প্রতিটি ভাষার নিজস্বতা আছে। আর বাগধারা ও প্রবাদ-প্রবচনের ক্ষেত্রে এটি বেশ মজার হয়ে থাকে, যদিও অন্যভাষী ব্যক্তির জন্য অনেকক্ষেত্রে সেটি জটিল ও প্রায় অবোধ্য হয়ে ধরা দেয়। বাগধারা (ইংরেজীতে idiom) সরাসরি শব্দার্থ প্রকাশ করে না, বরং একটি বাগধারার শব্দগুলোর সম্মিলনে সেগুলির আক্ষরিক অর্থ ছাপিয়ে একটি বিশেষ অর্থ প্রকাশ করে। আমাদের বাংলা ভাষার দুটি বাগধারার কথাই ধরা যাক না কেন — ‘ঘরের শত্রু বিভীষণ’ কিংবা ‘অগস্ত্য যাত্রা’। কোন বিদেশী কি এর অর্থ উদ্ধার করতে পারবে? হ্যাঁ, পারবে, যদি তার রাম-রাবণের যুদ্ধের ও অগস্ত্য মুনির কাহিনী জানা থাকে। ঠিক একইভাবে ইংরেজী ভাষার বেশিরভাগ বাগধারাও ইউরোপের কোন যুদ্ধকাহিনী, পুরানকাহিনী বা এমনকি পবিত্র বাইবেলের বিভিন্ন কাহিনী থেকে উৎসারিত হয়েছে। আজকের আলাপে আমরা এই বিষয়ে প্রকাশিতব্য বইয়ের একাংশ — বাইবেল, গ্রীক পুরানকাহিনী, জ্যোতির্বিদ্যা, ইউরোপীয় উপনিবেশ এবং এশীয় কাহিনী থেকে সৃষ্ট কয়েকটি ইংরেজী বাগধারার গল্প করব। সেই সাথে ইংরেজীতে বাগধারাগুলির পূর্ব্বের ও বর্ত্তমান ব্যবহারও দেখব।
(an) Achilles’ heel
অর্থ: শক্তিশালী হওয়ার পরও কারো বা কোন কিছুর ক্ষুদ্র কিন্তু দুর্ব্বল বা আক্রম্য অংশ। এটি হতে পারে চারিত্রিক, শারীরিক বা এমনকি বিমূর্ত্ত বা ভাবমূলক।
কাহিনী: গ্রীক পুরানকাহিনী অনুযায়ী সমুদ্রদেবী থেটিসের পুত্র একিলিসের জন্মের সাথে এই বাগধারাটি জড়িত। একিলিসের জন্ম হলে তার মা তার এক পায়ের গোড়ালি মুষ্টিবদ্ধ করে ধরে তাকে স্টিক্স নদীর পানিতে চুবিয়ে নিয়েছিল — কারণ এতে করে একিলিসের গায়ে সেই পানির স্পর্শে সে অজেয় হবে, তার শরীরে কোন অস্ত্র আঘাত করে ক্ষতি করতে পারবে না। স্টিক্স নদী হল পৃথিবী ও পাতালপুরীর সীমানার নদী। কিন্তু হাতের মুঠিতে ধরা গোড়ালিটা তো পানিতে ভেজেনি। তাই সেটিই হল একিলিসের দুর্ব্বল অংশ, সেটিই তার একমাত্র আক্রম্য অংশ। ভারতীয় পুরানকাহিনীর দুর্য্যোধনের ঊরুর দুর্ব্বলতার মতই যেন একিলিসের কাহিনী।
হোমারের ইলিয়াড মহাকাব্যে একিলিসের বন্ধু প্যাট্রোক্লস যখন রাজপুত্র হেকটরের হাতে নিহত হল, তখন একিলিস এমন ভয়ংকর রূপ নিয়ে যুদ্ধ শুরু করল যে দেবতারাও তার হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করতে পারছিল না। তখন তার পরনে ছিল তার মায়ের দেওয়া ও দেবকারিগরের তৈরী বিশেষ বর্ম। ট্রোজান যুদ্ধের শেষের দিকে রাজপুত্র প্যারিস লুকিয়ে থেকে একিলিসের দিকে এক তীর ছুঁড়ল, আর দেবতা অ্যাপোলো তীরটাকে একিলিসের সেই গোড়ালি বরাবর নিয়ে যেতে সাহায্য করল। তখন একিলিস হত হল।
ইংরেজীতে ব্যবহার (পূর্ব্বের যুগের): “Ireland, that vulnerable heel of the British Achilles!” — Samuel Taylor Coleridge in The Friend; a literary, moral and political weekly paper, 1810.
