ক্লোজ এনকাউন্টার অফ দ্য থার্ড কাইন্ড ও অন্যান্য কবিতা // হিয়া মুখার্জী

0

ইটি বিটি টিটি কমিটি

অথচ দেখুন আপনি ভেবেছিলেন খুব ঐকান্তিক ভাবে আপনি জ্বলে উঠতে পারবেন সরল নিষ্ঠার সেইসব দুপুর আপনাকে লুলাবাইএর মত অপত্য স্নেহে ঢেকে রাখবে আর বরাবরের মত আপনি শান্ত ভঙ্গীতে পালকের মত নরম ও শীতল বিক্ষেপে ধীর পায়ে হেঁটে যাবেন ঔপনিবেশিক সেই উপত্যকায় কিন্তু মুশকিল-টা হল সিনিওর ইদানীং গোলাপী বড্ড দুর্লভ রঙ হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রত্যাখ্যান খুব একটা সহজ নয় আর কোনো অবস্থাতেই ব্যক্তিগতকে আর ব্যক্তিগত পরিসরে রাখা যাচ্ছে না এটা মূলত দর্শণের প্রশ্ন যদিও এ নিয়ে তর্ক আদৌ আমার উদ্দেশ্য নয় আপনার প্যারাম্নুলেটরের মত সেইসব নির্মল পাঠ যথেষ্ট সততার সাথে আমি অনুধাবন করেছিলাম গত শতাব্দীতে সন্ধ্যের ট্রমবোনে আমিও নিঁখুত ভাবে গেঁথে যেতে চেয়েছিলাম আপনার চেতনায় কিন্তু প্রথাগতভাবে আপনি এইসব বাদামী অস্বস্তি ছেড়ে যেতে চেয়েছিলেন এবং আমারো উচিত ছিল আপনার ছেড়ে যাওয়া পথে উইলো গাছের মত একক ভঙ্গীতে এক সহস্রাব্দ পাথর হয়ে অপেক্ষা করা কবে আপনি ফিরে আসবেন ও টুপি খুলে বের করে আনবেন একের পর এক মায়াবী শিখার মত নিশ্চিদ্র ঘুমের বড়ি উপকথার মত নিস্তেজ সন্ধ্যেয় আপনি অবশেষে অবশেষে চুম্বন করবেন আমায় শাশ্বত ভ্যালিডেশনে আর প্রফেসি অনুযায়ী আমি ঠিক জেগে উঠবো কিন্তু সিনিওর গোলাপী আদতেই বড্ড দুর্লভ রঙ চ্যাটচ্যাটে রক্তের মত যা আপনার হাতের তালুতে মিশে যাচ্ছে অবিমিশ্র ঘেন্নায় আপনি শত ছটফট করেও সে দাগ তুলতে পারছেন না কারণ আপনি যখন খুব আস্তত্ব ভঙ্গীতে রকিং চেয়ারের মত শান্তির এক একটা আয়োজনে বিমূর্ত হয়ে উঠছিলেন পৃথিবী খুব মসৃণ ভঙ্গীতে তার কক্ষপথ পরিবর্তন করে ফেলেছে আপনার অজান্তেই সেইসব দিকভ্রান্ত আত্মা যাদের আপনি প্রগাঢ় ভঙ্গীতে ভক্ষণ করেছেন এ যাবৎকাল তারা আপনার ট্র‍্যাজেকটরিতে ভিড় করে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আপনাকে গিলে ফেলার জন্য মাফ করবেন সিনিওর আপনার অবর্তমানে আপনার সুসজ্জিত লবির প্রাগৈতিহাসিক আবক্ষমূর্তিসমূহ একে একে উপড়ে আনা হয়েছে ফলতঃ এই মুহূর্তে আপনার কোনো লিনিয়েজ নেই স্বদেশ নেই আত্মগোপনের বম্ব শেলটার নেই অবিশ্বাস্যভাবে আপনি নিছক রিফিউজি হয়ে পড়েছেন সিনিওর আপনাকে গত শতাব্দীতে যথেষ্ট আনুগত্য দেখিয়েছি বলেই খুব সম্ভবত ঝিমঝিম নস্টালজিয়া আপনার গেটে আমাকে অপেক্ষা করতে বাধ্য করছে নেহাতই একজন নিরপেক্ষ মেসেঞ্জার হিসেবে শুধুমাত্র এটুকু জানানোর জন্য যে ক্রোধ অথবা প্রতিরোধ আপনাকে আদৌ সাহায্য করবে না এই মুহূর্তে কপাট খুলে দিন যথেষ্ট আলো বাতাস ঢুকতে দিন আপনার মজ্জায় আর লজ্জা অতিক্রম করে পশ্চাদদেশ উন্মুক্ত করে দিন সিনিওর কারণ আপনার ছুঁড়ে দেওয়া রুটির টুকরো আর যথেষ্ট নয় আমরা গ্রেনেডের মত গোলাপগুচ্ছ দাবী করছি কারণ সিনিওর আপনি চান অথবা না চান আমাদেরো জমানা এসেছে

