সানুরাগ
নদী পরেছে বর্ষার বিকেল
বিকেলের গায়ে গোধূলির রাঙা আভা
জ্যোৎস্নার মদির আসন্ন রাতের চোখ
তরঙ্গ ভাঙে তরুণীর ফুলেল ওষ্ঠপুটে।
অনেক অনেক দূরে ঝিরঝিরিয়ে বৃষ্টি নামে
পাহাড়ের গা বেয়ে চুঁইয়ে পড়ে গিরগিটি জল
হরপ্পা-ব্যাবিলন-ভিক্টোরিয়া
সানন্দে ধুইয়ে দেয় একেকটি নন্দিত বেলুন।
মেঘে মেঘে ভোর দৃষ্টি মেলে
ডানা ঝাপটায় আলোর প্রজাপতি আর নিদাঘ দুপুর
গেরুয়া সময় গড়ায় দ্রাবিড় দহনে
একরত্তি সুনীল শিখায় কাঁপে মোমের মহুয়া।
সাজঘর
নৈকট্যে এতটা বসবাস জাগে বিস্ময়
সাজঘরে বসে বসে তিল তিল সাজা
নিজেরে নিয়েই আনন্দ
ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখা স্বচ্ছ সরোবরে।
নক্ষত্রের মৃদু আলোয় পথ দেখা
কিই-বা প্রয়োজন সংশয়ের দোলাচলে
তারচেয়ে কত না বানানো বেলুন— বনলতা সেন
বসে বসে সাজঘরে— ক্লান্তিও শশক তখন।
জমি আছে সকলেরই, নেই শুধু সাজঘর
বানাতে গেলেই কষ্টকল্পনার যাবতিয় কম্বিনেশন
গেটআপ আর প্রকৃতির অবারিত কঠোর তত্ত্বাবধানে বেড়ে ওঠা
জীবনানন্দ মন— তারপর না সাজঘর সুরভিত উপমার কাব্যগাঁথা
আনন্দাশ্রম।
অলৌকিক জ্যোৎস্না
যেন তুমি এক অলৌকিক জ্যোৎস্না
পাথর সময়ে সাহসি শিশির
তোমার স্ফুরণ যেন কাকডাকা ভোরের
নিবিড় স্নিগ্ধতার মতো।
দেখেছি আমি মায়ামি বিচ
নায়েগ্রার পতন এবং তোমাকে
ভেনিসের উচ্ছ্বাসের সঙ্গে মিলিয়েছি বারংবার
আর আশ্চর্য হয়েছি তোমার ঐশ্বর্যে।
তুমি কি জান
একজন মানুষ কতটা সৌন্দর্যের পূজারি হয়
কতটা স্বপ্নের পালক গুজে রাখে দু’চোখে
ইচ্ছে করে ভাস্কর হতে
তাজমহলের কাব্যময়তা আমিও তো ভালবাসি
অথচ ভাসি অথই দীনতায়
পারি না ছুঁয়ে যেতে অপরূপ সুন্দর।
তারপরও ফিরে আসি ব্রাইটস্টারের কাছে
অনাঘ্রাত স্পর্শে পাহাড় নদী ও অরণ্যে
তাকে দেখি— দেখি অলৌকিক জ্যোৎস্না
মহেঞ্জোদারো হরপ্পা বুনো পশ্চিমের ক্রিক
এডগার রাইজ বারোজের চিরসূর্য
এবং তোমাকে
তোমাকে।
হরণ
অযুত ধারাপাত চন্দ্রালোকে
ভাবনারেণুর নধর মিহিদানা
কোন এক ঐশ্বর্যের কাছে।
নদী বন কিংবা নন্দিনি আকাশ
অথবা বৃক্ষলতা
আর তার যাবতিয় চারুকলা
যেন সব এক ও অভিন্ন
ঐশ্বর্যে লীন শ্রেয়তম মধুরিমা
এবং তাই অযুত ধারাপাত চন্দ্রালোকে।