“A social climber can ill afford an Achilles heel and this particular weakness on Hutchins’ part would probably be disastrous to him sooner or later.” John Wain. Hurry On Down. 1953
ইংরেজীতে ব্যবহার (বর্ত্তমান যুগের): “Scientists have identified a coronavirus “Achilles’ heel” that may pave the way for a vaccine.” David Rivers, Coronavirus ‘Achilles’ heel’ identified by scientists in hope of fighting pandemic, The Daily Star UK, 06 April 2020
“Terming budget implementation the country’s “Achilles’ heel”, he said product prices just rise in Bangladesh but never decrease.” Staff Correspondent, Budget implementation Bangladesh’s Achilles’ heel, The Daily Star Bangladesh June 15 2019
as dead as a dodo; as dead as the dodo
অর্থ: মৃত, বিলুপ্ত, অপ্রচলিত বা বাতিল পুরানো
পেছনের কাহিনী: ডোডো ‘dodo’ নামে যে একটি পাখি পৃথিবীতে ছিল সে কথা আমরা জানি। ইংরেজী শব্দটি আসলে এসেছে পর্তুগিজ ‘doudo’ থেকে — পর্তুগিজ শব্দটার অর্থ হল ‘হাবাগোবা, নির্বোধ, বেকুব’। পাখিটার নাম এমন কেন? ছবি দেখলেই বুঝতে পারবেন যে, পাখিটা যেন খাওয়াদাওয়া করে গাবদাগোবদার মত হৃষ্টপুষ্ট হয়ে পাখা ছেঁটে ফেলে মানুষের হাতে নিহত হওয়ার জন্যই নিজেকে প্রস্তুত করেছে। তার বড়সড় ঠোঁট, ছোট ছোট পালক, ভারি ও মোটা দেহ মিলিয়ে পাখিটা উড়তে অক্ষম। এদের বাস ছিল ভারত মহাসাগরের মরিশাস ও রিইউনিয়ন দ্বীপপুঞ্জে। মানুষ দুনিয়াব্যাপী সভ্যতার আর ব্যবসায়ের বিস্তারে যখন পাগলপারা, তখন প্রথমে পর্তুগীজ ও পরে ১৫৯৮ সালে ওলন্দাজ নাবিকেরা প্রথম এই পাখির কথা উল্লেখ করে। এরপর পাখির মাংস খেতে খেতে ১৬৬২ সালে শেষ পাখিটার দেখা মেলে। ডোডো আজ বিলুপ্ত, কোথাও নেই।
সেই সাথে আরেকটি ঘটনা ঘটে — টামবালাকক বা ডোডো গাছও বিলুপ্তির পথে এগোয়। কারণ আমাদের দেশে বট-পাকুড় গাছ যেমন পাখীর মলের সাথে বেরিয়ে আসা বীজের মাধ্যমে জন্মায়, টামবালাকক গাছও ডোডো পাখীর মলের সাথে বেরিয়ে আসা বীজের মাধ্যমে জন্মাত। তাই ১৯৭০ এর দিকে এই গাছও প্রায় বিলুপ্ত হয়ে পড়লে চাষীরা বীজের বিস্তরণের বিশেষ ব্যবস্থা করে গাছটিকে রক্ষা করে।
ইংরেজীতে ব্যবহার (পূর্ব্বের যুগের): “It has often excited my wonder that we have never had, until to-day, for the benefit of Her Majesty’s navy, anything like a competent and copious account of the life and career of the renowned Admiral Blake. Little is really known about him in the navy, or out of it. In the navy (and I appeal to my old messmates in the Bustard), two obstacles interfere with his due reputation. One of these is the glory of our latest batch of heroes—the Nelsons and Collingwoods—which is too brilliant for it to be easy to see back through it. The other obstacle is, that the times are so very different. Benbow (who represents the period between Blake and Nelson) is as dead as the Dodo, and now enjoys a semi-facetious reputation, something like that of his pig-tail.” – Household Words (London) of Saturday 19th June 1852 [অনুমান করা হয়, লেখাটি মূলত ইংরেজ ঔপন্যাসিক চার্লস ডিকেন্সের, যিনি পত্রিকাটির সম্পাদনা করতেন এবং যতসম্ভব Bold Admiral Blake ছদ্মনামে এটি লিখেছিলেন।]