 

উই মাস্ট ইমাজিন সিসিফাস হ্যাপি

অনায়াস ড্রিবলিং এর মত গা ছমছমে দুপুরে এ আমি কোথায় এলাম ম্যাদলিন?
তুমি তো জানো শব্দ ও মাংসের সেইসব গাঢ় ভূমিকা
আমাকে ক্রমাগত ঠান্ডা করে এনেছে ইদানীং।
এ দেশে, ফ্যাকাশে চোখের সেইসব নারীরা,
পাউডার রুমের তমসাচ্ছন্ন উদরের ভিতর থেকে
মাঝে মাঝেই করুণ অ্যাকর্ডিয়নের মত দুলে উঠছে
যেহেতু তাদের আলো ফুরিয়ে এসেছে।
আস্তাবল থেকে সারিবদ্ধভাবে
ঝলসানো রোস্টের ঘ্রাণ দুলে উঠছে।
আহা ম্যাদেলিন
আমি তো ঐকান্তিকভাবে
গাঢ় লাল মাংসের মত
জ্বলে উঠতে চেয়েছিলাম গত বসন্তেই।
কিন্তু কার্যকারণহীন সেইসব বিলিয়ার্ড টেবিল এবং
পরিপূর্ণভাবে পিঙ্গল ও ভ্যাপসা পিগমি ল্যাম্পের আনক্যানি আলো
আমি পেরিয়ে এসেছি।
অথচ গ্রীমভাইদের সেই অতিকায় আয়না
যা কিনা আংশিকভাবে একটি ছটফটে হরিণ আমাকে টেনে আজ
এ কোন করিডোরে নামালো!
তবু আশ্চর্যজনক ভাবে আমার অস্বস্তি হচ্ছে না।
রক্তের মধ্যে এই নিভু নিভু চিনচিনে স্রোত আমি, আশ্চর্যজনক ভাবে, যথেষ্ট উপভোগ করছি।
ম্যাদলিন ম্যাদলিন, তুমি কোন জ্বলন্ত স্ফটিকে আমার সেইসব অসুস্থ শিরামুখ দেখে ফেলেছিলে যা কিনা আমি একাশি বছর ধরে জোব্বায় ঢেকে রেখেছিলাম!
যাইহোক, আপাতত
আমার দিব্যি লাগছে নিজের চর্বি কেটে তুলতুলে ভঙ্গীতে মুখে পুরে নিতে।
ফ্যাকাশে চোখের সেইসব নারীরা,
পাউডার রুমের নিবিড় উদরমধ্যে
মাংসল গলায় আমায় ডেকে নিচ্ছে।
একটিই স্টিমারের পাশাপাশি দুটি জানলায় গ্লো সাইনের মত স্বর্গ ও নরক
এবং মাঝামাঝি
আরো যা যা কিছু ডিনারের অভিনব আয়োজন
ঘোলাটে কফির মত আমায় ইশারা করছে।
আহা ম্যাদলিন,
আমাকে ধীরে ধীরে
পরিপূর্ণভাবে ছাড়িয়ে নিয়ে তুমি
ইনসিজরে গেঁথে তুলে নাও।
স্পষ্ট বোধ হচ্ছে
সেইসব অতিলৌকিক কামড়ে
আমার এখন আর আদৌ কোনো ব্যথা লাগবে না।
স্পষ্ট বোধ হচ্ছে
স্ফীতোদর কসাই এর ক্রমায়ন্বিক সেই কোপ আমি নিয়মিত হারে চেয়ে যাবো আদি ও অনন্তকাল ।
রক্তের মধ্যে সেই হিলহিলে টেরিয়ারের অবিমিশ্র আমেন আমাকে সারিয়ে দিক।
যথেচ্ছ আঁচড় বসাক।
যা ঘটছে তাই শুধু অবিরত ঘটে যেতে দাও।
বাসি কোল্ড কাটের মত।
বারবার।
উপর্যুপরি।

