ঘর
সবই আছে,
বিশাল একটি উঠোন
যেন রাদারফোর্ডের কোয়ান্টাম জগৎ।
লোহার জানালার ওপার
একজোড়া নিওলিথিক চোখ—
ভীষণ বিষণ্ণ,
পাঞ্জাবীর পকেটে ঝুলে আছে
একটা মানচিত্র—
ভীষণ ক্ষুধার্ত্ত,
বাতাসে নুইয়ে পড়া
জিকিরে মশগুল সুপারী বৃক্ষের একান্নবর্ত্তী পরিবার।
আকাশ ছুঁই ছুঁই মিডিয়ামুখী
অট্রালিকা বাড়ী
ভীষণ ঔদ্ধত্য
এবং
গুচ্ছ গুচ্ছ
প্রোলেতেরিয়ান ঘাসের জীবন,
ভীষণ ব্যাথিত।
জলের আবেগে শেষ আয়ু নিয়ে জেগে থাকা
একটা অর্দ্ধ মৃত নদী—
সবই আছে।
তবুও কী যেন নেই।
হাঁটুর নীচে অন্ধকার নিয়ে
মস্তিষ্কে অভিবাসনের নিরীহ স্বপ্ন
বুনে এক ক্লান্ত যাযাবর।
সবুজের জ্যামিতি ভেঙে
বিশাল এক যন্ত্র পাখায় ভর করে
বিষণ্ণ ধূলো উড়িয়ে হেঁটে যায়
বালিহাঁস,
ইতিহাসের আরেকটি পাতায়।
তবুও শৈশবের সেই উঠোন পালানো রোদের গন্ধ স্মৃতি ডানায় মেখে উড়ে যায়
এক নিঃসঙ্গ বিহঙ্গ।
সভ্যতা হাঁটে উল্টো পায়ে।
জীবন কি তাহলে একটা
সাপ লুডুর খেলা?
সোপান বেয়ে ওপরে পৌঁছানো
আর সাপের ছোবলে ক্রমাগত নীচে নামা
এই হল নিয়তি
মানুষের।
আমাদের সত্তার ভেতর ঈশ্বর পুতে রেখেছে
এক ভীষণ অসুখের বীজ?
মানুষ তো আর কিছুই না।
জল ও মৃত্তিকার সঙ্গমে
জন্ম নেওয়া এক পৌরাণিক পাখী।
নিরন্তর খুঁজে ফিরে একটা ঘর।
.
.
মাহবুবুল ইসলাম
জন্ম: ১৫ সেপ্টেম্বর ১৯৮১। পৈতৃক নিবাস— মাধবপুর, হবিগঞ্জ। প্রকাশিত গ্রন্থ: জল ও জলোচ্ছ্বাস (কবিতা) (প্রকাশ সাল— ২০১৯, প্রকাশক— চয়ন)। শিশির-হরফ (কবিতা) (প্রকাশ সাল— ২০২০, প্রকাশক— চারবাক)।