হাওয়া সেলাইয়ের গান
১
উৎসর্গলিপিতে ফুটে আছে
শুধু একজোড়া ঠোঁট
— কার নাম লিখলে পরে এমন হয়?
একটি শোক সংবাদ …..
একটি শোক সংবাদ …..
চতুষ্কোণ হতে ভেসে আসছে এই একটি বাক্য
— কার কথা মনে করে আমি আজ শোকগাথা লিখি?
তুমুল বরফের কাছ থেকে মৌনতা শিখে বসে আছি
সমস্ত রন্ধ্র থেকেই
বেরিয়ে আসছে শাদা শাদা ধূঁয়া
— এই ব্যথাটুকু ফুঁড়ে আমরা কার মুখ কে দেখি?
হাওয়া সেলাইয়ের গান
২
নশ্বরতা একটি পাখীর ডিম।*
বন্ধুদের হাত এখন পাহাড়ের ওপর
পা লটকে আছে আমার উঠোনে
বন্ধুদের বাদবাকী কোনো শরীর নেই।*
সকালটা জবাই হয়েছে মাত্র
এই দেখে সামনে সামনে দৌড়াতে
শুরু করেছে দুপুর ও বিকেল।*
সম্পূর্ণ রাত এক কোলতারের ড্রাম
ঠান্ডা আগুনে গলছে তো গলছে।*
আমার কবরে চেয়ে দেখি আমি নাই।
বিসমিল্লাহ ভাতঘরে বসে সাতসকালে
গরম গরম আলুভর্ত্তা দিয়ে পান্তাভাত খাচ্ছি।*
আস্ত শরীরটা পুঁজ হয়ে আছে
শূষে নিয়েছে টিস্যুপেপার
বাকীটা সময় ঘুমিয়ে থাকব ডাস্টবিনে।
এক অদৃশ্য ছায়া
তিন যুগ হেঁটে এসেছি অজস্র নদী। পায়ে যে কোন কাদা লাগেনি, এমনকি ভিজেনি শরীরের কোন পশম— এসবের রহস্য শুধু এক অদৃশ্য ছায়া।
এখন যতোই সামনে এগুতে চাই, আমাকে ধাক্কা দিয়ে মটিতে ফেলে হাসাহাসি করে সারি সারি শূণ্যতার বুদবুদ। পর্ব্বতের মত খাড়া হয়ে থাকে সম্মুখে— এ কোন লীলা?
উপত্যকার দিকে যদি বাড়াই দু’পা, চরকীর মত ঘোরে দিন; লাফিয়ে শিখর পাড়ি দেওয়ার কথা ভাবতে গেলেই অক্টোপাসের মত ঘিরে ধরে আঁধারের রাত।
তবু বেঁচে যাই ঢের প্রতিবার
কোন কোন অদৃশ্য ছায়া সাক্ষাৎ কায়ার অধিক।
ঢলে পড়বার আগে
এই ভীড় নিরুত্তাপ
এসো, দূরে সরে যাই
হাওয়া ঠেলে শূন্যে দাঁড়াই।
কিছুর পিছুটি নিও না কখনো
কিছু এসে পিছু নিক আমাদের।
প্রাণের নিকুচি করি
জড় হয়ে বড় হতে চাই।
আলোতেই মেখে নাও গাঢ় অন্ধকার
এই মহাকাল এক নিপুণ বেলুন
মুখ বেঁধে উঠোনে উড়িয়ে দাও।
ক্রমে সয়ে গেছে আমাদের
তোমাদের চারু কথার খঞ্জর
অতএব, দূরে সরে যাও
অঢেল নিশ্চিহ্ন হয়ে যাও।
আহা! ঢলে পড়বার আগে
আরও একটিবার
নিজ ঠোঁটে নিজে চুমু খেতে চাই।
মাসুদ শায়েরী
জন্ম: ০১, ০৩, ১৯৭৮ খ্রীষ্টাব্দ। জন্মস্থান: পশ্চিম কাটাছড়া, মীরসরাই, চট্টগ্রাম।