এই যে ভাই শুনছেন– আমার কিছু বলবার ছিল, আপনারা কি শুনবেন দয়া করে?
তার আগে বলুন আপনার নাম কি, পরিবারে বেঁচে যাওয়া সদস্য কতজন, কত জন হামাসের যোদ্ধা?
তার আগে আমার শিশু ইয়াসিনকে গ্রামের গোরস্থানে দাফনের ব্যবস্থা করুন– লাশটা গলে যাচ্ছে… বুকের সাথে মিশে যাচ্ছে কচি কলিজাটা– গত তিন দিন ধরে বয়ে বেড়াচ্ছি; আমার আদরের ধন– দুলাল আমার জাদু…
হুম; আর নাম?
কথা থেকে এসেছেন– গাজা না ফিলিস্তিন? আব্বু রেখেছে ফিলিস্তয়া, মা– ফিলিস্তিন, দাদু– প্যালেস্টাইন আর ঠাকুরমা– জুডিয়া বলে ডাকতেন…
আমার নাম তো মা; ইয়াসিন মা বলেই শেষ চিৎকার দিয়েছিল ভেতর থেকে রুহুটা বের হবার সময়… আহ্- ফিরিস্তি চাই নে, কী চাই তারাতাড়ি বলুন, পেছনে ঊদ্বাস্তুর লম্বা লাইন– এত লাশ কোথায় রাখি??
বেশী কিছু না– আমাদের ঘর গুলো ফিরিয়ে দেওয়া হোক, আঙিনায় দুটো জলপাই গাছ, ইয়াসিন যে গাছটার নৗচে সারাদিন খেলতো আর হামলায় বেঁচে যাওয়া সদস্যের জন্য কয়েকটি রুটি-খেজুর-খুবানি এবং মেয়ে ফাতিমার জন্য একটু ঔষধ– বোমার আঘাতে হাতে পচন ধরেছে… কই দেখি দেখি? হুম; বুঝলাম ফিলিস্তিন; তা কতদিন?
জি তা তিন হাজার বছর… আহ্ আপনি বড্ড বাজে বকেন– আপনার স্বামী কোথায় এখন? ইহুদী হামলায় শহীদ হয়েছেন তিনি! ও; হামাস সৈনিক?
জানিনা তবে এভাবেই মরবে বলেই এক দিন যারা জন্মেছিল– রক্ত ঢেলে দিতে…
তাদের কি বলেন আপনারা আমার যানা নেই… খাবার-ঔষধ পাবেন, থাকার জন্যে পাহাড়ে রিফুজি ক্যাম্প, বাইরে মিশনের জিপ দাড়ানো উঠে পড়ুন জলদি… তবে লাশ দাফনের যায়গা নেই– ইসরায়েল নতুন অস্ত্র কারখানা চালু করবে কবরস্থানে; পাছে সমুদ্রে ভাসিয়ে দেয়া যাক;
আমারা তো অত কিছু চাইনি তোমাদের কাছে– ইহুদিদের জন্য আমাদের রক্তের স্রোতই যথেষ্ট… চাইনে লাশের ক্ষতিয়ান জানি সবাই বোবা আর অন্ধ হয়ে গেছে এখন; আমরা তো শুধু বাচঁতে চেয়েছিলাম– স্বাধীন কিংবা পরাধীন…
আপনি এখন যেতে পারেন আমাদের কিছু করার নেই;
জি আচ্ছা যাচ্ছি– তবে যাবার আগে, আমার ইয়াসিনের লাশটা পতাকায় মুড়িয়ে দিবেন– সাবান দিয়ে ধুয়ে দিবেন ওর রক্তের দাগ; তুলোয় একটুখানি আতর লাগিয়ে দিবেন ওর নাকে কানে এবং কবরের দোয়াটা পাঠ করতে ভুলবেন না যেন আর জদুটার কপালে একটা শেষ চুমু দিতে চাই–
বিদায়………