 

ও ক্যাপ্টেন মাই ক্যাপ্টেন

কফিনের মত কালো শীতে একদিন
সত্রাজিৎ সরকার নামক যুবক
আকস্মিক ভাবে মরে যাবে।
অনন্ত স্ট্রবেরীক্ষেতে যারা গিয়েছিল একদা,
চেলোর সঙ্গত আর মুনশাইনের মৌতাতে
তুমুল বৈঠক ঘিরে গাঢ় হয়ে এসেছিল ধোঁওয়া
অবিকল গুজবের মত,
সত্রাজিৎ সরকার
বস্তুত তাদের কেউ নয়।
তবু দীর্ঘ নিরাময়ের মত
সন্ধ্যের সিঁড়ি বেয়ে নেমে আসে ডাউন লোকাল।
ড্রামাস্কুল ফেরৎ আনকোরা কিশোর
হাতে তুলে নেয় করুণ হার্মোনিকা।
খোঁয়ারি কাটিয়ে উঠে মাতাল যুগল
টলমল পায়ে হেঁটে যায়
বিজাতীয় গাড়ীবারান্দার দিকে।
জেটির প্রান্তে এসে দুলে ওঠে
রিরংসু স্টিমার।
নিবীড় স্টিচের মত আলোয় তখন
সত্রাজিৎ সরকার
ব্যক্তিগত ঈশ্বর হয়ে ওঠে।
হাইরাইজসুন্দর আলোয় তখন
সত্রাজিৎ সরকার
প্রকৃত প্রফেট হয়ে ওঠে।
তদ্যপি এসকল প্রাকৃত আছারিপিছারি
এবং সুতীব্র ন্যাপথলিন ঘ্রাণ পেরিয়ে
কখনো যাই নি আমি
সত্রাজিৎ সরকার অভিমুখে।
পার্থিব বিষ্ঠায় মাখামাখি হয়ে শুধু
ঊর্ধাকাশে চোখ ফেলে মেপে গেছি উড়ানপ্রণালী।
হাস্যকর যাপন আর ভাঙা কিংখাব নিয়ে
উপর্যুপরি হেঁটে গেছি
পরিত্যক্ত গ্রীনরুমের দিকে।
আমার প্রাপ্য নয় এসকল ঋজু গসপেল।
নিজেই ফুঁপিয়ে উঠি,
নিজেই নিজেকে চড় মারি।
হত্যান্মুখ রাতে ঘনঘোর দুর্যোগের ন্যায়
নিভে আসে অ্যাসাইলাম,
অস্ফুট মারিজুয়ানাঘ্রাণ।
শোকাচ্ছন্ন শয়ণের ঘোরে টের পাই
আমাদের বোধের অতীতে
একদিন
নিশ্চিতভাবে
সত্রাজিৎ সরকার নামক যুবক
হঠকারী রকমের ভালোবাসা আর ঘেন্নায়
প্রান্তিকভাবে
মরে যাবে।

 

