলো-আঁধারমায়া
নির্ভেজাল হাসির ভেতর লুকিয়ে রাখা ছোবলের কাহিনী
চোখে যে আলোর ডিগবাজি তাতেও রয়েছে সীমারেখাহীন বৈপরীত্যের আঁজভাঁজ
ত্বকে রয়েছে প্রাচীন দু-একটি ফোকোর
যেখান থেকে কান টেনে শুনলে
শব্দব্রহ্মের কিছু ভয় শোনা যাবে
সাইকিক
দেখো দেখো দেখো দৃশ্যের জন্ম আর মৃত্যুর মৈথুন
কেমন অদৃশ্য হতে শিখে বিরতিহীন হওয়া শিখেছে
আরো একটা নিয়ম নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে
দাঙ্গা ফ্যাসাদ নিজের টিআরপি নিয়ে সমীক্ষা চালাতে
রাস্তায় নামিয়েছে পুলিশ-ফুলিশকে
সমুদ্রের বিশালতার ওপর বক্তব্য রাখতে গিয়ে
নুন বিরক্ত হয়ে নিজের গুণকীর্তন নিয়ে
প্রচারের কৃৎকৌশল বিষয়ক গভীর গবেষণার কথা বলছে
আর সেই একলা ফেকলা লোকটা বেঁকেচুরে
তার মুখটা এখন কাছে গেলেই পুড়িয়ে দিচ্ছে
রাধারানি
শ্রাবণের বর্ষার দিনে যতোই রাধারানি
তবু একটি বাক্যও লেখা গেলো না
ঝাপসা ঝাপসা ভেসে যাচ্ছে
জলরঙের শ্রাবণ…
আকাশ ভাঙছে আর ভাঙছে
না-আমির ওপার থেকে ছাঁট এসে আমিকে ভেজাচ্ছে
(কার কতোটা ভালো লাগছে?)
আমি জলে জল থৈ থৈ রাস্তায় নেমে এসে দেখলো
হ্যাঁ-ছেঁড়াবিজ্ঞাপনের হোর্ডিং
সমস্ত মেকি বস্তুর দুঃস্বপ্ন দুমড়ে
আকাশগঙ্গার ঢেউ উত্তাল আছড়ে পড়ছে
সে একটা চিৎকার করলো আনন্দে
সেই আবেগ নকলনবিশের নয়…
বায়োফিলিয়া
ঘুলঘুলির আলো এসে আষাঢ়ে গপ্প ফেঁদেছে
ভাবতে গিয়ে দেখি নির্ভীক বেড়ালমন্থর পাড় হয়ে
ক্রমাগত ভরকেন্দ্র টাইপালটে চলেছে
একটা আনুভূমিক চাহুনি আর সে খুঁজে চলেছে উহ্য তার অন্তর্বাস
কিছুতেই একটা বৃত্ত হচ্ছে না রেখার ব্যভিচার
অভয়মুদ্রার ওপারে ওরকম গোঁফ ফোলানো মুখখিঁচুনি
কর্ণিয়াবিদ্ধ করে চলেছে তো চলেছেই
টানটান বিনোদনের
বডি ল্যাংগুয়েজ
ভ্রমর হত্যা হয়ে গেলো অতর্কিতে
সিলিং ফ্যানের ওঁকারে লেগে
ছিটকে পড়ে আছে
মৃত গল্পের ছেঁড়াডানা
সাংকেতিক ফুটনোটসহ