পড়ছি— জ্যাঁ পল সার্ত্র, আটঘাট, লজ্জাবতী লতা, সন্ধ্যা, রুচি ও অন্যান্য কবিতা || আরণ্যক টিটো

0

আটঘাট

না বাঁধিলে আট ঘাট
বাজে না তবলা… ঠিকঠাক… ওঠে না গো সুর!
আজি এ প্রভাতী রাগে
মনে
বাজে গো ব্যঞ্জনা…
তাই
বাঁধিব তোমাকে
আট ঘাটে… তবলায়… সুরেলা রাঁধায়…
— জানে রাধা!

খেয়ে
নানান ঘাটের জল
চল
বেঁধে আটঘাট
নেমে পড়ি… মাঠে… পাঠে… ঘাটের ঘটনা…
দেখে নিই
গড়ায় কোথায় কোথাকার জল…
সুরেলা গুঞ্জনে…
নিয়ে
বাঁধার রটনা…

‘সা রে গা মা পা ধা নি সা’-য়
জাকির হোসেন
আজি এ গোলকধামে বাজায় তবলা…

জীবন,
যাও কোথায়? ধিনাকি ধিনাকি…
বাঁধনহারা এ মন বাজে গো বাঁধনে… আট ঘাটে…

পড়ছি— জ্যাঁ পল সার্ত্র

চলছে…
প্রগতি এক্সপ্রেস!
কালের যাত্রায়
দেখি পথে পথে,
ফুল পাখী বনানী পাহাড় নদী সাগর মানুষ
ও অন্যান্য…
সব
আমারই রূপ! আহা, কী সুন্দর!
ফড়িঙ
ধরছে কীট।
পাখীটা
উড়াল দিল ফড়িঙের দিকে।
ব্যাঙ
ধরছে পতঙ্গ …
সাপটা
ধরছে ব্যাঙ …
হরিণ
খাচ্ছে ঘাস …
বাঘটা
ছুঁটছে হরিনের দিকে …
জাগছে… ঝরছে… মিলছে মরমে… গর্ভে…
রূপের বিরতি…
রূপের যাত্রায়… আরেক রূপকে…
যাত্রাপথে খাই
কুড়কুড়ে মুড়মুড়ে বাদামজীবন,
পড়ছি
জ্যা পল সার্ত্র…

আহা, কী চমৎকারা! …

লজ্জাবতী লতা

লজ্জাবতী লতা।
ব্যালকনীর গ্রীলটাকে পেঁচিয়ে রেখেছে
ফুলেল সৌন্দর্য্যে! …
একটুও লজ্জা পাচ্ছে না! …
কেবলই
আলতো ছোঁয়ায় বাধ, ছুঁলেই নুইয়ে পড়ে, থ-র-থ-র! …
লজ্জাবতী লতা
দুলছে বাতাসে,
কাঁ-পা-কাঁ-পা শরীরের সুষমায়
ভাঙে আড়মোড়া,
সবুজ শরীরে মাখে ভোরের রোদ্দুর
এ-ক-টু-ও
লজ্জা পাচ্ছে না! …
কেবলই
আলতো ছোঁয়ায় বাধ, ছুঁলেই নুইয়ে পড়ে, থ-র-থ-র! …

ভাবখানা এমন—
যেন
সন্মুখে পড়েছে, আহা রে মরণ! …………..

সন্ধ্যা
………………………………………………………………………
সন্ধ্যা—
গোপন কথার মালা!
প্রতিদিন সন্ধ্যা নেমে এলে বিকেলের হাত ধরে,
সন্ধ্যার সান্নিধ্যে যাই প্রকৃতির কুঞ্জে,
চোখে চোখ রেখে পাঠ করি সন্ধ্যাভাষা…
আলগোছে কাছে টানি, আসন্ন রাত্রির কোলে,
বাতাসের ফুৎকারে, তৃষিত লজ্জায় নিভে যায় সন্ধ্যার প্রদীপ,
জ্বলে ওঠে সন্ধ্যা,
সন্ধ্যার কোমল মনে মন ঘষে ঘষে তুলে ফেলি
সারাটি দিনের ক্লান্তি…
সন্ধ্যা— সন্ধ্যার হৃদয়ে একটি চিত্রিত সন্ধ্যা…

যেখানেই যাই দেখি সন্ধ্যা,
অগোচরে হানা দেয় গোপন কথার মালা, জেগে ওঠে মাতলামি…

রুচি

একদা/ রসের সমঝদার ছিলেন/
ভালবাসতেন
সবুজে সবুজে/ পাতায় পাতায়/ ফুল ও ফলে দোলায়িত/ ডালপালা/…
ইদানিং/
কেমন জানি/ শুষ্কং কাষ্ঠং হয়ে উঠছেন/…
এই/
কাষ্ঠতত্ত্ব/ লাঠিতন্ত্র/
আমার একদম রুচে না/…
ঠিক ততটাই রুচে/
কাষ্টতত্ত্বে/
যতটাই ভারবহ/ ফুল ও ফলের সমারোহ/…

বহুগামী বাঞ্চা
……
এই যে
আমাদের সাবজেক্টহীন মেইলিং,
তার মাঝে রয়ে যায় অবৈষয়িকতার ঘোরতর অভিযোগমালা—
বিষয় থেকে বিষয়ে ঢুকে পড়ার বহুগামী বাঞ্চা,
যাহা কিনা
আইনত দন্ডনীয়! …
এতে নাকি ভেঙ্গে পড়ে দন্ড— বৈষয়িক মাপকাঠী! …
তবুও আমরা
বুড়ো আঙুল দেখিয়ে
হরদম চাড়িয়ে যাচ্ছি, বিষয় থেকে বিষয়ে ঢুকে পড়ার বহুগামী বাঞ্চা …

এবং বলছি,
জীবন, অজস্র সম্পর্কের পরশে… পাথরে… গড়িয়ে গড়িয়ে যাও বহুগামী পথে …

 

 

 

 

10639619_1050326421685388_1336824167648158240_n 1আরণ্যক টিটো
জন্ম : জুন, ০৬, ১৯৭৭।
জন্মস্থান : উত্তর গোবীন্দর খীল, হাঁদু চৌধুরী বাড়ী, পটিয়া, চট্টগ্রাম।
(শৈশব কৈশোর ও তারুণ্যের সময়যাপন)
বেড়ে ওঠা (পূর্ব্ব বালিয়াদী, মীরশ্বরাই, চট্টগ্রাম) নানার বাড়ীতে…।
প্রকাশিত কবিতার বই : ফুলেরা পোষাক পরে না (সাল: ২০১৮, প্রকাশক : মনফকিরা, কলিকেতা)।
সম্পাদক : চারবাক।

শেয়ার করুন

মন্তব্য

টি মন্তব্য করা হয়েছে

Leave A Reply

শেয়ার