তুমি
যদি
তুমি শব্দটাকে আমি পুরোপুরি কেটে ফেলি
বা কেটে ফেলতে চাই
আর ধর;
এ শব্দটাকে একদম কেটেই ফেল্লাম আমি
তারপর দেখলাম শাদা শাদা রক্তের ফোঁটায় ভরে উঠতে থাকলো
আমার সমস্ত শব্দ আর কবিতার খাতা
তার ভেতরে বেদনার্ত শ্বেত চিৎকার
যেমন—
ধর;
তুমি একটা আকাশ
মানে, আকাশ শব্দটি তুমি শব্দটির সমার্থক হয়ে উঠল
তুমি আর আকাশে কোন পার্থক্য থাকল না
ঠিক তেমনি তুমি শব্দটি কেটে তদ্রুপ আমি লিখলাম সমুদ্র
ধর;
এভাবে তুমিই আবার সমুদ্রের সমার্থক হয়ে উঠলে…
তুমি = আকাশ
তুমি = সমুদ্র
আমার আকাশ
আমার সমুদ্র
এখন যদি ধর আমি
তুমিটাকে কেটে কেটে সমস্ত শব্দের সমার্থক হিসেবে লিখি—
যথা:
পাখী ট্রেন নক্ষত্র ফুল রিক্সা কবিতা বেলুন জীবন মদ ভালবাসা প্রেম তরঙ্গ দিন রাত্রী দুপুর সন্ধ্যা নীরবতা স্মৃতি যন্ত্রণা মাটি পুতুল শৈশব বিকেল পাঠ হাসি কান্না চেতনা মহাকাল রোদ বৃষ্টি ঝড় ভোর সূর্য্য দুঃখ কষ্ট ঝর্না ধূলিকণা মরুভূমি উল্কাপিণ্ড হরিণী চোখ পাথর হৃদয় মৃদঙ্গ সংঙ্গীত ধ্বংসযজ্ঞ অসুখ ঝিনুক সূচ চিতা আঁচ বোধ ক্রোধ ঈশ্বর সৌন্দর্য্য ঘৃণা জুয়া লড়াই ক্ষুদা মৃত্যু জন্ম সত্য মিথ্যা ছায়া অনুভূতি সিম্ফনী স্পন্ধন বিশাখা প্রকৃতি প্রতিরোধ ঔষুধ পাহাড় আত্মা অভিমান বিন্দু বৃত্ত তাস ইশারা অন্ধকার হুইশেল বধিরতা ভষ্মছাই…
তার মানে শেষ পর্য্যন্ত কী দাঁড়াচ্ছে?
এখন যে কোন শব্দ উচ্চারণ করা মাত্রই তুমি হয়ে উঠছ
সবকিছুর ভেতরেই তুমি
কী অদ্ভুতভাবে নিভৃত বিরল, না!
আমি জীবন থেকে তুমি শব্দটা কেটে দিতেই সব শব্দই তুমি হয়ে যাচ্ছ…
আশ্চর্য, কী সাংঘাতিক!
তুমি = মহাপৃথিবী
অথচ তুমি আর নেই
যদিও এ সবকিছুই তুমি শব্দের প্রতিফলন মাত্র
তুমি বোঝনি, কোনদিন।
মদ বিষয়ক
আরো ঘন বরফ খণ্ডের ন্যায়
জমাট হয়ে গেলে
বরফ কুচির মত
টুকরো টুকরো করে ভেঙ্গে ফেললে
আমাকে—
(কারণ, এ ভাবে বাস্তবিক নিজেকে ভাঙ্গা যায় না বলে)
তারপর ঢেলে দিও
গ্লাসে গ্লাসে
বোতলজাতকরণ হুইসকি বা ভদকায়
হোক না তা দেশীয় কেরু কোম্পানীর
অথবা একদম দেশী বংলা মালের বুদবুদে
কিংবা ইউরোপীয় সুস্বাদু ভ্রমের টাটকা স্বাদে
যেন চুমুকের আগেই
গ্লাসের মজ্জাগত মৃত চেতনা থেকে
সমস্বরে বলে ওঠে মদ্যপেরা
চীয়াস্… চীয়াস্…
ইফতেখার হেলাল
জন্মস্থান: ভৈরব, বাংলাদেশ। প্রকাশিত কবিতার বই: মৃতের রক্তবর্ণ কিংবা কেঁপে ওঠা দীর্ঘশ্বাস।