নাইয়ার পাঁচালি
ও নাইয়া বৈঠা ছুড়ে ফেলো । লগি ফেলে দাও । পাল খোলো । জলে ফ্যালো সব । ফেলে দাও । নিজেকে নিক্ষেপ করো । জম্মান্ধের কোটরে । করতলে অপ্রাপ্তি চাপিয়ে ভেসে চলো সব । ভাসো। নৌকার সামান্তরালে তুমি । বৈঠার সমান্তরালে তুমি । লগির সমান্তরালে তুমি । পালের সমান্তরালে । তুমি । ভেসে চলো । তুমল স্রোতে সহযাত্রিগন দের সাথে । ভেসে চলো । গহনে । গভীরে । গভীরতার দিকে । চরম স্রোতের দিকে । বিক্ষুব্ধ সন্ধ্যার দিকে । সহযাত্রীগণের সাথে । যে যার মতো ভেসে চলো । ভাসো । চাঁদকে মাথায় রেখে । তারাদের মাথায় রেখে । সূর্যদের মাথায় রেখে । স্যটেলাইটদের মাথায় রেখে । বুকের নিচে জল রেখে । বুকের নিচে শূন্যতা রেখে । বুকের নীচে পৃথিবী রেখে । বুকের নীচে সমূদ্র রেখে । ভাসো । জীবন একটা সমূদ্র বটে । জীবন একটা নদী বটে । জীবন একটা ভেসে চলা বটে । ভাসো বৈঠা । ভাসো জাল । মহাকাল । ভাসো নৌকা । ভাসো পাল । ভাসো নাইয়া সম অন্তরে রেখে প্রত্যেকে প্রত্যেককে । ভাসো । অবাধ প্রতোযোগীতায় ।
রঙ
রাঙিয়ে দাও । আলকাতরা ঢেলে দ্যাও গাঁয়ে । রাতের থেকে ও গভীর করো । বুনো মোষের পিঠে চড়িয়ে দাও । আমি তো ছাঁপিয়ে গ্যাছি সে অন্ধকার । যেখানে জমেছিলো দুফোঁটা ভীত পরাগ । আমার কিছুই শেখা হয়নি । ক থেকে ম পর্যন্ত ঝিমুনিতে কেটেছে । বর্গীয় স্পর্ধায় । বাকি হরফে আমার তীব্র অনিচ্ছা । কীভাবে চলবে…! বিশ্ব মহাবিশ্ব দেশ সমাজ রাষ্ট্র মানুষ অমানুষ । আমি নীরু । আমার চোখ উঠা । আমার মাইগ্রেন । আমার যন্ত্রণায় পৃথিবীটা ঘুরছে । আমি ঘুমিয়ে গ্যাছি বলে বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে নেমে এসেছে মৃত্যুর নীরবতা । আমি গান গাইনি বলে পাখিরা থেমে গেছে । আমার তো কিছুই করা হয়নি । দাঁত ব্রাশ, সকালের নাশতা, জমপেশ গোসল । চা-কফির আড়ালে লুকিয়ে শুধু ক্যাফেইন দেখেছি আমি । কীভাবে সৃষ্টি হয় শব্দের উত্তেজনা । রিকসার-বাসের-ট্রাকের । কালো ধোঁয়া ছাড়ো । আমি ভেসে যাই । ফেঁসে যাই । বে-আব্রু মেঘের কাছে । শিবকে পাঠিয়ে দাও । দীপাবলি আসুক । অসুরেরা আসুক । ঘুম থেকে উঠে দেখবো একটি নতুন ভোর । চোখ খুলে দেখবো এক ঝাঁক পাখি । এক বুক জল নিয়ে ছুটে চলা নদী । রাঙিয়ে দাও । আলকাতরা ঢেলে দাও । রাত করে দ্যাও সকল মিথ্যে দিন ।
পুতুল
কথা নাই কাঠের পুতুল নতজানু মাঠের মুকুল । ফুটবে কি ফুটবে না বুলি ।
ছুটবে গান । মেশিনের গুলি ।
সাইকেল
পোষা সাইকেলের বেল বাজাতে হয় না । সে নিজেই বেজে চলে আরোহীকে লেপ্টে দিয়ে । ইঁদুরের গর্তের সামনে রেখেছি কালো বিড়াল । ধানের গোলায় ইঁদুর মার্ডার কল । তবু ধান খায় ইদুরের দল । আমার কাশ্-ফ খোলা । চোখ বুজে দেখি সোলেমানি পিপড়ারা পৃথিবীটা মুখে নিয়ে ছুটছে স্টিফেনের গর্তের দিকে । স্টিফেন হুইল চেয়ারে মুখ ঘসতে ঘসতে দেখলো বড় ব্যাঙ কোলা ব্যাঙ মুতে মুতে নিভাতে চাইছে নমরুদের আগুন । ছাতিসংঘ থামিয়ে দিতে চাইছে তুমুল বর্ষণ । অবাধ বানিজ্যে আমি আমাকে বেচে দিয়েছি দুটো ডুমুর ফুলের বিনিময়ে । মাছিরা জানতে চাইছে কে দিয়েছে গুয়ে মুখ । উৎসুক । জনতার ভীড় ঠেলে আমি দেখলাম আমার গলিত লাশ শকুন চুচ্ছে না ।
দূরবীন
