ঘুম ঘুম পড়শি
ঘুম পাড়ানিয়া গান শুনে ঘুমিয়েছি দীর্ঘকাল, গ্রীষ্ম-বর্ষা চলে গেছে কার্তিকের মঙ্গাও শেষ। উত্তরায়ণ সংক্রান্তির উৎসবে তারও থাকার কথা, আমিও সাত-পাঁচ ভেবে গুটি গুটি হাঁটি।
কিশোরির দল সেজেছে মেঘের কুমকুমে আর সবুজ জমিন দিয়ে ঢেকেছে শরীর, কপালে পড়েছে পলাশের টিপ।
মুগ্ধচোখে চেয়ে রাতে আমাদের ধাবমান দিন ঘুম ঘুম চোখ স্বপ্ন দেখে আগামি উৎসবের, গত উৎসবে সে-ও ছিল নৃত্যরত কিংবা মাতাল।
ও কিশোরি ও মেঘদল, তোমাদের সখা কই? ও শীত ও কুয়াশা তোমাদের সময় কি শেষ? ঘুম পাড়ানিয়া গান শেষে ঘুম ভাঙানিয়া গান; বাড়ির পাশে আরশিনগর সেথা এক পড়শি বাস করে তারে না দেখিলাম না চিনিলাম কেন মনে পড়ে।
দখলিয়া
অমন দূরের দেশে নাওয়ের নোঙর ফেলে
কষ্টেসৃষ্টে বেঁচে থাকা পাপ।
পিতার নামাজে নাচে সন্তানের প্রাণ
অসময়ে সময়ের প্রাচিন প্রার্থনা
অভিমানে ধীরলয়ে ভাসানের গান।
পিতামহ বুনেছিল দখলের বীজ,
প্রাচিন অভিজ্ঞতা পাঠ নিল তরুণের দেশ
মাতম জাগানিয়া দুরন্ত সন্ত্রাসে
লাজের ঘোমটা তুলে অনার্য অতীত
এই তবে দিনের দঙ্গলে ফেরা ধন?
মরণের মরিয়া ঝালর?
নবান্ন এলো বুঝি আমার এদেশে
পুরোনো দূরের দেশ এখন আমার।
তবুও জ্বালা করে পুরোনো খোয়াব
পিতামহ জেনে নিয়ো আমার বিদায়।
জলকন্যের আত্মাহুতি
জলকন্যে জলের কুসুম
জলের মাঝে ঘর
শেওলাঘাটের কলাবতি
জলকন্যের পর
উড়–ক্কু মেঘ জলকন্যা
জলের শাড়ি কাল
রোদের মায়া কষ্ট দিল
সুখ যা চাঁদের আলো
মাছের পিঠে জলের কেলি
গাঙপাড়ে গাঙচিল
ছোঁ মেরে মাছ উড়ল আকাশ
জলের শরীর নীল
জলকন্যে জলের কুসুম
মৎস্য ছিল মিতা
কলাবতির পাঁপড়ি জ্বলে
জলকন্যের চিতা।
মানুষ-৬
ভুলে যাও প্রিয়তর ভুলে যাও আরণ্য মানুষ
খোয়াবের পরে যদি গান হয় বোনা
দোয়েলের নিড়ে ফেরে দোয়েল মানুষ
ডাক দেয় যদি,
সুড় সুড় বেরিয়ে এসো
প্রিয়তর সুখের কাঙাল
ডুব ডুব জলে
অতিকায় তিমি হয়ে ফিরে এসো
ডুব ডুব জলে
তিমি মানুষের জীবন্ত খোলস
ভুলে যাও সুখ
ভুলে যাও দুখ
ভুলে যাও সুন্দর
ভুলো না মানুষ
অন্তত হাতের মুঠোয় রাখ
কবিতা মাটি
ভুলে যাও আদিগন্ত
পরাশ্রয়ে জলজ খোয়াব।