ক্লোজ এনকাউন্টার অফ দ্য থার্ড কাইন্ড

অশান্ত জোৎস্নায়
অ্যানোরেক্সিক বালিকারা
ক্ষতমুখ খুলে দিয়ে
মৃদুভাবে নেমে যায়
ছটফটে দোয়েলের দিকে।
ডাকিনীর মত জোৎস্নায়
শ্যামবর্ণের যুবারা
জন্ডিস সেরে উঠে
গাঢ়ভাবে নেমে যায়
শিহরিত জারুলের দিকে।
এসকল আয়নার মত জোৎস্নায়
মাথা ঝিম সাবার্বে
সকলের অলক্ষ্যে
খিদেই ঈশ্বর হয়ে ওঠে।
গজদন্তের মত অভ্রভেদী
মায়াবী শ্যাটুর
ইবোনী টেবিলে
তৃতীয় বিশ্বের যত ব্যাথাতুর
মাংসের রোস্ট
একা একা অপেক্ষা করে।
আর আমরাও উন্মাদ হয়ে
স্বপ্নচারীর মত
সেইসব আঠালো করিডোরে
অকারণ ঘুরপাক খাই।
মাথা কুটি, বুঝি
চল্লিশ বছর ধরে
সুন্দর জমে আছে
ঈশ্বরের উদাত্ত নাভিতে।
আমাদের ফ্রন্টাল লোব চিরে
শেষ নাইট ট্রেন ক্রমাগত
চলে যায়
অনন্ত ককেশিয়া অভিমুখে।
রাত্রি গভীর হলে শুধু
খুব সচেতন ভাবে
ঊর্ধাকাশে দৃষ্টি ফেললে
এক আধ ঝলক দ্যাখা যায়
ফ্লাইং সসারে চেপে
চক্রাকারে
খিদের ঈশ্বর
নির্মল আলোয়
অন্য কোনো উপগ্রহে
উড়ে যাচ্ছেন।
আর শাশ্বত অ্যামনেশিয়ায়
আমরাও কৃতজ্ঞ ভঙ্গীতে
তার ছেড়ে যাওয়া পথে
যথাযথ ক্ষুধার্ত হয়ে
জ্বলন্ত প্রেয়ারে প্রেয়ারে
সারারাত
সারারাত
সারারাত ধরে
জেগে থাকি।

 

হ্যালুসিনোজেনিক

মনে মনে ভেবে নাও
কুয়াশাচ্ছন্ন সেই ম্যাজিক অন্তরীপ
যেখানে
জ্যাক কেরুয়াকের সাথে
অনন্য রায়ের দ্যাখা হয়।
ভেবে নাও
মাশরুম আবিষ্ট গ্রাম।
শিহরিত বৃক্ষসমূহে
অস্পষ্টভাবে
সুমন কল্যাণপুর
জেগে উঠছেন।
ঢালু ও তরল কুটীরের
হলুদ গ্রীবায়
জেগে উঠছে
খৈয়াবোরো ফসলের মত
শ্বাসরোধী সব উপক্রম।
পোয়াতি নারীদের চোখেমুখে
ছায়াবিথীকার মত
প্রতিসারিত
আলট্রা ভায়োলেট মুগ্ধতা।
মনে মনে ভেবে নাও
সাইকাডেলিক রোদ।
বুর্জ খলিফার মত মেঘ।
ছায়াসুশীতল এসকল
বনভোজনের
নিপুণ আয়োজন
মাতিজের ফ্রেম হয়ে
তোমার জন্য
অপেক্ষা করছে।
ভেবে নাও মালভূম অঞ্চল।
খাদের কিনারে
একটিই ম্রিয়মাণ সাঁকো
স্বতঃপ্রণোদিতভাবে,
মৃদু দেশলাই য্যানো,
ট্রিম ট্রিম
জ্বলে উঠছে
আর
চরাচর আচ্ছন্ন করে
ভেসে উঠছে
আলকোনোস্তের
মায়াবী হার্প।
মনে মনে তবে ভেবে নাও
ক্যালাইডোস্কোপিক
এক হেমন্তে
ফজরের মত সেই
আকুল অন্তরীপে
জ্যাক কেরুয়াক এবং
অনন্য রায়
তোমার,
শুধু তোমার
হাত ধরবেন বলেই
যুগান্ত অতিক্রম করে
দাঁড়িয়ে রয়েছেন।