“The Whig is as dead as the Dodo— in contradistinction to which lamented bird, perchance, he will be known to future and almost incredulous ages as the Don’t-don’t! For, of late years, the only thing that any Whig ever did, was his country.” – John Russell, Prime Minister of the United Kingdom (1865-66), In the Matter of Promotion. Being a Letter to a Venerable Premier, published in Fun (London) of Saturday 3rd February 1866.
ইংরেজীতে ব্যবহার (বর্ত্তমান যুগের): “Letter-writing is as dead as the dodo.” Cambridge Dictionary, 2020
“Dead as a dodo: the fortuitous rise to fame of an extinction icon”- Samuel T. Turvey and Anthony S. Cheke, Historical Biology Vol. 20, No. 2, June 2008, 149–163
(the) black sheep (of the family)
অর্থ: কুলাঙ্গার; দলের, পরিবারের বা সমাজের কলঙ্কজনক ব্যক্তি
পেছনের কাহিনী: আদিযুগ থেকে মানুষ কেন ভেড়া পালন করত? অবশ্যই তার মাংস, দুধ এবং পশমের জন্য। যখন কোন ভেড়ার পশম ধবধবে সাদা হয়, তখন ভেড়ার মালিক সেই পশমের জন্য বেশ দাম পায়। কিন্তু কোন ভেড়ার পশম যদি কালো রঙের হয় তাহলে তার দাম খুব কমে যায় — কারণ সেই পশমকে রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় সাদা করে তারপর সেটিতে প্রয়োজনীয় রঙ দেওয়ার কাজটি বেশ ব্যয়বহুল হয়ে যায়। এছাড়া, মেষপালকেরা মনে করত যে, কালো রঙের ভেড়াটি পালের অন্য ভেড়াদের জন্য বিরক্তির ও ভীতির কারণ হয়। এসব কারণেই ‘ব্ল্যাক শিপ’ বলে দলচ্যুত কুলাঙ্গার অথবা দলের, পরিবারের বা সমাজের কলঙ্কজনক ব্যক্তিকে বোঝানো হয়।
অবশ্য, এমনও মনে করা হয় যে, ১৫৩৫ সালে ইংরেজীতে করা বাইবেলের একটি স্তবকের ভুল ব্যাখ্যা থেকে এই বাগধারাটি ইংরেজীতে ব্যাপকতা পায়। মাইলস কাভারডেল জার্মান থেকে ইংরেজীতে বাইবেল অনুবাদ করেছিলেন এবং সেখানে জেনেসিস বা আদিপুস্তকের ৩০:৩২ স্তবকটি ছিল এমন: “All blacke shepe amonge the lambes.” প্রকৃতপক্ষে, মূল বাইবেলে যেটি ঘটে সেটি এমন — মেষপালক জ্যাকব (ইয়াকুব নবী) যখনই ভেড়ার পালে ছোপওয়ালা, বাদামি বা কালো রঙের ভেড়া দেখতে পেতেন, তখনই সেই ভেড়াকে আলাদা করে রাখতেন যেন এটা প্রমাণ হয় যে তিনি কোন সাদা ভেড়া চুরি করেননি। এক্ষেত্রে কালো রঙটি তার চারিত্রিক দৃঢ়তার পরিচয় বহন করে। কিন্তু ইংরেজী বাগধারাতে অর্থটি ভিন্ন হয়ে যায়।
ইংরেজীতে ব্যবহার (পূর্ব্বের যুগের): ১৫৫০ সালের দিকে এক লোকগাথায় এমন উল্লেখ পাওয়া যায়: “The blacke shepe is a perylous beast”
“Till now I thought the prouerbe did but iest
Which said a blacke sheepe was a biting beast” — Thomas Bastard, 1598.
