তিস্তা
দৃষ্টির সাথে দৃষ্টি আর দৃশ্যের সাথে দৃশ্যের গভীর ঘর্ষণে ঝরে পড়ে বরফসময় ।
মরুতে মরুতে গরজে নতুন নতুন নদীর প্লাবন । সুরক্ষিত হাওয়ায়, জলে-
ভেসে যায় বাঁধের পরে বাঁধ, প্রীতির বাঁধন ।
তবু ‘চিতামো’ হ্রদ হতে দুগ্ধসম যে নদী সৃষ্ট দেবী পার্বতীর স্তন্য হতে
একদিন সে তিস্তা শুকিয়ে যাবে,
বিস্তীর্ণ পতিত ভূমে চাষ হবে গাঞ্জাআফিমবোধবিবেকের ।
অতঃপর বোধ ও বিবেকরাশি ব্রহ্মপুত্র ভায়া ধরে বঙ্গোপসাগরে হারাবে
আফিম-গহীন নেশায় ভুলে যাবো জলজটিল হিস্যা ।
আকাশীর সাথে নীল সাক্ষাৎকারে
মধ্যাকর্ষ-অভিকর্ষ এড়িয়ে এগোচ্ছি কি তাদের মতো? যারা এগিয়েছে মহাকর্ষিক । নাকি পশ্চাৎধাবমান? যারা হারিয়ে ছিল, হারিয়ে গেছে, হেরে গেছে ? নাকি স্থির, অশ্বহীন, অচঞ্চল? গবাদিপশুর জন্য খড়-বিচালি আর উচ্ছিষ্ট নিয়ে যাদের গোয়ালঘর, আঙিনার চারি-সংসার ? তবু প্রতি হালনাগাদে নিজেই নিজের উচ্ছিষ্ট, মলমূত্র ।
বেদনার যে পার্সেল গত শীতে কুরিয়ার করেছিলে, তার আজ অফিস ডেলিভারি হলো । ফ্যাকাশে গ্রিনহাউজ, ওজন স্তর পেরোলেই তুমি অন্য রঙের ছাদ । আকাশী । খোঁজ নিও মধ্যপ্রাচ্যের পাতালে ।
নিষিদ্ধ বৃক্ষ ও মৌমাছির গান
ফুলের ইচ্ছায় ভেসে আসা কীটের মধুদংশনে ঝরে যায় নিষিদ্ধ বৃক্ষের প্রায়শ্চিত্তবোধ ।
অনেক মৌস্মৃতি জমা আছে চাকে- সংকলনের অবদান যেসব মৌমাছির, তারা
সজ্ঞাবোধের সময় ঠুকরে মরে । বৃক্ষ, তাই মধু ধারন করেও যা খাই না ।
রৌদ্র আমাদের রান্নাঘর, জল তার উনুনে চড়ে পাকায় ভাতের বিয়ার ।
যেমন তেমন ক্ষনে, রক্তবতি গাছের মাংস খুলে কয়লা তুলে কেউ না
কেউ কারো না কারো ভেঙেছে মনপাঁজর । মসজিদ ভেঙে সেখানে আপনা
জেগে ওঠে মায়ার মন্দির এবং পৌত্তলিক মন্দির ভেঙে গড়ে
ওঠে শ্রাবণের সাদা মসজিদ । টিনের চালায় অধিসক্ত মুয়াজ্জিনের প্রেমসংগীতে-
গুন গুন গুন রিনিঝিনি রিনরিন ।
বয়স
প্রাক-প্রস্তর কলাজ্ঞান নিয়ে মৌনতার কাছে দ্রোহবিজ্ঞান শিখি
রঙফসলের মেয়াদ বেড়ে যায় দুস্থ লাঙলের কর্ষণে
জানাশোনার বয়স বেড়েছে, সোজাসাপ্টা কথাগুলো
এঁকেবেঁকে গেছে চিরল নদীর ওধারে
সব যুদ্ধ, সব অপরাধ কি করে ভোলে চাষাহত মাটি
কোমরে কোমরে যে বাড়ছে বৃক্ষ, তা আকাশ ছাড়িয়ে যাক ।
ট্যারা চোখের দৃশ্যাবলী
প্রশ্নমালা জড়ো কর পাপী, ঘৃণাত্নক উত্তরগুলো ছিটাইও মনোমাংসের সরোবরে । লবঙ্গবনের কৌতূহলগুলো গভীর অসহায় । হায়! লবঙ্গবনের কৌতূহলগুলো গভীর অসহায় ।
চোখ ট্যারা করে ভাবা ভাবনাগুচ্ছ ভাবি নতুন বনে গিয়ে। বনের নাম শিউলি আপু-টগর ভাই । দুটো দলে দুলে দুলে তারা বিভক্ত, রাত হলে পর পরস্পরের অরন্যে নামে । দর্শনা কুষ্টিয়ার হুইস্কি-বাংলার উষ্ণতাবোধে চলে সারা লাল রাত সুতি-পলিস্টার-রাজশাহী সিল্কি পিচ্ছিল বস্ত্রভ্রমণ । আমি বেণুবনের অসভ্য লতা হই, বাতাশ অনুকূলে রাখিলে দিনরাত সমান তালে দুলে যাই । দুলে যাই…