যাপিত ইস্কুল
তাদের কথা শুনে
নিজেকে আরো জ্ঞানী মনে হয়!
তারা পিছনে থেকে/আড়ালে থেকে
নিন্দা, পরনিন্দা, সমালোচনায় মসগুল থাকে!
তাদের কে আমার ভালো লাগে,
আমাকে পরিপূর্ণ করে তুলে নিজের মতো করে।
হাজরে আসওয়াদ
দমের ঘরে বসতে বসতে
মন ছুঁটে যায় প্রিয় ঠিকানায়!
তবুও দম ছাড়া তোমার কাছে নাই হ্যাঁ-সত্য,
নতজানু হই তোমার কাছে।
প্রতিনিয়ত তাঁড়া করে বেড়ায়
হৃদপিণ্ডটা
আমাকে তোমার কাছে যাওয়ার আশায়!
দমে-দমে দেখা করি চলো
চুম্বনে তোমার অস্তিত্বে…
পরিশুদ্ধ করে নেই আমিকে…
ছোট শিশু
ছোট শিশু হতে মনে চায় খুব
কোনো কিছুই য্যানো বুঝতে ইচ্ছা করে না,
ইচ্ছা করে না বয়সের ছাপ মাথায় নিতে;
শুধু খিলখিল হেসে-হেসে শান্তিতে ঘুমিয়ে পরি।
বড় হতে হতে দূরত্ব বেড়ে গেছে কতো!
আমাকে ভেবে নিতে হয় প্রতিনিয়ত
কেমন করে বড় হয়ে গেছি,
চাকরীর খোঁজে তাঁড়া করে বেড়ায় বয়সগুলো ;
আমার ওসব ইচ্ছা করেনা!
শুধু ঘ্রাণ নিতে ইচ্ছা করে সবুজ ঘাসের
সুস্থ বাতাসের,
পাহাড়ের ঘ্রাণে-ঘ্রাণে ইচ্ছা করে মাতাল হয়ে
ঘুরে বেড়াই আপনমনে নিত্যানন্দে,
সমুদ্রের গর্জনে আমার মন হয়ে যায় ছোট্ট শিশু,
ঠিক য্যানো,
কোনো অহংকার নাই,
হিংসা নাই,
কোনো মিথ্যা নাই/নাই কোনো বড়ত্ব!
কোনো রাজনীতি বুঝি না
সমাজের কিছুই বুঝি না;
শুধু খিলখিল হাসি
সপ্নে পাখির ডানা মেলে উড়ি,
ধান ক্ষেতে, ঘাসে-ঘাসে
আউলা সুরা বাতাসে।
পরমানন্দ শিশু
এক কাকমনে গোধুলীতে
নাচতে নাচতে রঙের খুশিতে
আকাঙ্ক্ষার স্বপ্নের তীরে
বাঁকা চাঁদ যায়নি আকাশ ছেড়ে
সবুজ কঁচি পাতাগুলোও হেলেদুলে
রঙে ঢঙে আলোকিত।
হৃদয় মাখানো/জোড়ানো
গানে গানে সাঁইজির কালাম পাঠে মগ্ন।
মনুষ্যত্ব জাগিয়ে তুলি
হৃদয় মাজারের পূর্নিমাতে,
বিষাদের খাতাগুলো
পুড়িয়ে তরতাজা আগুনে,
এই সত্য সবুজ প্রকৃতি’তে
কোকিলের আনন্দ মেখে
নিয়েছি!
