শামীম মেহেদী’র কবিতা

0

আগামীর নক্ষত্র এবং আমি

ছারপোকা খেয়ে খেয়ে করেছে বিনাশ রক্ত; বেলুন হয়েছে বাষ্প
বানরের নখে উকুন; বাদাম, কলা-পেটে হয়েছে সাবার। অর্থনীতি
পড়েছে ধরা, বৈদেশিক পণ্য হয়েছে ফ্যাশন। নকশিকাঁথা; পাটের শাড়ি,
স্বদেশি-আলু, চাল, মাছ, অরণ্যে অস্থিরতা বাড়ছে সময়, সময়ের দাম
কমছে পৃথিবী-আবাসভূমি। লতা-পাতা-ফুল-ফল, সবুজ-হলদে…
জোক খেয়েছে হাটু-কনুই; সেপটিক লালমুলো থাইমাগুর, নোনা-
পানি সয়লাব। চা, পাট, গ্যাস শিৎকার; অর্ধবৎসরের শিশুর করুণ সুর,
কান্না… মাছ, ভাত, খেয়েছ অনেক-ডালপানি, আলু, লালমরিচ, পেঁয়াজ-
ভালবাসা নাও।

ফলোআপ: রিভিউ ডেস্ক

…একটু আগেও… ঝড় ছিল। সা… সা বাতাস মেতেছিল।
চড়কি দোলায় দুলছিল-লতাপাতা, গুল্ম, ঘাসফড়িঙ, বাদুর…
সে কি আগুন ছুঁয়েছিল?
দাউ দাউ… পানপুঞ্জি কেঁদে ছিল।… তাকিয়ে ছিল সে পলকহীন চোখে…
বাঁশের সাঁকো কিছুদূর হাঁটলেই গান-পোকার ঝিঁ-ঝিঁ…
গাছগাছালি আর পাখির শিস…, বাদরের নৃত্য; সব থেমে ছিল-
ঘুমিয়ে ছিল ঘুম অজন্মান্তরে…

দৃশ্যপট
আমার আমিতে অগোচরে মনে করিয়ে দ্যায় লুণ্ঠিত সবুজের নিসর্গ…
এখন হিম শীতলতার দ্বার উন্মুক্ত… আহ! উন্মুখ চেয়ে দ্যাখো, চেয়ে চেয়ে খুন হও- হাসব… হাসিতে কান্না লুকাব। ঝঞ্জাট সময়ের স্রোতে অস্পর্শ প্রাণির মতো
…অতপর নির্জনতা ছেড়ে বেড়িয়ে আসে সাম্রাজ্যবাদ… দুষ্কৃতি, অপশক্তি
…জল ছোঁয়ার শেষ বিকেল যেমন… অথবা লতাপাতার অযথা পায়চারি…

সাহসি মানুষ দ্যাখে-চেয়ে দ্যাখে তার চোখ, মাঠঘাট, ধান, সবুজঘাস
আর মেঘের আস্তরণ
খসে পড়ছে ক্রমে…

পোস্টার

একটা পোস্টার হবে, সম্মেলনি পোস্টার
রঙ হবে সাদার উপর লাল-নীল,
একটা দেয়ালিকা হবে সযতেœ গড়া
মুক্তির শ্লে¬াগান…
কাগজ… কলম… কলম… কাগজ…
মুক্ত পাখির অবাধ বিচরণ।
দেয়ালে দেয়ালে চিকা মারা নিষেধ
তারপরও দেয়ালের মালিক নিজেই
এ-শহর ছেড়ে ঐ-শহর
তারপর সারা দেশে
একশচুয়াল্লি¬শ ধারা… অনশন…
অতঃপর কারফিউ জারি হবে।
বুলেটের ক্ষতস্থান খুবলে খুবলে খাবে শকুন
একটা মুখোশ আগুনে দগ্ধ হয়ে
চিৎকার করবে
ইঞ্চি, ফুট, বর্গমাইলে
একটা সম্মেলন হবে একটা সম্মেলনি পোস্টার হবে।

