বার্তা ও অন্যান্য কবিতা // আশিক আকবর

0

তার প্রতি

মেঘ গুলারে কইলাম কালিদাস ফালিদাসরে ফাকাফাকি বাদ দিআ,
দক্ষিন দিক উইড়া যাও,
ঐ খানে এক সুউচ্চ কাঠ বাদাম গাছে;
গাছের তলে এক কৃষ্ণ বাঁশি বাজায়,
ঐ খানে একটা মেহেদীর ঝোঁপ,
চব্বিশ বছর ধইরা হাসে,
লেজ ঝুলা পাখি দুই কাউআ তাড়ায়,
আর আর একজন দেহ বদলের ধোন তুইল্লা একলা একলা থাহে?
দুই বিআ এক বাচ্চায় তো আপত্তি নাই আমার।
শরীর তো আর সোনা দিআ বান্দানো থাহে না।
ও, কেউ না কেউ তছনছ করবে,
ভাঁজ করবে,
আলগোছে তুলবে বুকে।
এখানে হারানো বা পাওয়ারই বা কি আছে?
মাটির পুতলা এক; ধুইলেই আবার নতুন।
ওহে নতুন;
ওহে নবীনা;
আপনি একলা থাকলে আমার কালিদাস কান্দে,
নয় লক্ষ তেতুল গাছে আঠারো লক্ষ পাতা হলে,
বাবু, বাবু,
গরুটা মৃত বলেই ঠুকড়ে খেতে পারছো,
জোড় হাত তোলা মানুষটার হৃদয়ে এতো কান্না বলেই উড়তে পারছো।
এতো এতো অর্থাকাঙ্খায় নিজেকে কোরবানি করলে,
কি থাকে?
কি থাকে একটা হৃদয় কে হিসাব দিআ দিলে জ্যান্ত কবর।
মেঘ রে,
বোবা বেঙের তৃষ্ণায় যিনি জাগছেন,
হাঁপানির টানলে উঠলে তার ঠোঁটে এক কর্ক ভদকা তুলে দিতে দিও,
দিও আকাশ কন্যাদের মতন, রাখতে তার আট প্রহরের খবর।
আম বরই এলামেন্ডার সৌন্দর্য ও ছায়ার পাশে বসতে দিও,
বসতেও দিও,
কোলে রাখতে কোল।
কোল,
কোলে রাখতে রাখতে কোল পায়।

 

চিঠি

আকাশবাসি ও বাসিনীরা গো,
পাহাড়ের কোলে মোর ঘর।
একটু পাহাড় মাতার সিথানেই মাথা পাততে দাও!
পাথরে মাথা রেখে সেই কবে করেছি সঙ্গম।
মনে নাই,
মনে নাই,
আর্মি আর সেটেলারের চোদনে সমান হৈআ গেছি।
পাহাড় নাকি মানুষের?
ওহে তাতারারাবুকা,
ও হরমা দূর্গা,
ও চাকমা মারমা ত্রিপুরা ভগবান,
মানুষ তো পাহাড়ের সন্তান,
মার হাটু, যোনি, স্তন, পেট, মাথা, হাত, পা, বুক…
ভাগ ভাগ হবে?
সেটেলার ক্যান আমার জমিতে ঘর তুলবে?
প্রার্বত্য অঞ্চল ক্যান হবে অঘোষিত ক্যান্টরমেন্ট?
আর্মি কিংবা যুবক সেটেলার টানবে ক্যান মেয়েকে আমার?
সবুজ আর্মি দেখে কালো হাতি মামারা এসে ছিলো,
আসন গেড়ে বসে ছিলো,
আমরাই দুই পাইআ মানুষ দেইখা,
মামাদের ফিরাবার বুদ্ধি দিলাম।
নিজেরাই নিজেদের সমাধি বানালাম।
এহন সেটেলার ক্ষেতের ধান কাইট্যা,
বনের গাছরে কাইট্যা,
মাছের, শামুকের, সাপের, পাখির আদর ভুইল্যা,
খালি টেকা পয়সার গল্প!
কইতে যে আইছে আবাল খারাপি বাঙাল!
এহন ত আবার আমগর উঠায়ে, পুড়ায়ে, পর্যটন কেন্দ্র হচ্ছে,
গরিলার লাহান আমগর ঘাড়ে পা রাইখ্যা,
আদম সন্তানেরা রাস্তা পার হচ্ছে।
কি করবো গো পাইমুআর কমরেডরা,
মেয়নি নদীকে অন্ততঃ মায়াবতী জলস্রোত বানাতে দিন।
মাও সে তুং না হোক,
আপনারা কেউ এসে সাঁতার কাটুন।

 

প্রার্থনা বাক্য

এমন একজন কে ক্যান যে পাই!
যে হাজার বারবার চুমু খেয়েও আসল চুমুতে নাই।
যার ঠোঁটে, নাভি তে, নাভি তে;
দুই ভুরুর ফাঁকে,
বারবার চুমু খেতে খেতে একটি চুমুও ছবি না আঁকে।
ও আল্লা,
ও অবিবেচক,
ক্যান বারবার ঠেলে দিচ্ছো মরীচিকায়?
বালুতে মুখ গুঁজে গুঁজে আর কতো দিবা থাকবো ঝড়ের অপেক্ষায়।
ঝড় উঠুক,
অন্তত চারটা ঠোঁট স্বশব্দে একবার একত্রিত হোক।

 

