এনিমেটেড ফাইল
চরিত্রের পতন হলেই কি খড়ম পায়ে দাঁড়িয়ে থাকেন?
সারসত্যি বলুন এইবার!
জমে থাকা স্মৃতি হোঁচট খাচ্ছে মনের ভেতর
দীর্ঘ রাস্তায় অবাধ্য বাদর হবেন না প্লিজ!
যদি চান ঈশ্বরের ঠিকানা বলে দেব।
ফিল্মটি দেখুন…
সমুদ্র শুষে নেয়ার মতই শুষে নিচ্ছি নিজের রক্ত!
পাহাড়ী স্টেশনে পৌঁছাব ভেবেও
খুঁজে পেলাম না সেই দিঘীর দৃশ্য
অন্য রূপ তারপর নিজস্ব সত্তার উন্মাদনা
বহুকাল আগে আটকে গেছে জীবন দৃষ্টিতে
দূরের ছেড়া পালকে জন্ম নেয়া সম্পর্ক
মেপে দেখলেই ছোঁয়াচে হয়ে যায়
আর অনবরত বাড়িয়ে দেয় শঙখরঙা ক্ষত।
মিথ্যে কথা
শীত বা বৃষ্টি বাড়লে নিজেকে বিছিন্ন লাগে
তখন পড়ে থাকা চেয়ারের পাশে দেখি
স্যাঁতসেঁতে হয়ে যাচ্ছে আমাদের পৃথিবী
যে মুখের জন্য তিন জন্ম ছুটে আসা
সে তো ছায়ার সময় বেড়ে ওঠার আগেই ফুরিয়ে যাচ্ছে
আর শব্দরথে প্রিন্ট করছে দৈনিক অনুভূতির নতুন জানালা
কিন্তু কোন ঠিকানাতেই দরজা খোলা রাখেনি
যাপিত বাস্তবতার স্বাভাবিক নিয়মগুলো
এখন আমার শরীরে যাবতীয় শীতবস্ত্র
দিন যাবার সাথে সাথে তার খোলস বাড়তে থাকবে।
ভ্রমের তৃতীয় পর্ব্ব
প্রবলভাবে বেঁচে থাকলে মৃত্যুর ফিলসফি কী বলতে পারে?
কেউ যেন মনের পেছনে নিঃশ্বাস ফেলছে!
প্রাক্তন নাবিকের পর কেউ আসেনি
জলাবদ্ধতার জবাব চাইতে
কিংবা কদম ফুলের ভেতর অন্য অতীত লুকিয়ে রাখতে
এরপরেও…
না চাওয়ার সেই চাওয়াতে আটকে আছে জীবন
অসময়ে পাৎলা অন্ধকার আসতেই
বর্ষার ক্যালেন্ডারে দুপুর বিকেল গলে গেল
মেরুন সেসব ভাষা কেবল আয়না ফেলে রেখেছে শরীরে
যত দূরে যাই নিজেকে গভীর খাদ মনে হতে থাকে
অর্কিড
কখনো অসম্ভব বিষন্ন বিকেল কাটিয়ে
হুড়মুড়িয়ে চলে আসে নাবালক সন্ধ্যা
সেই সঙ্গে নিজের ছায়াও কাঁপতে থাকে
খসে পড়া নক্ষত্রের মত
মেলে ধরা জ্যামিতির ভাষা তখন বুঝতে পারি না
হিম হয়ে নির্ভরতার বৃত্ত আঁকতে থাকি
তখন পরিধির অভিজ্ঞতা বলে ওঠে,
স্পানিশ লেটার পড়তে পড়তে ঘুমোতে যাওয়া মন বোঝেনি
অর্দ্ধসমাপ্ত চোখে মোলায়েম কিছু সবুজ থাকে
তারা ফিরিয়ে দেয় যাবতীয় প্রকৃতির ইতিহাস।
অন্তর চোখে ভুল
মন থেকে একটু দূরে
সুদূর মহানগরীতে চলছে তুমুল আন্দোলন
সেখানে নেতৃত্ব দিচ্ছে পোষমানা রক্তগুলো।
একি আমার শরীর?
নাকি জল ভরাট হওয়া কোন ভাগ্যের উত্থান?
নিজস্ব উপত্যকায় খামোখা ভুলে যাওয়া শৈশব
মৃদু বাতাসে আচঁড়ে পড়ছে শ্বাস নালীতে
তাদের নীল মখমলের মত মুখ দেখে
আতপ চালের গুড়ো খেতে দিয়েছিলাম
তারপর থেকেই
ব্যবধান সামান্য এক টুকরো পাথর
হতে হতে বিশাল দেয়াল হয়ে গেছে!
