স্থিতিস্থাপক প্যারাডক্স। অযথা এক খোয়াবনামা
চায়ের মগে মহাসমুদ্দুর// জলের ঘূর্ণনে হাঁটছে সিগারেট ফিল্টার// হাঁটছে// পক্ষান্তরে সাঁতার সাঁতরে ইসরাত ইহিতার ভ্রূণ// ভাসমান// ভাসান কড়িকাঠ// ছাইচোখ গিলছে ঢেউ// অথবা// অনিষেক// না-নিষিক্ত আক্ষেপের সরোদ বাজনা// পর্দ্দার আড়ালে ঘুমিয়ে আছে সুখী নাগরিক// সং+সার// বেলুন// মন খারাপের বায়োস্কোপ// ফিফথ সিম্ফনি হুড়মুড়িয়ে বেজে ওঠে// মামুলি কয়েকটা আয়না টুকরো জমানোয়// ছাইগুলো// শতাব্দীর করুণতম আত্মহত্যা// মাংসাশী ফুলেদের কখনও কি আত্মহননের ইচ্ছে ফুঁসকায়// আয়ু ফুরানোর আগেই ফিলহারমনিক// বরফকাটা আগুনের আঁচ// টের পেয়ে বুঝতে পারি// এ আমার পাখিজন্ম গন্তব্য// ডাহুক প্রেমিকের দায়যোগ অভিশাপ// আজ রাতে পথে নামবো// জিগালোর পেতে দেয়া উরুদ্বয়ের খোঁজে নয়// সমুদ্রসৈকতসম ইরেজারের খোঁজ// মহাবিয়োগ// জীবন থেকে জীবন মুছে ফেলা হবে//…
যাপন
আধ-খোলা বীভৎস চোখের পাতা নিয়ে হাঁটি
মাছির চোখ দেখতে দেখতে ভুলেছি নিজের চোখ।
ছায়া হাসে বৃত্তের ভেতর
ভালবাসা নিরবে ঘামের মত জন্মায়
প্রকৃতপ্রস্তাবে ঘাম~পৃথিবীর খামি।
চিনামাটির থালার মত ভেঙে পড়ে চাঁদ
ভাঙনের শব্দে হারাই অথবা দাঁড়িয়ে থাকি নৈঃশব্দ্যের বাতাবরণে।
যে পাখিটি রোজ আসে; হৃদয়ের অলিন্দে বসে
সে পাখিটির চোখ হয়ত তুমি
আমি ও তুমির মাঝে
একটা শব্দ সেতু।
পতন
তীর চিহ্ন! ন্যানোসেকেন্ড দূরত্বে মূর্খের হাহাকার জীবন।
অশ্লীলতা। গার্বেজ মানুষের হল্লাগাড়ি।
অতল খাদের দিকে সুনিশ্চিত মানুষের পদক্ষেপ।
শূন্যতার উপর নেই, নীচ নেই।
অথচ অনন্ত শূন্যতাই ছিল সৃষ্টির আদিরূপ।
জন্মের পূর্ব্বে আপনি তবে কোথায় ছিলেন!?
গাছ থেকে আপেল পড়ার মত প্রতিনিয়ত মাটিতেই ফিরে আসি।
নিউটনও কি আমার মত পতনে বিশ্বাসী ছিলেন?
তিনিও কি একদিন ইউরেকা, ইউরেকা বলে খুঁজে পেয়েছিলেন পতনের সব সূত্র!
দারুণ একটা ভুল ছবি
ভুল ছবি!
ঝাউবনের ফাঁকে-ফাঁকে মুখ লুকায় অগ্নিদেব
দারুণ একটা ভুল ছবি আঁকতে আঁকতে ভুলে গেছি পূর্ব্বাপর।
সার্কাসের আহত ক্লাউন। মুখের আদলে মুখশ্রী।
এবার থামাও ভায়োলিনের করুণ ভুলভাল সুর।
কাঠের দরোজায় দাঁড়িয়ে আছে বরফের ডিম।
শিরীষ গাছের বাঁকে হারায় ভয়ংকর পোয়াতি চাঁদ।
সাগরের নীলে লীন হতে হতে ভুলে গেছি, E=mc^2 সূত্র।
অতঃপর পটুয়ার দিগন্তজোড়া পোস্টারে উদিত হয় নন্দলাল সূর্য্য।
রমণ
পিয়ানোর রিডগুলো প্রস্তুত।
কাছে আসে দয়াদ্র হরিণ। নীল হরিণ। তোমাকে নেবো গোপন গুহায়।
চুপিচুপি আততায়ীর মত অর্কিডের ঘ্রাণ নিয়ে। ঝিনুকের ঠোঁটদুটো আগলতোলা।
হরিণের গলায় আত্মহত্যার মত ঝুলছে ছোট-বড়
নাশপাতি।
গোলায়িত হাতের তালুর ভেতর একথোকা বৈঁচিফল।
নাশপাতির গন্ধে অর্গল খুলি
রমণের সুরে চোয়ালের প্রবেশমুখ ভেজা।
অতঃপর জেগে ওঠে জ্যামিতিক শরীরভূগোল।
মুহূর্ত্তেই সেলফোনের মত বেজে ওঠে হরিণ;
নীল ছবির রতিক্রীড়াবিদ!
দুটো রং একসঙ্গে মেশে গুহার ভেতর সাদাবড়ির মত।
বয়ে যায় স্কুলবালকের ছবি আঁকার ভেজা কাগজে।
যদি পেয়ে যাই যৌথতারা
সামুদ্রিক ঢেউ উপেক্ষা করে জেগে থাকে জলজ পর্ব্বত।
সুখ অর্থ, নোনা জলে ডুবে শ্বাস নিয়ে বেঁচে থাকা!
জীবনের গল্প খুঁজে খুঁজে, শরীরকে করছ পুষ্ট, মনকে মৃত।
তারপরও টিকটিকি খুঁজে বেড়ায় পোকা।
মাকড়শারা শুভজন্ম প্রাপ্ত হয় প্রতিদিন
বেঁচে থেকে প্রমাণ করি
বিবর্ত্তনবাদের ধারায় ক্রমানুসারে সৃষ্ট।
আজও খুঁজি
তারা খুঁজি রাতের আকাশে।
এক লক্ষ বিয়াল্লিশ হাজার গোনা হলেও যদি পেয়ে যাই যৌথতারা
জানাব সেদিন;
কতখানি নতজানু রাতের আকাশ।
দুঃখের ডাকনাম মৃত্যু
সেলাই করা দুঃখ। উড়ুক।
ছাইয়ের মত অন্ধ বাতাসের বাহুতে লেগে থাকুক।
দুঃখের ডাকনাম মৃত্যু!
দুঃখের যত গভীরে ঢুকি নিশ্চুপ হয়ে যাই।
ভাষাহীন শব্দ সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী
অনুধাবনহীন গ্রন্থ সবচেয়ে বেশি ভয়ংকর!
ক্ষনিকের আবেগ। স্পর্শের অতীত। বন্ধকী রত্নাকরের দোকানে রুপোর মত ।
বাস্তবতার বাতিস্তম্ভ। ঝুলে থাকা আপ্ত কথা।
জীবন একটা অনুদঘাটিত অনুভুতির নাম!
ইসরাত ইহিতা
জন্ম: ২ জুলাই ১৯৮৭। জন্মস্থান : পটুয়াখালী। পেশা ও নেশা : শিক্ষকতা।