মানুষ // দীপকরঞ্জন ভট্টাচার্য

0

মানুষ

মানুষ কীভাবে দেখে ঋতুচিহ্ণ খনির দলিল
গ্রন্থশায়ী কীট যেন লতাগুল্মে গাঢ় গ্রন্থমন
মানুষ কীভাবে শেখে কৃষিকাজ বীজন প্রণয়
মৃত্যুর জারুল যাকে অবিরত দ্বিধায় রাঙায়

মানুষ কীভাবে রাখে স্মৃতিদগ্ধ অলকা নগরী
ভাঙা নৌকো স্রোতে রেখে শিখা জ্বেলে ফিরে গেলে নারী
রাতের বাতাস চায় বেদনার গাঢ় সোমরস
দিঘির রাণাতে বসে চরাচর সাজে নীল পরি

সুগন্ধি সংকটে আসে প্রতিদিন আলোর তুফান
মানুষ কীভাবে কাঁদে, ঘর বাঁধে অদৃশ্য লিপিতে
নির্জন টেন্টের মাঠে আলেয়া-ভ্রমর বুকে বসে
দূর আরও দূরে যায়, চেনা সুর ভাটিজলে ভাসে

মানুষ কীভাবে পোড়ে ময়ূরের বর্ণময় স্নানে
তুমি তাকে যত জানো তারও বেশি পেখম ছড়ানো
গাছের ঘুমন্ত শাখা কিছুকাল পায় তার রং
আজীবন ভালোবেসে বাঘিনি নারীর আভরণ

তুমি যদি সবটুকু নীল ধুয়ে ফিরে আসো গাঁয়ে
তবু কি রাজার সভা গুপ্তকক্ষ সাথে থেকে যায়
কোমরে ঝুলেছে আজও শোকের বিপুল তরবারি
তুমি যদি নগ্ন শ্লোকে মন্ত্র পড়ো ঢালো শান্তিবারি

মানুষ কীভাবে ছোঁয় নশ্বরতা রথচক্রযান
বনভূমি কেঁপে উঠে অবৈদিক হাওয়ার উঠান
যত জাগে ক্ষমাপ্রার্থী মাটি খুঁড়ে তুলে আনে চাকা
দিন যাবে শেষ হয়ে ঘন কাশ দিয়ে রাত ঢাকা

তোমাকে গ্রন্থের মতো ক্ষমা করি নাভিতাপ নিরালাপুরাণ
তোমাকে গ্রন্থের মতো ক্ষমা করি অবিশ্বাস অন্ধকার লতা
তোমার আগুন পায়ে সারাদিন ঘুরে মরি স্মৃতি ও সন্তাপে
পোড়া ঘর জ্বলা খড় অন্তরঙ্গ ঝরাপাতা কোন নদী নেবে

দৃশ্য দুঃখ স্মৃতি দুঃখ সরা ঢেকে পাড়ি দিল ডোম
মৃত্তিকা মাতার মতো ছায়া পিতা- যাবে সেই গ্রামে
বৃক্ষ নেই হত্যাশোভা আছে আছে, আছে হে তোরণ
মৃত পাখিরাও পায় মরা গাছে আলোর শমন

শেয়ার করুন

মন্তব্য

টি মন্তব্য করা হয়েছে

Leave A Reply

শেয়ার