প্রত্যয়ন পত্র
একটি দীর্ঘ গল্পের টাইমটেবিল ভুয়া করে
মুছে গেছি নতুন ডাস্টারের সাথে
ইতিহাস ঘোলাটে করেছে জোয়ারের জল
তবু ক্ষত থেকে এখনো ভারী ক্ষত
বয়ে নিয়ে যাচ্ছে ছাইমাখা অন্ধকার
চশমার কাঁচের আড়ালে যার বসে থাকা
সামান্য মরা মানুষের মত তার অভিনয়
ভুল বলিনি চরিত্রটি আমার কল্পিত
সংশোধন করে দিতে চাইলেই
সে আমাকে মুনিয়া পাখীর ছবি দেখায়।
ত্রিমাত্রিক ভবিষ্যৎ
খালাসী হতে গিয়েও যেহেতু পারিনি
তাহলে
নিখুঁত আয়োজনে সমস্ত পৃথিবীটা গুড়িয়ে যাক!
সেই দুনিয়া যখন ভেঙে গেল
তখন আমি বুকের ভেতর ঘন জঙ্গল ছিড়ে ছুটে যাচ্ছি
এক রেললাইন খুঁজতে গিয়ে মরুভূমিতে গুণেছি অনেক রাত
তবুও রাক্ষুসে শূন্যতার উপর ঝুলে পাইনি বিষন্নতার ম্যাপ
তাই আদিম হিংসা নিয়ে বন্দোবস্ত করেছি আসন্ন ফাঁসির দড়ী।
জ্যাকেটে বৃষ্টি
কী অভিজ্ঞতায় সে এখনো কাঁদে?
প্রতিবাদ পুষে রাখতে রাখতে
আফ্রিকার ম্যাপের মত দুমড়ে গেছে যার মুখ
তাকে এডিট না করেও এই ছোট কাহিনীতে ফিরিয়ে আনা যায়
আক্ষরিক অনুবাদ পেলেই না হয়
পাঠিয়ে দিও নিওলিথিক দরজায়
জানতে চাইব না বাহারি মোড়কে কার বিশ্বাস লুকিয়েছিলে
কিংবা ভৌগোলিক গভীরতায় তাদের কতটুক অধিকার আছে।
জোনাকির স্রোত
উড়ো চিঠির ব্যাকরণ নিয়ে ভাবিনি কখনো
কিন্তু প্রেরক কোন শব্দ না করেই
তার মনকে সারস করেছে জানার পর
বরফের মত জমে উঠেছে বোধ
রাতমাখা শূন্যতা হাতে নিয়েই তৈরি করেছি
অন্তহীন রাস্তার প্ল্যাটফর্ম
কোন যুদ্ধক্ষেত্রে যাইনি
তবু জব্দ হচ্ছি সামরিক আলোতে
আসলে যেদিন সুড়ঙ্গ খুঁড়ে তুলে এনেছিলাম
রণত্যাগী বালকের আত্মা
সেদিন থেকেই উপাখ্যানে বন্দী হয়ে খুঁজেছি উপত্যকার জলজ শরত।
যে ভাবনায় কোন বর্ত্তমান নেই
এক যাত্রায় পৃথক ফল পেলেও
অতীতকে নিয়ে হাঁটা যায় না
হাজার হাজার মাইল দূরের কষ্ট
ডেকে আনাতে চোখের পাতায় কিছু নক্ষত্র জ্বলে উঠেছে
অদ্ভুত মাদকতায় নিজেকে এক রাশ নীল পাখী ভাবতেই
জানতে পেলাম,
জমানো স্মৃতিগুলো অপশনাল উত্তর পায়নি
তাই অজস্র ঘোলাটে ঢেউ ভেঙে পড়ছে ভেতরে পারমাণবিক ব্যাথার মত তারা মন্ত্রহীন
স্বাভাবিক স্বর গ্রেফতার করে ছুড়ে দেয়
অবিশ্বাসের সঙ্গীত।
.
.
.
জবা রায়
জন্মস্থান: ধোবাউড়া, মৈমনসিংহ।
অনার্স, চতুর্থ বর্ষ, চারুকলা বিভাগ, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, ত্রিশাল, মৈমনসিংহ।