 

মৎস্যকন্যাদের মিথ

সমুদ্র নিকটে এলে জোৎস্না রোমহর্ষক হয়ে ওঠে তট বরাবর সারিবদ্ধ পাম আপামর ঝলসিয়ে উঠে নিশিডাকের মত সেইসব আপাতদৃষ্টিতে নরম ও নতমুখ নারীদের বিপদ সঙ্কেত পাঠায় মাঝসমুদ্র থেকে ইহজাগতিক পর্তুগীজ জাহাজের ভোঁ শুনতে পাওয়া যায় যারা আর কোনোদিন ডাঙ্গায় ফিরবে না করুণ খালাসী শুধু ডেকে বসে মদ খায় ডুকরিয়ে কেঁদে ওঠে উপকূলবর্তী কেবিনে নাইটস্কুলদুহিতা কিশোরী সেইসব অতলান্তিক ল্যামেন্ট শ্রবণ করে চোয়াল শক্ত করে আর সনাতন দস্যুপ্রীতিতে ভর করে চন্দ্রাহত আলো মেখে নেয় বোরো ফসলের ক্ষেতে ঋতাভরী কামিন যুবতী শিহরিত জোৎস্নাহেতু শালপ্রাংসু সন্দেহে যেকোনো আততায়ী যেকোনো উৎসুক পাইরেটের সামনেই নিজের বক্ষবন্ধনী খুলে দেয় চাঁদের আলোয় উৎভ্রান্ত দেওয়াল থেকে ফ্রেস্কোবালিকার মুঠো খুলে হেমন্তকালীন দালসিমার সটান পতিত হয়ে সম্যক গড়িয়ে যায় ঢেউএর দিকে তখন দিগন্তে দৃষ্টি ফেললে দ্যাখা যায় সেইসব বিস্তৃত ফ্লুরোসেন্ট বালিয়াড়ি পেরিয়ে আপাতদৃষ্টিতে নরম ও নতমুখ স্বপ্নচারিণী নারীদের মিছিল সমুদ্র যাদের ডেকে নিয়েছে মাথা ঝিমঝিম জোৎস্নায় সেইসব নারীদের বুকের আঁচল বিবাহবর্হীভূত দ্রোহে জ্বলে ওঠে তাদের পাখনার রঙ ধারণাবহীর্ভূত ভাবে অভ্রান্ত প্রুশিয়ান ব্লু এবং কোলাহলমুখর জোৎস্নায় মেঘের উন্মুক্ত ক্ষত থেকে ডানার ঘর্ষণে যেসকল অঙ্গার উৎপন্ন হয়ে পৃথিবীর বুকে খসে পড়ে সরল শেফার্ডগণ সহজাত বিভ্রমহেতু তাকেই নিরক্ষীয় উল্কাপাত ভেবে নেয় কিন্তু এসকল তীব্র গান্ধারের মত গাঢ় অভিসার ও টুপটাপ হত্যাইচ্ছে সকলের অগোচরে ঘটে ফলতঃ পৃথিবীবাসীরা টের পায়না কিন্তু তাদের ক্ষরণ সমূহ তরঙ্গে তরঙ্গে ফসফরাসের মত জ্বলে ওঠে অতএব সেইসব আপাতদৃষ্টিতে নরম ও নতমুখ নারীদের যথাসম্ভব নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া দরকার যেহেতু এ সকল বিপদসঙ্কুল জোৎস্নায় সমুদ্র যাদের একবার ডেকে নেয় তাদের আর কোনো অবস্থাতেই ঘরে ফেরার উপায় থাকে না সতর্ক উড়ানের শেষে তারা পরিপূর্ণভাবে ডুব দেয় ডুব দেয় ডুব দেয় পতুর্গীজ জাহাজের ডেকে মদ্যপ খালাসী শুধু মঝেমধ্যে ঢেউ এ চোখ রেখে সেইসব প্রুশিয়ান ব্লু পাখনা অকষ্মাৎ এক আধ ঝলক অবলোকন করে ফ্যালে আর এভাবেই এভাবেই এভাবেই মৎস্যকন্যাদের মিথ জন্ম নেয়