“We’re poor little lambs who’ve lost our way,
Baa! Baa! Baa!
We’re little black sheep who’ve gone astray,
Baa – aa – aa!” – Rudyard Kipling, Ballads and Barrack Room Ballads, ‘Gentleman Rankers’. 1892.
ইংরেজীতে ব্যবহার (বর্ত্তমান যুগের): “Christian Eriksen says his decision to run down his contract at Tottenham made him a “black sheep” at the Premier League club.” – AFP, London, The Daily Star, February 06, 2020.
“She had different interests, and we stupidly thought of her as a black sheep.” – Cambridge Dictionary, 2020.
(the) writing is on the wall
অর্থ: পতন, ধ্বংস বা ক্ষতি আসন্ন
পেছনের কাহিনী: পুরাতন বাইবেলের দানিয়েলের পুস্তকের (বুক অব দানিয়েল) ৫ম অধ্যায়ে দানিয়েল ও বেবিলনের রাজা বেলশাজারের এক কাহিনীর বর্ণনা আছে। দানিয়েল তখন নির্ব্বাসনে। রাজা বেলশাজার নিজের রাজকীয় ক্ষমতা দেখানোর জন্য এক রাতে বিশাল ভোজসভার আয়োজন করে সেখানে জেরুজালেমের ইহুদি মন্দিরের পাত্রকে পানপাত্র হিসেবে ব্যবহার করে ঈশ্বরের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন করে। সেই ভোজ চলার সময় একটি হাত শুন্যে ভেসে ভেসে দেয়ালে চারটি হিব্রু শব্দ লিখে: Mene, mene, tekel, upharsin যার সাধারণ অর্থ দাঁড়ায় এমন: ‘two minas, a shekel and two parts’। এখানে, মিনা হচ্ছে সেই সময়ের মুদ্রা, আর শেকেল হচ্ছে মিনার ৬০ ভাগের একভাগ। তবে, শব্দদুটির আবার রূপকার্থ ছিল। তাই পুরো কথাটির অর্থ হয় এমন, ‘numbered, weighed, divided’ বা ‘গোণা হয়েছে, মাপা হয়েছে (ও কম পাওয়া গেছে) এবং বিভক্ত করা হয়েছে’।
তবে এথেকে রাজা বিশেষ কোন অর্থ উদ্ধার করতে ব্যর্থ হয়ে শেষমেষ নির্ব্বাসনে থাকা দানিয়েলের সাহায্য নেয়। দানিয়েল বলেন যে, সেই লিখনের অর্থ হল: MENE MENE; God hath numbered thy kingdom, and finished it. TEKEL; Thou art weighed in the balances, and art found wanting. UPHARSIN; Thy kingdom is divided, and given to the Medes and Persians. রাজা বেলশাজার এরপর হত হয়েছিলেন এবং পারস্যরাজের কাছে ক্ষমতা চলে গিয়েছিল। তখন থেকে ‘দেয়ালে লেখার’ বিষয়টি আসন্ন পতন বা দুর্য্যোগ হিসেবে দেখা হয়ে আসছে। এভাবেই এই বাগধারাটির উৎপত্তি।
ইংরেজীতে ব্যবহার (পূর্ব্বের যুগের):
“A baited Banker thus desponds,
From his own Hand foresees his Fall;
They have his Soul who have his Bonds;
‘Tis like the Writing on the Wall.” — Jonathan Swift, Miscellaneous works, 1720.