দুরবীন দিয়ে কাছে টেনোনা । ভালো বাসো । ছুড়ে ফেলো নিকষ অন্ধকারে । গহব্বরে । অসুখের চোখের কোটরে । যে ভুল ! উলে বোঁনা গরম কাপর । তাকে কি তোমরা শীতবস্ত্র বলতে শিখেছো । হিম । আমাকে সাদাভালুক করেছে । বরফের মন থেকে তুলে দিয়েছে শীলের শরীর । কাফনে মুখ গুজে আমি তবু ঝপেছি সূর্যের নাম । অতি দূর থেকে চেয়েছি আগুন । দোযখ । উত্তাপ । হাবিয়া জাহান্নাম ।
স্বরাজ
রাজায় রাজ্য গড়ে / রাজায় রাজ্যে চড়ে / রাজায় রাজ করে / রাজায় রাজায় লড়ে / রাজা রাজ্য পড়ে / রাজায় প্রজা ডরে / রাজা রাজ্যে মরে।।
প্রশ্ন
আচ্ছা গাছেরা কি দাড়িয়ে ঘুমায়? / গরমে সুইচ টিপে দেয় পাখার, / কিংবা জবুথুবু শীতে কাঁথা টেনে দেয় গায়ে । / আমি অবশ্য অন্য কথা ভাবছি- / গাছের নিচের লোকটার কথা- / সেও কি দাড়িয়ে ঘুমায়? / গরমে সুইচ টিপে দেয় ফ্যানের, / কিংবা শীতে লেপ মুড়ি ।। /
ছুট
রোদ্দুর ছুটি হলে /
আকাশ থেকে নেম আসে /
রাশি রাশি ভাটফুল /
ঘন্টা বেজে গ্যাছে /
মাছদের হৃদয়ে /
মাছিদের চোখে /
পাখিদের ডানায় /
গাছদের পাখায় /
আমার সন্যাসে….
লাল ফুলের বিবাহ আজ /
মা গাছটির মনে /
দুর পাথরের বনে /
বৃষ্টি নামছে; ঝর্না /
বর্না ওরনা পেচিঁয়ে ঝুলছে /
ভালোবাসা = জালি লাউ
শাদা কথা
ডায়নোসার নেই /
মানুষ আছে… /
হৃদয় আছে, /
ভালোবাসা আছে //
ভালো লাগা আছে /
প্রেম আছে /
আছে দুঃখ /
আছে সুখ /
সবুজ আছে /
লাল আছে /
লঙ্কার ঝাল আছে /
ডায়নোসার নেই /
ডায়নোসাররা থাকেনা ।
একটি কলার জীবন চক্র,………..
ডলা খেতে খেতে বুজলাম জীবন একটা কলার মতো / লালচে শৈশব সবুজাভ যৌবন এবং শেষ হলুদ রঙা গুয়ে /
অর্থাত্ পেঁকে গেলে আমায় ছিলে খাবে মাটি / আর আমার পরিত্যক্ত ছোলায় আছাড় খাবে তুমি বোকাচাঁদ ।
এই কবিতাটির কোন শিরোনাম দেয়া হয়নি
যেতে যেতে পথে খেতে খেতে মার / আমি ও শিখে গেছি ডুব ও সাঁতার / আর ডুবে ডুবে খেয়ে খেয়ে জল / বেয়ে বেয়ে স্বপ্ন চল্ অবিরল / আমিতো জেনে গেছি কতো ধানে হয় পকতো চাল / মিডিয়ার রসিকতা-তিল হয় তাল / আর এবং আরো আরো তাল / থেকে থেকে ক্রমাগত হয় আবডাল। / তবু / তবু আমি ঘুরি ডালে ডালে / এবং এবং মিশে যাই / দু’-চারটা ভেড়াদের পালে / পালে পালে পাল তুলে, ছুটে চলে নাও / ঠেলে ঠেলে উজান, হে পথিক কোথা তুমি যাও ।।
জনৈক, তোমাকে শীত রাতের নিমন্ত্রনপত্র
ওগো, তোমার নেমন্তন্ন রইলো …
যত্ন-আত্তির কথা একাদম ভাববেনা । কলাইয়ের পাটাতনে – শিশিরের হোগলা বিছিয়ে শুতে দেবো ।
আর টানিয়ে দেবো কুয়াশার মশারী ।
বলো? আসবে তো…
বিরহীনি খেজুর দিদির চোখের জলে-
তোমায় রেধে দেবো-
হাড়ীভর্তি প্রেম ।
শীত নিয় একদম ভাববে না-
তোমায় দেবো ধানের ভাপের উষ্ণতা –
আর পোড়ানো খড় বিচালির উত্তাপ ।
এসো না!
তোমার খোপায় গুঁজে দোবো সটি-আর কুমড়ো ফুল ।
বলো? আসবে তো…
আসবে না! এসো….
ভালো বাসা রেসিপি
ভালোবাসা কী /
উথলানো ভাতের ফেনা! / হয়তো তাই হবে /
পরিমিত ভাপে ফুটছে হাড়ি প্রেম / যা…
আজ দুপুরে বিতরন হবে সবার থালে থালে / এসো প্রেমিক সকল এবং / ছিটাও দু’ চামচ সোডিয়াম নুন / আধাকিলো ভালোবাসায় । পরিমান মতো হলুদ মরিচে সিদ্ধ প্রেম-গোলাপের তেলে দু’ চামচ ন্যাকামো ঢেলে… / তৈরি কর ভালো বাসা রেসিপি…