বরই পাতার দেশ
অসুস্থ ভোরের মুখে দাঁড়িয়ে
ভাবি, কার কাছে যাব!
বরই পাতার দেশ, উপ-দেশ
এ কেমন ঝর্ণাধারা?জ্বরের মূর্চ্ছনা! ভোর থেকে রাত৷
কবরভূমীতে দাঁড়িয়ে
থাকে, অন্ধকার ফলানো
চুপচাপ গাছ৷মরহুম পাতাগুলি শুধু
আটকে থাকে জীবনের পরে৷
সহজ বেদনা নিয়ে
অর্ঘ্যডালা জাগে
জ্বরের মৌনতা ভেদ করে৷
বিবাহবার্ষিকী
বিবাহবার্ষিকীতে নিষ্পত্র ছিলাম৷ অঘোষিত
ভঙ্গিতে নেমে এল প্রেম, যেভাবে সন্ধ্যে নামে
ব্রহ্মপুত্র তীরে৷ সম্মোহনী সংগীতে জাগে
কুয়াশার সমূহ কম্পন৷ নিয়তিবৃক্ষ ছিঁড়ে যায়৷
চাঁদ নেমে আসে জলের মোহনা আর ফসলের ক্ষেতে৷ নিউট্রাল বিউগলে জাগে দিনের সকল
রাত৷ জগতে সকলই রাজনীতি আর
আর্থিক আলোচনা৷
তবুও তখন দুমদাম লাল, আমার নিটোল বুকে৷
ফুলকুমার
মানুষের প্রতি নিষ্ফল প্রণয়যান
এড়িয়ে চলেছি আমি৷ দেখেছি
সেসব জীবনের ব্যর্থ অভিযান৷মৃত্যুকে নেমন্তন্ন করে
দরজা আটকে বসে আছি৷চারিদিকে শুধু মানুষ৷
বাড়ীর মোড়ে মানুষ
বাজার ভর্ত্তী মানুষ৷
গোরস্থানে মানুষ আর
হাসপাতালগুলো ফাঁকা৷জ্বরের পাশ দিয়ে ফুলকুমার…
ভরা পূর্ণিমায় বাড়িতে থাকতে নেই৷
অপার আকাশ
গণিত থেকে সূত্র তুলে নাও৷
যেভাবে জল থেকে
তুলে নাও জলের টুকরো জল৷দূর থেকে ধেয়ে আসা
কুকুরের ডাক, জানে মিলিয়ে দিতে
কাছের কান্না
গাছের ব্যাকুলতা৷
রোজার রাতে তোমার ঘুম আসে না৷
অহেতুক পায়চারী কর৷ কেন,
তোমার ঘুম আসে না!
উঠোনে বেরিয়ে দেখ
অপার আকাশ৷ছাদের বাগানে দেখ
অহেতুক পাখী৷ ঘুমিয়ে পড়েছে যে,
শব্দ কর না তার নিকটবর্ত্তী দেশে৷
চোখের নীচে চাঁদ
পথ ভুলে যাই হলুদ বাতী দেখে৷
রাত কি ফুরিয়ে যায়নি তবে!শহর ঘুরে এলাম
কারও সাথে দেখা হয়নি৷
যেমন হয় না তোমার সাথে
বহুদিন৷কার পাশে ঘুমিয়েছি
মনে থাকে না৷
দাড়ি বড় হয়ে যাচ্ছে৷
সামান্য বাতাশেই বুক কেঁপে ওঠে৷রাতের চোখজুড়ে
হলুদ আলোর ঝড়৷জাগছে চোখের নীচে চাঁদ
আর ক্ষুধা বেড়ে যাচ্ছে৷
সাম্য রাইয়ান।
জন্ম নব্বইয়ের দশকে, কুড়িগ্রামে।
প্রকাশিত কবিতাপুস্তিকা: ‘বিগত রাইফেলের প্রতি সমবেদনা’, ‘মার্কস যদি জানতেন’।
কবিতাগ্রন্থ: ‘চোখের ভেতরে হামিং বার্ড’।
পোয়েটিক ফিকশন: ‘হলুদ পাহাড়’।
মুক্তগদ্য: লোকাল ট্রেনের জার্নাল।
সম্পাদিত প্রবন্ধ: উৎপলকুমার বসু।
প্রবন্ধ: ‘সুবিমল মিশ্র প্রসঙ্গে কতিপয় নোট’। ২০০৬ থেকে সম্পাদনা করছেন লিটলম্যাগ ‘বিন্দু’।
{বরই পাতার দেশ, বিবাহবার্ষিকী, ফুলকুমার ও অন্যান্য কবিতা [বঙ্গীয় শব্দকোষ (শ্রী হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়), বঙ্গীয় শব্দার্থকোষ, ক্রিয়াভিত্তিক-বর্ণভিত্তিক শব্দার্থ বিধি (কলিম খান-রবি চক্রবর্ত্তী) ও প্রকৃতিপুরুষভাষাদর্শন অনুসৃত] চারবাক-এর বানান রীতিতে প্রকাশিত হল।
— সম্পাদকীয়}