 

আনক্যানি ভ্যালি

আনক্যানি ভ্যালির সেই গাঢ় উদ্দীপনা আপনাদের শেখাই প্রিয় স্পেকটেটরগণ এই সেই অলৌকিক এলাকা যার পূর্বে দৃষ্টি ফেললেই আপনি অবলোকন করবেন যথাযথ মানুষদের নিয়মমাফিক সেইসব বর্তুল যাতায়াত যে প্রদেশে আপনাদের নিরুপম ঘর বাড়ী নিরাপদ দূরত্বে দাঁড়িয়ে দীর্ঘ শ্বাস নেয় যাদের কোটরে যথাযথ সেইসব মায়েরা নিজের সন্তানের প্রতি যৌনতা অনুভব করে আত্মহত্যা বেছে নেয় খারাপ লাগলেও এ কথা সত্যি যে আনিক্যানি ভ্যালির পূর্ব দিকের সেইসব হলদেটে সভ্যতা থেকেই আপনারা রাউন্ড ট্রিপের টিকিট কেটেছেন আর এইবার পশ্চিমের দিকে আলোকপাত করি যেখানে অপূর্ব টেলিভিশনের মত হিউম্যানয়েডদের ঘনবসতি তারা খায় দায় কথা বলে তাদের তুখোর রতিক্রিয়া ক্রমাগত রেডিওতরঙ্গে সরাসরি সম্প্রসারিত হয় আর আনক্যানি ভ্যালির পূর্বের সেইসব স্টেশনে পশ্চিম প্রদেশের মেঘ থেকে ফোঁটায় ফোঁটায় হিউম্যানয়েডদের প্রগাঢ় কান্না ঝরে পড়লে আপনারা খুশী হন আমোদে হইচই করে ওঠেন যেহেতু পূর্বের মত পশ্চিমেও একইভাবে হিউম্যানয়েড শিশুরা লিঙ্গে ও অসুখে বড় হয় অবিকল মানুষের শিশুদের মতই আর যথাযথ হিউম্যানয়েড মা যারা স্বাভাবিক নিয়মেই সামান্য বেশী উচ্ছ্বল ও অদ্ভুত প্রাণবন্ত কিন্তু সমান ব্যাথায় তারা সন্তানের প্রতি যৌনতা অনুভব করে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় তারপর দীর্ঘ শোকের মত নিয়মমাফিক ঘন্টা বেজে ওঠে এবং চার্চের বুকে স্তিতধী পাদ্রী নীচু স্বরে প্রার্থনা করেন ঈশ্বর ঈশ্বর ওদের ক্ষমা কোরো তুমি যদিও পূর্বে না পশ্চিমে এ প্রশ্ন অবান্তর যেহেতু প্রিয় স্পেকটেটরগণ একথা এতক্ষণে প্রতিপাদ্যর মতই সরল যে পূর্ব ও পশ্চিম আদতে একই এলাকা শুধু বিভ্রম সৃষ্টি করার জন্যই দিকনির্ণায়ক এই কম্পাসের আবিষ্কার হয়েছিল কিন্তু এই দুই প্রদেশের মধ্যে অবাধ্য ষাঁড়ের মত আনক্যানি ভ্যালি দূর্ভাগ্যজনকভাবে যার উপস্থিতি অস্বীকার করার স্রেফ কোনো উপায় নেই যেখানে অংশত মানুষ অথচ মানুষ নয় প্রাণীরা জোৎস্নায় হেঁটে যায় খেলা করে হাসে কাঁদে সহজাত আক্রোশে এ ওকে অদ্ভুত ভঙ্গীতে কামড়ায় যা কিনা ব্যাখ্যার অতীত অথচ পূর্ব ও পশ্চিমের তুলনায় কোনো গুরুত্ব না পেয়েও আনক্যানি ভ্যালিতে কোনো সংক্রমণ নেই শুধু গাঢ় অস্বস্তি অর্গানে অর্গানে আজগুবি স্টিমুলেশনের মত সেইসব অংশত মানুষ অথচ মানুষ নয় প্রাণীদের সুখী কপোতের মত বেঁচে বর্তে থাকা অদ্ভুত পীড়াদায়ক ও বিবমিষা উদ্রেককারী তাই আজ আপনারা সরল কৌতুহলে ভর করে উড়ে এসেছেন আর আপনাদের জন্য আয়োজন করা হয়েছে শ্বাসকষ্টময় এই গাইডেড ট্যুর কিন্তু সাবধান প্রিয় স্পেকটেটরগণ এইসব অংশত মানুষ অথচ মানুষ নয় প্রাণীরা হাইপোডার্মিক সিরিঞ্জের মতই সটান আপনার চামড়ায় ফুটে যেতে পারে এবং তখন অদ্ভুত এক অনীহা আপনাদের পেয়ে বসবে ফলতঃ আপনারা ঘরে ফিরতে পারবেন না শুধুই আনক্যানি ভ্যালির এইসব ঝাঝাঁলো অরণ্যে দিকভ্রান্তের মত ভেসে বেড়াবেন অথচ হিলিয়ামের মত হালকা মুক্তির বিপজ্জনক এক বোধ আপনাকে পেয়ে বসবে তখন স্বাভাবিক নিয়মেই প্রতিরক্ষা দপ্তরের নির্দেশ অনুসারে ক্লোজ রেঞ্জে আপনাকে গুলি করা হবে তাই সাধু সাবধান প্রিয় স্পেকটেটরগণ এবং মনে রাখবেন ব্রশিওর অনুযায়ী আনক্যানি ভ্যালির এইসব অংশত মানুষ অথচ মানুষ নয় এমন প্রাণীরা জোৎস্নালোকে তাদের সন্ত্রস্ত ভাষার মদ্যপ সললকিতে আপনাকে নিপুণভাবে ফুঁসলে নিলেও কোনো পরিস্থিতিতেই কতৃপক্ষ দায়ী নয়