“The writing on the wall is clear: if Man behaves like an animal and allows his population to increase while each nation steadily increases the complexity and range of its environment, nature will take her course and the Law of the Jungle will prevail.” — J. Gray, ‘The Proper Study of Mankind is Man’, The Listener, September 3, 1959.
ইংরেজীতে ব্যবহার (বর্ত্তমান যুগের): “After two defeats, the writing is on the wall for the manager.” – Collins Dictionary, 2020.
“He failed to read the writing on the wall from defeats to Brazil and Austria and a shaky win over Saudi Arabia in a pre-tournament friendly; and adjust the strategy.” – Syed Ashfaqul Haque, ‘Writing was on the wall’, The Daily Star, June 29, 2018.
(a) white elephant
অর্থ: শ্বেতহস্তী, অযাচিত ব্যয়বহুল বস্তু, অতি ব্যয়বহুল অনাহূত বস্তু
পেছনের কাহিনী: প্রাচীন শ্যামদেশের রাজা খুব চালাক ও প্রতিশোধপরায়ণ ছিলেন। যখন রাজসভার কোন সভাসদ রাজাকে বিপদে ফেলার ফন্দি করতেন কিংবা রাজাকে কোনভাবে হেয় করতেন, তখন রাজা সেই সভাসদকে একটি সাদা হাতি উপহার দিতেন। আর একথা তো সর্ব্বজনবিদিত যে, কালো হাতির দেশে সাদা হাতি ছিল দুর্লভ ও পুজ্য প্রাণি। সেই শ্বেতহস্তীর দেখাশোনা করতে সেই সভাসদের জীবন ওষ্ঠাগত হত, সব পুঁজি আর সময় হাতির পিছনে ব্যয় করতে হত। একসময় সেই সভাসদ সর্ব্বস্বান্ত হতেন। তখন থেকে শ্বেতহস্তী এমন কিছুকে বোঝায় যার ব্যয়ভারে মালিক সর্ব্বস্বান্ত হয়ে পড়ে। এটি হতে পারে কোন রাষ্ট্রীয় প্রকল্প, ব্যক্তিগত পরিকল্পনা ইত্যাদি।
তবে, বর্ত্তমানে কানাডার ওকাড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর রস বুলেনের মত হল, বাস্তবে শ্যামদেশে অর্থাৎ থাইলান্ড বা এর আশেপাশের দেশের কোন রাজা এমন কোন ঘটনা ঘটাননি। এটি নিছক একটি প্রচলিত গল্প।
ইংরেজীতে ব্যবহার (পূর্ব্বের যুগের): “His services are like so many white elephants, of which nobody can make use, and yet that drain one’s gratitude, if indeed one does not feel bankrupt.” — G. E. Jewbury’s Letters, 1892.
“When we got rid of the white elephant of a house in Lexham Gardens my mother took her six sons, three daughters, a cook, a parlour-maid, and a housemaid to a house in Colinette Road, Putney. — Leonard Woolf, Sowing, 1960.
ইংরেজীতে ব্যবহার (বর্ত্তমান যুগের): “The world’s longest sea bridge connecting Hong Kong, Macau and mainland China opens to traffic today, with excited travellers making their first journeys along what has been described as a politically-driven and costly white elephant.” – AFP Relaxnews, 1st journeys on world’s longest sea-bridge, The Daily Star, October 24, 2018.
