কাফি কামাল’র কবিতা

0

প্রসবকালিন ভাববিদ্যুৎ

কিছুদিন লাবণ্য পাঠের আনন্দে মেতেছিলাম বনে;
মন গুঞ্জনের ডালপালায় দোল খেয়ে এসেছি নগরে
নাতিদীর্ঘ বর্ণনার ভাঁজভোজে নিজেকে আবিষ্কার করি
দূরাগত পদধ্বনি ঋদ্ধ বিহ্বল সংখ্যার ভেতর;
চাতুর্যের নানরুটি মোড়ানো এক টুকরো নগর কাবাব।
বাতাসে প্রচুর জল, হাওয়ায় সাগর
বাতাসে আগুন কণা, বৈয়ারে উনুন…
অবসন্ন আগুনের হল্কাটুকু চুষে নেয় শেকড়ের প্রাণ।
বিষয়ান্তরের উল্লম্ফনে দ্রুততর পাঠ্য হয়ে ওঠে
অনন্তের ব্যাপ্তিসহ তীর্থভ্রান্তির দুর্বোধ্য অধ্যায়।

২.
রা শব্দের আগেই ধা করে ছুটে এলো
রাধার উপমা
শ্রীমতি রাধিকা; বাধিত হবেন পদ্যে।
পা পাড়ি দিয়ে আসে তা ইতিহাসে আঁকা
পাতার শরীরে
পাতা আছে পাতা; দ্রুত ভরে ওঠে গদ্যে।

৩.
সম্ভাব্যতা নিংড়ে কাহিনিসমূহ তারে ছড়িয়ে রেখেছে স্নানঘর।
সময়, অন্তর্গত রক্তপাতের মধ্য দিয়ে
আস্বাদন করছে রোদ ও চিহ্নের সম্প্রসারণ।
পতনধ্বনির সূত্রে জলবায়ুর পারস্পরিক সম্পর্কের নৃ-ব্যঞ্জনা
খোদাই হচ্ছে, বাকলে।
মহাকর্ষণ বিধৌত হামাগুড়ি কেঁপে উঠছে
বায়ুস্তরে জাগতিক অহংকার।
পরাগ নৃত্য ভ্রমরের ঠোঁট গুঞ্জনের বাহুল্য মেখে নিচ্ছে।
পিঁপড়ে ও পতঙ্গ চিত্রের অদূরে সংখ্যাতত্ত্ব ভিজে উঠছে
মুদ্রিত শূন্যতার পুকুরে।
চিৎসাঁতার পাঠ্য করে নিচ্ছে
নোনাজলের অগুনতি ঢেউয়ে বঙ্গোপসাগর।
৪.
কেউতো রাখে না বেঁধে তবু ঠিক বাঁধা পড়ে আছি
দ্বিধার সুতোয় বোনা স্বরচিত সূক্ষ্ম এক জালে-
ছুটে গেলে দৌড়ের ইঁদুর
বেজে উঠি গীত বিজ্ঞাপন
রটেছে যা তারও কিছু বেশি
সমন্বিত পথ রেখা টানা-
নদী ভাঙনের পরে জেগে ওঠে চরের জঙ্গম
মৃত মানুষের দেশে পশুদের ভাষা বোঝা দায়।

৫.
স্নানঘরে ঢুকেছিল মেঘ
কাল্পনিক কল্পবর্ষ শেষে
জলকেলির শব্দ হয়ে আসে
কর্ণকুহরে।

৬.
মাংসপট্টির প্রতিটি দোকানে
ঝুলে আছে ফর্সা নারীর রান
চর্বি, সিনা আর টুকরো পাঁজর।
রাগি পুরুষেরা নাড়ছে পাঁজর
অপারগ দেখছে রান ও সিনা
কাল নারীরা কিনছে সাদা চর্বি।
হৃদয়ের রঙিন পর্দা জুড়ে
ফর্সা মুখের মেয়ে উঁকি দিচ্ছে
কৃষ্ণ দীঘল বিনুনি দুলিয়ে।
চিত্রনাট্যে সুরের সমন্বয়ে
উড়ছে বহুজাতিক সুখবাষ্প
বিজ্ঞাপনের কথার জাদুতে।
শ্যামল নারী ও তামাটে নর
এ মিলে হবে না সুখের ঘর।

৭.
পাখিচত্বর আর পশুসড়ক
আমাদের শহরেও আছে
পাখি ফ্রুৎ
পশু ঘোঁৎ
মুর্হুমুহু, নিরন্তর।

শেয়ার করুন

মন্তব্য

টি মন্তব্য করা হয়েছে

Leave A Reply

শেয়ার