শ্লোগান কবিতা

একটা খতম জরুরী হয়ে পড়েছে।
একটা টসফায়ার জরুরী হয়ে পড়েছে।
জরুরী হয়ে পড়েছে একটা ডজফায়ার।
মানা যাচ্ছে না,
মানা যাচ্ছে না,
কুকুরের মতো একটা কুত্তাকাণ্ড,
হত্যাকাণ্ড,
চাই, চাই, চাই।
চমকে দেবার জন্য চাই।
জানান দেবার জন্য চাই।
জানিয়ে দেবার জন্য চাই।
পারছি না
পারছি না
পারছি না
বাচ্চা বাচ্চা মানুষ গুলার রক্তলাল হাত,
রক্তলাল হাত,
আমাকে রক্তাক্ত করছে।
আর আর ভিত্রে ভিত্রে টের পাচ্ছি রক্তের তৃষ্ণা।

বাধ্য করো না আমাকে হতে
ঐ ঐ রক্তবীজ অসুর।

 

বার্তা

যদি পারো আমার নামে কয়টা কুকুর পুষো।
যখন যেটাকে পারো ইচ্ছা মতো পিটাও।
এইটা, সেইটাও করাতেও পারো।
করতেও পারো।
চাই কি চালান করেও দিতে পারো সৌদী আরব।
ব্রেন ড্রেনেও ভাসাতেও পারো।
গুলি চাপাতির ভয় দেখায়া, পালাতেও বাধ্য করাতে পারো,
আম্রিকা, ইউরোপ।
গুম টুম তো খুবই সাধারণ।
আরো আরো নতুন নতুন পন্থার করো উদ্বোধন।
আর কুকুর পোষো।
আমার সারমেয়রা যেদিন তোমার সামনে দাড়াবে,
সেদিন কিন্তু পালিও না,
প্রস্তুতি নাও।
আমার নামের কুকুর গুলার থনে,
নেকড়েদের বের করে আনো,
আনো।
একটা ধূসর নেকড়ের পিঠে চড়ে আসছি।
চিনতে পারছো আমাকে।
দ্যাখো, দ্যাখো,
গালে ঠোঁটে সিংহের আঁচড়ের অক্ষর।
আঁচড় দিআ একটা চিহ্ন দিতে চাই তোমার পতাকায়।
দেবে দিতে?
ঘেউ ঘেউ ঘেউ, ঘে ও উ…
শুনতে পাচ্ছো কি একটা বন্য নেকড়ের ডাক?
ঠিক ঠিক আসছিই কিন্তু!

 

চুম্বন

তাইফুন, তাইফুন,
সমুদ্র আপনাকে ভাসিয়ে নিক।
চোরাবালি গিলে খাক।
ঝাউবনে যেয়ে এমন ভাবে হারান।
উদ্ধারে যেন ডগ স্কোয়াড লাগে।
আপনার গন্ধঅলা জামা কোথায় লুকানো তাইফুন?
সাবধানের জন্য হলেও এক কপি বাইরে রাখুন।
বাতাসে বৃষ্টির আভাস পাচ্ছি,
পাচ্ছি হালকা ঝড়ের ঘ্রাণ,
ছাতা, রেইনকোট, লাইফ বোর্ড আপনার জন্য জরুরী।
স্পীড বোটে যখন সমুদ্র উড়বেন,
কথা দিচ্ছি,
দেবো না দোল।
রাশি রাশি ঢেউদের বলে দেবো, ওরা যেন সহনীয় মাত্রা মানে।
উড়ন্ত সমুদ্র পাখিরা আপনার লক্ষ্য রাখবে,
প্রস্তুত থাকবে সুযোগ্য ডলফিন বাহিনী।
যদি অঘটন ঘটেই,
ওরা আপনাকে সৈকতে পৌঁছে দেবে।
তাইফুন,
হ্যাঁ তাইফুন,
বাংলাদেশের নৌ বাহিনীর উপরও আপনি আস্থা রাখতে পারেন।
একাত্তরে ওদের উজ্জল পার্ফরমেন্স।
আর আমার গোপন ডাকাত দল,
মানে ভবিষ্যতের গেরিলা নৌ বাহিনী,
লক্ষ্যে রাখবে আপনাকে।
আপনি নির্বিগ্নে যেতে পারেন মহেশখালি,
দারুচিনি দ্বীপ, কিংবা কোরাল আইল্যান্ড।
চান্দের গাড়ি যোগে যখন বার্মা বাজার যাচ্ছেন,
তখন একবার হলেও বালি আটকা জেলিফিস গুলার কথা ভাববেন;
ভাববেন, জোয়ারে উল্টে থাকা তারা মাছ।
ভাববেন, আমাদের কাচা সোনা ইউরেনিয়াম,
মানে পারমানবিক চুল্লি ভোজ, আমরা কার কাছে বেচবো!
আমরা কি বানাবো না এটম?
আমাদের পারমানবিক গবেষণা কেন্দ্র কী আজীবন শস্যের গো এষণা করবে?
তাইফুন, তাইফুন;
ও বাজার থেকে যাই কেনেন,
গালে মাখা লাল মাটি অবশ্যই কিনবেন।
আপনার গাল খুব লাল হলে,
ঝড়ে বাতাসে সব টাইফুন,
টাইফুন,
সব লন্ড বন্ড করে দিলে,
সমুদ্র ফুঁসে উঠলে,
পিরানহার ঝাঁক আপনাকে খেতে আসলে,
অক্টোপাসগুলো দশ ডানা ছড়ালে,
প্যান্ডোরার বাক্স জন্মের মতো খুলে গেলে,
পসিডনামি উঠে আসবো,
জলের সর্বশক্তির ভেতর আপনি কী আমাকে টের পাবেন?
আকাশ ফাটা জ্যোস্নায়
গাল কী হবে খুব লাল!

শেয়ার করুন

মন্তব্য

টি মন্তব্য করা হয়েছে

Leave A Reply

শেয়ার