স্বপ্নের মন খুঁজে চলেছি দিব্যধ্যানে।
একটা কংকর হাসে
এই বুঝি বৃষ্টি মাতাবে
জগতের অবহেলা গ্লাণি
চলে যাবে ;
কঁচি পাতাগুলো গাছে
মেতে আছে, আকাশ হাসে।
শতবছর আগের কথা,
আমাদের দেখা হয়েছিলো
আরো আদিতে পিরামিডের
মুক্ত মাটিতে,
সেদিন পাখি হয়েছিলাম।
নিস্তব্ধতায় ঘিরে আছে শরীরখানা,
শরীরে ইবাদতখানা,
আঙুরের রসে গ্লাসে-গ্লাসে।
এই বুঝি বৃষ্টি মাতাবে
জগতের অবহেলা গ্লানি দূরে যাবে।
বিষাক্ত শহর
অট্টালিকাগুলো শহরের পর শহরে
প্রেম বন্দীশালায় পরে আছে!
দেয়ালে মাকড়শা বাসা বেধেছে
আরো হেঁটে, উড়ে চলে তেলাপোকা, পাখি।
আমি চাইলেই আশা করতে পারিনা;
আশা করতে পারিনা একটা সুস্থ সকাল;
আশা করতে পারিনা একটা আদিম গাছ,
যার শাখা-প্রশাখা শান্তি বয়ে আনবে—
এনে দিবে হাউজে কাওসারের জলের বাটি!
আশা করতে পারিনা মুক্ত পরিবেশ,
যেখানে সকলে শান্তিতে পরিপূর্ণ হবে সুস্থ অক্সিজেনে, বায়ুতে।
অট্টালিকার চারপাশে তার, পোষ্টার আর ধুলাবালি,
অথচ, একটাও গাছ নেই!
চাইলেই আশা করতে পারিনা একটা শান্তির সমাজ।
চাহিদা
কেনো তবু হায়
আমি মৃত্যু চাই!
ছোট চড়ুই পাখিটা উড়ছে
ছোটছোট ডানা মেলে
বিশাল শূণ্য আকাশে,
অথচ, খুঁজিলেও পাওয়া যাবেনা তাঁরে
ছোট্ট চড়ুই পাখিটারে!
মিশরের পিরামিডের উপর দাড়িয়ে
সভ্যতার চাদরে এঁকেছে পৃথিবী বোধহয়,
ওই ছোট্ট পাখিটারে
কতো আদিম,
কতোকতো
যুগ-যুগ প্রকৃতি,
মাটি, পানি, বায়ু’তে জরায়ু হয়েছে ;
বেঁধেছে রক্ত, মাংস, মস্তিষ্ক,
অথচ,
কেনো তবুও
আমি মৃত্যু চাই!
বহুদিন হলো তীর্থ করি না
যাওয়া হয়না অগ্নিকুণ্ডে,
রাতভর গানেগানে আঙুরের রস পানে,
ওই দুইখান দাঁড়কাক দেখিনা!
অথচ,
কেনো তবুও
আমি মৃত্যু চাই!
কতোদিন যাওয়া হয়না উল্টো কালি’র দেশে,
সমুদ্র মেখে নিই না শরীরের লবনে,
কতোদিন যাইনা সাধুর হাটে
আনন্দ নগরে— নরগের আখড়ায়, গানে গানে মুক্ত রাঙাপাখি হয়ে।
কতোদিন যাই না বনে বনে
প্রকৃতির আসল রুপে,
এই ধুলাময় বিস্বাদ শহর ছেড়ে,
ওই বনফুলেরা আমাকে ডাকছে
ওই কঁচিপাতা গুলো ডাকছে
ঘ্রাণে সতেজ করে দিতে আমাকে,
অথচ, বোকার মতো আমি শুধু মৃত্যু’কে চাই আলিঙ্গন করতে!
শহরের ভ্যাপসা দূষিত হাওয়া
আমার মৃত্যু ডাকে,
আমি বেরোতে চাই
ডুবে থাকতে চাই প্রকৃতিতে
সুস্থ সবুজের সাগরে।
ফামু খান
জন্ম: ৩ আগষ্ট ১৯৯৫
(ছোট বেলা থেকে নিজেকে জানার পিপাসায় এখনো বড় হয়ে উঠা হলো না।)