 

প্রোজেইক ব্লুজ ৩

রেগুলেটরের মত
ঘনভাবে ভেসে আসে
শীতকালীন বিবৃতি।
ছাদে ছাদে ভেসে আসে
রেডিওবালিকাদের
বিবাহ প্রস্তাব।
ঘনঘোর কুয়াশার মধ্যে
খরখোশ প্রকল্পের দিক বরাবর
হেঁটে গেলে
এইসব টুপটাপ মৃত্যুইচ্ছে ভুলে
স্রেফ বায়বীয় ভাবে
পরিকল্পনাহীন
এক বিরাট ঘুমের মধ্যে
ঢুকে পড়তে লোভ হয়।
সমস্ত কবিতাই আসলে
ইতিমধ্যেই লেখা হয়ে গ্যাছে।
ফলতঃ
রিসিভারসুলভ অপারগতা নিয়ে
চুপচাপ নিভে যাওয়া ছাড়া
আর কোনো সম্ভাবনা নেই।
ওই দেখুন,
অতিলৌকিক ল্যাম্প
এইমাত্র জ্বলে উঠলো
কাদের বারান্দায়।
বাবুইবাগানে এই শীতে তবে
ঘোর পিকনিক হবে।
কারা যেনো সন্ত্রাস করে
সমগ্র পাড়ায়
চাউর করে দিয়েছে
ভার্মিলিয়ন বসন্ত আসছে।
আর এইসব শোরগোল থেকে
বহু দূরে
দোপাটির মৃদু চারা
শুকোয় উঠোনে।
আপাতত আসুন
তার পাশে
আদিঅনন্তকাল
একটাও কথা না বলে
বসে থাকি।

 