অক্ষমতার বিস্ফোরণ

প্রাণেশ্বরির তীঁর গ্যাছে রক্তের প্রসব
অল্প অল্প, কাঁপা কাঁপা স্থির চিত্র;- স্কিন
ভয়ার্ত মানুষের কংকাল-একটি শিশু
খুব তৃষ্ণার্ত, আহাজারি মেঘহীন ভিয়েতনাম শহর; অসহ্য সব
বিস্ফোরণের আওয়াজে বধির; সভ্যতার উন্নত গৃহবাসি মানব!
একদিকে রক্ত, একদিকে কান্না-ভয়-ক্ষুধা অহরহ
যুগস্রষ্টার আদিম হুঙ্কার (!)
শিশুটির চোখে জল, নগ্নদেহ
মাটি ভেজাতে জল চাওয়া-জল যে অক্ষম
যৌনাঙ্গ চেপে ভিজে যাক সব-
ভেসে যাক সব, অক্ষম শিশুটিও…

অতিরিক্ত শব্দপাঠ : বিস্রস্ত

কৃষ্ণপক্ষ তখন। বিদগ্ধ মাটি শূন্যে ভাসে। আমি, আমরা হেসে উঠি, হা… হা… হা… কেননা এমন করে আমাদের কান্নাগুলো সমাধিস্থ হয় মাটিকুলে
চেয়েছিলাম আমরা আমাদের মতো হতে-সৎ এবং স্বতন্ত্র
স্বপ্ন মৃত্যুকোলে অস্তমিত
হাসিকান্না ভাললাগা ভালবাসা আষাঢ়ের ঘনকাল মেঘের মধ্যে লুকায়িত
কখনো দ্যাখেছো পরগাছা উদ্ভিদ প্রাণ? তাহলে বুঝবে কেমন করে ধিক বাবুইদের
চড়–ইয়ের মতো বেঁচে থাকা জীবনের অহম সাধ কতটা দুঃসাধ্য
নেড়িকুত্তার কামিজে গন্ধ শোঁকার বেলায়-পূর্ণিমার চাঁদ কি কখনো ভোলা যায়
ভাবনার আদিগন্তে তাকিয়ে-তারও গহীন অন্ধকার ছিল, আছে, থাকবে
তারও সতিত্ব খর্ব করে গ্রহণকাল
জীবনবাঁকে বিস্রস্ত সবকিছু, কখনো ঘোমট বিপুলা পৃথিবী
কুয়াশাঘন সাদা মেঘদূত এবং অন্ধকার রাজ্যে চাটুকারিতা

ফসল

অনেকতো হেঁটেছি, কদমের ফুল হাতে; ঋতুবর্তী নারীর সঙ্গোপনে পেয়েছি কি কিছু? অবণির হাতে চত্বরের পাশ ঘেরা কত ফুল জল ভাল লাগা, হয়ত ক্ষণিক ভালবাসা। ঊনপৃথিবীর ক্যানভাসে দৃকচিত্র মেলোডি চিত্রকল্প
রঙ; বড় বৈচিত্র্যময় কখনো, কখনো আত্মীয় অথবা কখনো অনাত্মীয়
এইতো বেলা। দিন চলা। সময় গোণা। ভাল লাগা।
আমাকে এক বিন্দু শিশিরের জল দাও পরিপূর্ণ হতে সৃষ্টির মহত্ত্ব নিয়ে
তুমি দশ মাস দশ দিন গর্ভধারিণী হও আমার আজন্ম সূর্যদেবতা পেটে নিয়ে

            হবে
                           শুধুই
                                       আমার
                                                         তোমার

শেয়ার করুন

মন্তব্য

টি মন্তব্য করা হয়েছে

Leave A Reply

শেয়ার