কবিতা || সাঈদ শ

0

বায়ো-পলিটিক্স

যার জীবন আছে, তার জীবননাশও আছে…
এই ভেবে দুঃখ কর না।
জরুরী চিঠির উত্তরে লিখ
‘আসছি’…
সিনেমায় নায়কের পার্ট
কার না ভাল লাগে?
যতই মার খাক সেই গুণ্ডারা!
পাখিটির শীতকাল পছন্দ কি না
না জেনেই নেমে যাচ্ছে কুয়াশা
তুমি শুধু মানছ ‘ভুল’
তুমি শুধু বুঝেছ ‘ক্ষমা’
তোমার পায়ের চাপে কত কত পিঁপড়ে নিহত
তার হিসেব শুধু জানছ না!

লোকালবাস

তোমার ভিতরে ঢুকে বইসা থাকি
অনেক্ষণ ধরে; আরো মানুষ ওঠে
ব্যাংকার, ইঞ্জিনিয়ার, গায়ক, কবি,
বেকার এবং কি প্যাশোনেট ভবঘুরে
কারো দৃষ্টিই তুমি ফিরাও না!
তখন অস্বস্তি লাগে; হা-হুতাশ লাগে
ঘিঞ্জি আর সংকোচ লাগে মনে মনে
ইচ্ছা করে বের হয়ে যাই একলাফে
তবু উপায়ান্তরহীন বইসা থাকতে হয়
তুমি নিজের চাহিদা আদায় কইরা নাও
যখন লোকে কিছু বলে; করে উচ্চবাচ্য
গ্যাঞ্জাম কর তাদের সাথে আর
অন্যের কথা কানেই তুল না
যেন মনে হয়— তুমি খুব লোকালবাস
ভিতরে একটুও জায়গা খালি নাই অথচ
তোমার বেহায়া হেল্পার হৃদয় তখনো
ডাকতেছে চিল্লায়ে, ‘সিট খালি, সিট খালি’ বলে…

প্ল্যেজারিজম
১.
মাটিতে লিখে রাখা নাম
মুছে ফেললেও
মননে তার সংকেত আসে।
এইটুকু বিজ্ঞান বুঝি!
বাদলদিনে পিছলিয়ে যাওয়া মন
কোথায় যে গিয়ে পড়ে
কেউ জানে না
তবু কেউ কেউ
চিন্তা টিপে টিপে হেঁটে
গড়িয়ে যায় গভীর চিন্তার গহ্বরে
এইটুকু অজ্ঞান আমাদের!
একই নাম
উল্টো করে লিখলে
তারও আছে ভিন্ন অনর্থ!
রবীন্দ্রনাথ বেঁচে নেই;
জীবনবাবুও—
তবু তাদের মৃত্যুর ভেতর
ঢুকে তুমি দেখ
কত কত জীবন উড়ছে
এই আনন্দবোধ—
এইটুকু প্ল্যেজারিজম

২.
বাতাস ভেঙে যৌনতা আসে
আর রেজিমের ভেতর
বসে থাকেন ফুকো
যেকোনো প্লেজার বায়বীয়
শরীর যার রস দানকারী
যেন তাপ দিলে কফির কামবৃত্তি
ঔদ্ধত্য হয়, হয় বিগলিত…
আলোর আছে পরিধি
না দেখতে পারার সীমানা—
তার চেয়ে অন্ধকারে অধিক
দেখা যায় কামনার বিস্তারিত
কামজ মনোহরে
শরীর উপচে পড়ছে যার
তার দিকে বাড়াবো না এই হাত
যেন সে আসে; অজ্ঞাতসারে
নিবিড় কোমলতায়—
সাথে নিয়ে নীলছবিরাত

উত্তরজীবন

পিতারা আমাদের
দান করে গেছেন
— উত্তরজীবন
যেন কালের ফলটি—
উড়ে চলেছি প্রতিশ্রুতির বাতাসে
তখনি সত্য ঢুকে পড়ে
তখনি ঢুকে পড়ি মহাশূন্যে
ভাষার তিলক ধরে
ফিরে যাই পরিণয়ের দিকে
যে যার নামের পাশে
প্রশ্নচিহ্ন এঁকে!

স্বপ্নগুণ

তোমাকে কোথাও পাইনি
না ফুলে, না ফলে
এইরূপ বাসনার অবদমনের ভেতর—
কোনোদিন সান্দ্রঘুমের আলেয়ায়
রাঙাঠোঁটে, ডেকে নিয়ে
ঘাসের নরোম স্নিগ্ধতায়
শরীর মেলে
গ্রাস করে নিলে সমস্ত কৌমার্য!
দেহজ ঋতুবনে— হিমকুয়াশায়
বুকে ভাষার উল বুনে বুনে
যেন সেইদিন পেয়েছি তোমায়
আনন্দলোকে, উষ্মায়— প্রভূত স্বপ্নগুণে…

রমণ

একলা বাড়িটি
যেন বিধবার শাদা থানে
মূক হয়ে থাকে গাছেরাও
লোকের আনাগোনা নেই
প্রাচীন সেই কুটীরে
সাত বছর হলো। আজও
একলা সেই বাড়িটি
কোনো স্পর্শ নেই, দাগ নেই
শরীরের বৃষ্টি নেই
শুধু স্নানের সময়
পুরুষপুকুরে ডুব দিয়ে আসে নারীটি

 

107666963_1147959228892842_4197626424276888220_n
সাঈদ শ
পরিচিতি— ১৯৯৭ সালে গাইবান্ধা জেলায় জন্ম। বর্ত্তমানে চট্টগ্রাম শহরে বসবাসরত। ২০১৫ সাল থেকে লেখালিখির সাথে যুক্ত।
ইমেইলঃ skylarkshathil@gmail

শেয়ার করুন

মন্তব্য

টি মন্তব্য করা হয়েছে

Leave A Reply

শেয়ার