“The seawall, conceived in the early 1990s to reclaim land for agriculture, is the country’s most famous white elephant.” — ‘South Korea’s government wants greener energy. Who will pay for it?,’ The Economist, 15 June 2019.
Adam’s apple
অর্থ: কণ্ঠমণি, মানুষের গলার সম্মুখভাগের উঁচু অংশ যেটি কথা বলা বা খাওয়ার সময় উঁচুনীচু হয়
পেছনের কাহিনী: অ্যাডাম’স অ্যাপল বা কণ্ঠমণি আসলে আমাদের স্বরযন্ত্রের একটি থায়রয়েড তরুণাস্থি। এটি গলার সামনের অংশে একটি দলার মত উঁচু দেখায়। পুরুষদের ক্ষেত্রেই এটি বেশি স্পষ্ট দেখা যায় এবং কৈশোরের সময় এটির বহির্গঠন দৃষ্টিগোচর হয়। এটি থাকার শারীরবিদ্যক কারণ হল স্বরযন্ত্রকে বাইরের আঘাত থেকে রক্ষা করা; এছাড়া আরও কিছু শারীরবিদ্যক কারণ থাকতে পারে।
বাইবেলের কাহিনীতে স্বর্গরাজ্য বা এডেন উদ্যানে আদিপুরুষ অ্যাডামের আপেল খাওয়ার বিবরণ পাওয়া যায়। নিষিদ্ধ বৃক্ষের ফলটি খাওয়ার সময় তাঁর গলার মাঝপথে একটি টুকরো আটকে যায় বলে মনে করা হয়। সে থেকেই মানুষের কণ্ঠমণির সৃষ্টি হয় বলে ধারণা করা হয়।
অবশ্য এ বিষয়ে আরেকটি মত আছে। ভাষাতাত্ত্বিক আলেক্জান্ডার গোড-এর মতে, হিব্রু ‘tappuach ha adam’ বা ‘পুরুষের স্ফীতি’ লাতিনে হয়ে যায় ‘pomum Adami’ বা অ্যাডামের আপেল। এমন ভুল অনুবাদেরও কারণ আছে — হিব্রু ভাষায় নামবাচক শব্দ ‘Adam’ অর্থ ‘পুরুষ মানুষ’ এবং ‘tappuach’ বা ‘স্ফীতি’ শব্দটির কাছাকাছি উচ্চারণের শব্দ হল ‘tafuach’ যার অর্থ ‘আপেল’। এভাবে হিব্রু থেকে লাতিনে অনুবাদ ও সেখান থেকে ইংরেজীতে শব্দের অুনবাদ-জনিত বিভ্রাটে এটি হয়ে যায় অ্যাডাম’স অ্যাপল।
ইংরেজীতে ব্যবহার (পূর্ব্বের যুগের): “Having the noose adjusted and secured by tightening above his Adam’s apple.” – Daily Telegraph, 1865.
ইংরেজীতে ব্যবহার (বর্ত্তমান যুগের): “An Adam’s apple is an anatomical structure which appears primarily in males.” – Mary McMahon, What is an Adam’s Apple? Weisegeek, August 05, 2020.
হাসিনুল ইসলাম
বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের একজন সদস্য। বর্ত্তমানে সহকারী অধ্যাপক (ইংরেজী) হিসেবে বাংলাদেশের সমতলের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর লিঙ্গুয়া ফ্রাঙ্কা ‘সাদরি’ বিষয়ে ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজে এমফিল পর্য্যায়ে গবেষণায় সম্পৃক্ত। শিক্ষার্থীদের জন্য আগ্রহোদ্দীপক পাঠ্য প্রস্তুত ও সাহিত্য-দর্শন-বিজ্ঞান-প্রযুক্তি বিষয়ক অনুবাদের প্রতি আকর্ষণ থেকে লেখালেখি করেন।