জীবনানন্দ ও সচ্চিদানন্দ সংকেত
জনপদ মুখরিত যুদ্ধের সম্ভাবনায়*
চতুর্পাশ্ব ঘিরে আছে গোলাবারুদের দঙ্গল*
ক্ষেপাণাস্ত্রের মতো মানুষ
তাক হয়ে আছে মানুষের দিকে*
চোখে বুকে পুষছে ভয়ানক বাঙ্কার*
উদ্বেগ উৎকণ্ঠায়*
তবু জীবনের জীবনানন্দ এক
ঘাসফুলে*
পাখির পালকে ঢেকে দেয় কৃষ্ণগহ্বর*
ভালবাসার নামে বিলি করে
সংঘাত বিরোধী সবুজ হ্যান্ডবিল**
আহা* বিক্রিয়াময় বিশ্বে
যুদ্ধ এক নিদারুণ অনিবার্য্যতা*
তবু মিলনের মায়াবী পিপাসা
পতনের মুখোমুখী দাঁড়িয়ে*
প্রেমে স্বপনে
জীবনের পানে বাড়িয়ে ধরে সচ্চিদানন্দ সংকেত**
অন্তহীনতার সংবাদ
একটু মরমিয়া চোখে তাকাও*
দেখ*
সব কিছু ঈশ্বরের মতই পরমার্থিক**
কেবল মাংসপিণ্ড নয় মানুষ*
সাড়ে তিন হাত ভূমিটুকু
ধরে রাখে ব্রহ্মাণ্ডের সমান অন্ত্যহীনতা**
অমন যন্ত্রবাদী হয়ো না*
একটু সহজিয়া চোখে তাকাও*
যেমনটি তাকাত আমাদের বাউলিয়া চোখ*
দেখ*
জীবন শুধু টিকে থাকা নয়*
তার চেয়ে আরো কিছু বেশি**
ফিরে আসা বিষয়ক একটি সমীক্ষা
প্রাণটার আর
পাখি হবার শখ নাই*
কতজন কত ঠকিয়েছে
পণে বিপণনে
তবু তার মিটে নাই সাধ*
ফিরে ফিরে আসে
মানুষেরই কাছে*
আবেদনে নিবেদনে বাড়ায় চাহিদা রেখা**
দূরে গিয়ে* একা হয়ে
জেনেছে সে
মানুষের নৈকট্য ছাড়া মানুষ হারায় আত্মপরিচয়**
মা আমার মাটির প্রতি মা
ওঁ মা*
মা আমার*
শ্যামা*
লক্ষ্মী মা*
(মা)টি আমার*
তুমি মাটি* মাটি তুমি
মাটির (প্রতি)মা*
তোমারে সেবিব মাতৃতান্ত্রিক আচারে*
উপাচারে**
মা আমেনা*
হালেমা*
জাহের-এ খোদা*
চরণে দিই সিজদা* পড়ি নফল নামাজ**
ওঁ মা*
মা আমার*
ফাতেমা*
মুছে দিও জহরের নীল*
জবাইয়ের দাগ*
কারবালার খরা**
পানিত্তিরাশ
অ খোদা নিরঞ্জন*
ওই শিখরবিন্দু হতে
একবার নেমে এস
নীর আকারে*
খরাময় এ মড়ার ভূখন্ডে**
কে তোমারে বাঁধি রাখে নিত্য
কাঁটাতারে* পোশাকি চিহ্নায়কে*
বর্ণবাদী রক্তের পিপাসায়
কেন তুমি রঞ্জিত হও বারেবার**
অ খোদা নিরঞ্জন*
মুক্ত হও* মুক্তি দাও
রূপ বশ বর্ণ বাঁধ
গন্দমের অভিসন্ধি ভেদ করে**
সৃজনের উসকানিদাতা
না জানি কার পিঞ্জরে
নিজেকে দিয়েছে নির্ব্বাসন সে*
উত্তরের বিল যারে জানত*
পাখিদের নিকট আত্মীয় বলে**
প্রজাপতি* ফড়িঙের সহপাঠি*
ছুঁয়ে যেতো প্রিয় ঘাসফুল*
অন্তরের লজ্জাবতী লতা*
মিহি গুঞ্জনে উস্কে দিত
পরাগায়নের ভাষা**
এখন যায় যায় ফাগুন*
বয়ে যায় কাননের যৌবন
তবু সবখানে কেমন নিরবতা*
নাই বলে সৃজনের উসকানিদাতা**
দ্বীপ দিদার
জন্ম: ০৭ ডিসেম্বর ১৯৯১, মাতারবাড়ী, মহেশখালী, কক্সবাজার। প্রকাশিত গ্রন্থ: সহপাঠ গুপি গাইন, বাঘা বাইন…