মা এবং প্রজাপতি
শোকেজে দুটো গ্লাস ছিল পাশাপাশি, একটাতে ফুল একটাতে আঁকা ছিল প্রজাপতি, মা সখ করে মেলা থেকে কিনেছেন। বাবা বলতেন— সুন্দর! তবে এক সেট না কিনে দুটো কেন কিনলে? মা বলতেন বুঝবে না তুমি।
সেদিন গ্লাস দুটো ভেঙে টুকরো টুকরো করেছি, দুদিন উপোষ থেকেছি তবু বাবা এতটুকু টলেনি, মা বললেন চল মেলায় নিয়ে যাবো তোকে। বাবা বললেন কেন, কি দরকার? মা বললেন বুঝবে না তুমি।
নিজস্ব অহংকার
তার
ঠাট্টা করার মত ডালপালা
পাগল কিচিমের চালচলন।তার
কোন অভিযোগ নাই
যে যাই বলুক তাকে
মাথা পেতে নেয় সব দায়।তার
একটাই কথা
মাটি থেকে উঠে এসেছি
আস্তে চাপ দাও কষ্ট পাই।
কারিগর
কাঠ কেটে যে নকশা করে
যে পাখির চঞ্চুতে ফুটিয়ে তোলে অবিন্যস্ত নীড়
সে কাঠওয়ালার কখনো অরণ্য দেখা হবেনা, দেখা হবেনা গাছের টুইটুম্বুর সংসার।পাখিগুলো দলবেধে উড়ে যাবে
তার সামনে উলঙ্গন হয়ে দাঁড়াবে নকশা বই
সে কখনো উড়তে পারবেনা।
এক খন্ড মেঘ
মরিয়ম শীতল পাটি বানায়
ভালো নলশা জানে না, যা মন চায় দেন।
অষ্টাদশী মরিয়মের হাতে, দু’বেলার রশদ গুঁজে দিয়ে
একটা শীতল পাটি কিনলাম।বেপারি ঠিক ধরেছেন মরিয়ম নকশা জানে না
পাঁচ ছয় হাতের পাটিতে নকশা বলতে শুধু একখন্ড মেঘ!
একটা আকাশ নেই, নেই আকাশের হাত দেখা কোন জিপসি।এরপর কতদিন কেটে গেছে মনে নেই
হুহু করে বয়স বাড়ছে, নস্টালজিক হয়ে যাচ্ছি দিনকে দিন
মাঝরাতে হঠাৎ জেগে আকাশ খুঁজি
কোথাও পাইনা আকাশ
বুকে চিনচিন ব্যাথা করে, ব্যাথা নিয়ে মরিয়মকে খুঁজতে বেরোই, একবার খুঁজে পেলে জিজ্ঞেস করতাম
কেমন করে একখণ্ড মেঘ আঁকতে পারলে অষ্টাদশী মরিয়ম!
অহম
সমুদ্রের মত ধানক্ষেত চেপে নেমে আসে দানব
তাকে এক বাটি দুধ দেয়, চুকচুক করে পান করে
আমার দিকে চায়।অর্থব ভিখারির বুলির মত তাকে গান শোনাই
সে সাতটি পান্ডুলিপি জড়ো করে আমার হাতে তুলে দেয়
দুটি আহত পালক।পালক ঘষা দিলে সে ফিরে আসে, আমি ঘষা দিই না!
……………….
বাবা
বাবা আমারে একখন্ড মেঘ দিয়া কয়
আগলাইয়া রাখিস
জল দিব একদিন।আমি মেঘ লইনা
চকচকে বেলুনটা হাতে লইয়া ফুঁ দিই
আমার কি যে আনন্দ লাগে!
বাবা বোঝেন না।বয়স বাড়ছে তার, ছড়ি লাগব
আমি দুইটা গাছ বেশি করে লাগাই
বাবা আমার গাছ ধরে ধরে হাটে
বিড়বিড় করে কয় পাগল একটা।
সাইফুল ইসলাম
জন্ম : জানুয়ারি ০৫ ১৯৯৫, ফেনী।