অভাবার্থক, ডিকোডিং, মেপে দেখুন ঠিক নেই, পারলৌকিক গল্প ও আত্মা বিক্রেতার ঝুড়ী || জবা রায়

0

অভাবার্থক

কী করি বলুন তো?
জলজ্যান্ত আগ্নেয়গিরি ভেতরে নিয়ে ঘুরছি
পুড়তে পুড়তে ভাবছি
এ জীবন আগুন হতে হতে
কিছু দুঃখকে পাখী ভেবে ধরে রেখেছে
আর পোষা বেড়ালটি বেখেয়ালি হয়ে
বুনছে শুদ্ধ অনুভূতি/
যাই বলুন…
প্রতারক হচ্ছে দিনকাল সব
তাই লেকচার শীট হাতে বসে থাকা রাত
জেগে ওঠে অচেনা তাত্ত্বিকের চোখে
কী করব বুঝতে না পেরে
আবারো বেমানান সব গণিত খাতায়
মুখ গুঁজে বসে থাকি
ব্যবহারিক বাংলা শেখার ভান করে।

 

 

 

 

 

ডিকোডিং

রিমোট টিপে চ্যানেল পালটানোর মতই
পালটে নিয়েছি নিজের দৃষ্টি
জাঁদরেল চাওয়াগুলো নালিশ করেছে
হাইকোর্টে/
তাই ভাবনারা এলোমেলো চুলে খুঁজেছে
ছিমছাম দোতলা অসুখ
সেখানে শীত লাগা দোকানপাট
রাত জেগে তাকিয়ে থাকে মৌলিক রাস্তার দিকে/
সিকিউরিটি সিস্টেম না থাকায় তাদেরো
হারিয়ে ফেলি/
তখন প্রয়োজনের মগজ ভেঙে
কনফার্ম করি বিষন্ন স্বরের ত্রিমাত্রিক বাস্তবতা/

 

 

 

 

 

মেপে দেখুন ঠিক নেই

ভাবছি…
অতীত কিংবা ভবিষ্যৎ নিয়ে
এবার খুন হয়ে যাব!
সমস্ত পাতায় লিখে রাখব বর্ত্তমান
আর শিখে নেব দৃষ্টির প্রেক্ষাপট
যেনো সঠিক জানালায় উঁকি দিলে
দেখা যায় সময়ের কফিন হাতে
আমি দাঁড়িয়ে আছি আমারই লাশ নিয়ে

কিছুটা দূরত্ব, তারপর বাকি পথ ফেলে দিয়ে
এক মানবিক রাজ্যে শূন্য হয়েও
শূন্যতার মত আমরা তৈরি করছি নিজেদের

ভুলে যাবেন নিশ্চয়ই?
প্লিজ, বুক পকেটে টুকে রাখুন
সে বাড়ির ঠিকানা—
পৃথিবীর পথে, নিরুত্তর বেঁচে থাকা!

 

 

 

 

পারলৌকিক গল্প

ক্ষমতার যোগফলগুলো এক করে দেখলাম
ভুয়া রেজুলেশনে এই আত্মার ছবি তুলেছে কিছু ইতিহাস/
যাদের আমরা প্রাগৈতিহাস বলি
সেরকমই ডানাহীন কল্পনা উড়ছিল
ধোঁয়াটে আলোকবিন্দুর পথে।
আতঙ্কের মোচড় খেয়ে তারা আজো জেগে ওঠে/
কখনো স্পন্দনমুখর দেবদূত হয়ে ফোটায় সাদা পদ্ম/
এমন করেই সময় ঠিক করে তার আত্নগোপনের দাফনকাজ
নির্দ্বিধায় গুনে ফেলে অসংখ্য কবরের ভেতর একটি গ্রীন রোড/

 

 

 

 

আত্মা বিক্রেতার ঝুড়ী

কি মুশকিল সেই বেড়ে ওঠা অনুভূতি!
ছিঁড়ে ফেললে সবজীর মত টুকরো হয়
উন্মাদ আবেগ/
কোথায় যাব?
পোড়া বাতাসে নিজের নীলাভ হৃদয়ই হয়েছে ছিন্ন অলঙ্কার/
আর সময়ের বৃদ্ধত্ব গুনে গুনে
এ জন্মকে করেছে বহুমুখী নীরবতা
অন্তিম রহস্যের গণ্ডি পেরিয়ে
তার কেবল বয়সই বাড়ছে।
তবু্ও সে স্থানান্তরিত হয়
ফিরে তাকায় প্রিন্সটন হোটেলের আয়নায়
কাচ মুছে আবারো
ঘুমানো যাক এই ভেবে
কাটিয়ে দেয় অসংখ্য রাত …

 

 

 

 

 

 

 

 

জবা রায়
জন্মস্থান: ধোবাউড়া, মৈমনসিংহ।

প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা:
অনার্স, চতুর্থ বর্ষ, চারুকলা বিভাগ, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, ত্রিশাল, মৈমনসিংহ।

শেয়ার করুন

মন্তব্য

টি মন্তব্য করা হয়েছে

Leave A Reply

শেয়ার