ওয়াট টাইম ইজ ইট ওভার দেয়ার

গিটারজনিত শোক।
ধূসর মাতাদোরের মত
গা ছমছমে বিকেল।
টিথোনিয়া গুচ্ছ হয়ে
আকাশ থেকে অনুপম
ঝরে পড়ছে
স্পর্শকাতর চিঠি।
ঝরে পড়ছে
অলৌকিক মিথ।
ছেলেটি
নিছক অপেরা হয়ে
ভেসে যাচ্ছে
র‍্যু দ্য ভলেন্তেয়ারে।
মেয়েটি
সবুজ রুমালে
ফুটিয়ে তুলছে
বিধিসম্মত নকশা।
ভূর্জপত্র থেকে খসে পড়ছে
আংশিক মেঘলা আকাশ।
ছেলেটি ও মেয়েটি
ভিন্ন ভিন্ন মতে
পৃথিবীর দুপ্রান্তে
ফ্ল্যাশলাইট গুটিয়ে নেয়।
ছেলেটি ও মেয়েটি
স্পর্শসম্ভবা রিস্টওয়াচের
কাঁটা থেকে কাঁটায়
বেঁধে রাখে
অসম্ভব চুমুসকল।
আর
এইসব স্পর্ধার কথা
কাউকে শোনাতে না পেরে
পড়ন্ত আলোয়
একা একাই
বেদম ভিজে যান
একজন ঐশ্বরিক
বেলুনবিক্রেতা।

 

জ্বলন্ত মেরি গো রাউন্ড

ইভান! ইভান!
তুমি যেখানেই থাকো
ফিরে এসো।
ফিরে এসে দেখে যাও
ঘুমের অতলে
আমিও কী হারে
এলোমেলো হয়ে গেছি।
অলীক পিউবার্টিতে
গাঢ় ডুব দিয়ে
আমিও কী হারে
ছাড়খাড় হয়ে গেছি
প্রথাসিদ্ধভাবে।
তুমি এসে দেখে যাও
মাথার ভিতরে ক্রমাগত
কার য্যানো আকাশী রুমাল
চ্যাটচ্যাটে অস্বস্তি হয়ে
আলোকমিনারে
ঘনভাবে লেগে যায়।
ক্যারোসেল ফ্যাক্টরির
গভীর রাইবোজোমে
ম্যামারির জটিল অসুখ
উভচর প্রাণীর মতন
দপদপ করে ওঠে।
মস্তিস্কে প্রোথিত ব্যারিকেড
তাসের ঘরের মত
ভেঙ্গে পরে, আর
রক্তাভ কিশোর গালিচা
বিগত শীতের
ঘোলা বরফের স্তূপে
নিবিড় ষড়যন্ত্রে ভর করে
দাউ দাউ জ্বলে ওঠে।
ফেয়ার গ্রাউন্ডে
এই বিষণ্ণ রাতে
ওরা কারা ছুটে যায়
ওমন সন্ত্রাস করে?
ইভান! ইভান!
পরিজন ছেড়ে আমি
সপাটে চলে যাবো
এসকল অশান্ত
ইমেজারী থেকে
বহু দূরে।
লজ্জা অতিক্রম করে,
স্কাসকার ঘোড়াদের
নিটোল সঙ্গমে
আমিও আমূল
মিশে যাবো।
রাশিয়ান পাইনের
নিঝুম কোটরে
প্রোজ্জ্বল অন্ধকার হয়ে
দাঁড়িয়ে থাকবো তবে
এক সহস্রাব্দ ধরে।
ইভান! ইভান!
তুমি ফিরে এসো
যেখানেই থাকো
রৌদ্রমুখর সেইসব
শাস্কা ঝলসিয়ে তুমি
আমার সকল ছায়া
নিরুপম কেটে ফ্যালো।
ধূসর টেলোগ্রেইকার ওমে
আমাকে জড়িয়ে তবে
জরায়ুর মত ভালোবাসো।
গাঢ়ভাবে আশ্বস্ত করো।
চিবুকে শাণিত হও।
চুমু খাও।
বলো, পারবে না?

শেয়ার করুন

মন্তব্য

টি মন্তব্য করা হয়েছে

Leave A Reply

শেয়ার