কবিতায় ধ্বনিব্যঞ্জনা বলতে সেটাকেই বোঝায় যাতে আকর্ষণীয় ও প্রীতিপদ ধ্বনি এবং ভাবের সমাবেশ বিদ্যমান। এই জায়গায় একজন কবি তার কনোটেশন ও ডেনোটেশনের সকল সম্ভাবনাকে নিগূঢ়ভাবে কাজে লাগিয়ে থাকেন। একেকটি শব্দকে এমনভাবে প্রযুক্ত করেন যা পাঠকেচিত্তে কনোটেশন (জ্ঞাত্যর্থ) ও ডেনোটেশন (ব্যক্তার্থ)-কে প্রাসঙ্গিক ভাব ও অবলীল চেতনাকে জাগিয়ে তোলে। ভাষার ব্যবহার, নিগূঢ় ও ব্যঞ্জনময় কেবলমাত্র পাঠক নয়, যেন সমস্ত সৃষ্টিতে কনসোন্যান্সের গভীর ধাক্কা দিয়ে থাকে। কবিতায় এর প্রচলন ঠিক কবে ও কখন শুরু হয়েছিল তা নির্দ্দিষ্টভাবে বলা মুশকিল একটি ব্যাপার। তবে কন্সট্রাক্টিভিজম (Constructivism) তথা নির্ম্মাণবাদ খুব বেশিদিনের নয়। ১৯২০-এর দশকে কয়েকজন তরুণ রুশ কবি এই নির্ম্মাণবাদের প্রচার শুরু করেছিলেন। মূলত প্রযুক্তি দ্বারা অনুপ্রাণিত এসকল কবি বরাবরই ঐতিহ্যবিরোধী ছিলেন। তাঁদের মতে একটা কবিতা হবে একটা প্রযুক্তি বা প্রকৌশলের মত নির্ম্মাণ। সাহিত্যের তথাকথিত নিয়ম ভেঙে আর্টের ভিন্ন আর্ট তথা চিত্রকল্প, ধারণা ও দৃশ্যের সকল কন্ট্রাস্টকে উপেক্ষা করে প্রযুক্তিনির্ভর পৃথিবীর মত সাহিত্যজগতের পরিবর্ত্তন সাধিত করা আবশ্যক মনে করেছিলেন। কবিতায় যে ক্রনিকল ব্যাপারটি রয়েছে তাকে যদি কিছুটা সাইডে রেখে ক্লাইম্যাক্সের ভেতরে ‘ইজি টার্ন’ নিয়ে গ্যালিলিও সূত্র ঢোকানো যায় তবে হয়ে যেতে পারে পৃথিবীর ভেতর সৃষ্টির সৌরজগৎ আবিষ্কার! এই কাজটি নাজমুল হোসাইন তার “গুহামুখে ব্রহ্মাণ্ডসমেত” কাব্যগ্রন্থে আকর্ষণীয়ভাবে আবিষ্কার করেছেন। কবিতায় ‘গাণিতিক দর্শন’ ব্যাপারটি অদ্ভুত একটি ব্যাপার। যার মাধ্যমে এই বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের যাবতীয় কলা, দৃশ্য, ধ্বনি, সুর ও স্বর উপলব্ধি করা যায়। অনেকের কাছে এটা ড্রামাটিক মনোলগ মনে হতে পারে। তবে এটাই সত্য যে, মানুষ কৌতূহল ও আকর্ষণপ্রিয় প্রাণী। সেটাকে কেন্দ্র বানিয়ে কবি নাজমুল হোসাইন নীরব শ্রোতারূপে ভগ্নী ডরোথির মত তার দৃষ্টিভঙ্গির সকল চরিত্রকে নিজস্ব দর্শন দিয়ে আবিষ্কার করেছেন।
একটা বিষয় স্বীকার্য যে, কবিতায় সকল লাইন পাঠকচিত্তে আলোড়ন করতে পারে না, কবিতায় কিছু কিছু এনভয় (Envoy) এমনভাবে নাড়া দেয় যে, কবিতা সমস্ত মগজকে ছিন্নভিন্ন করে দিতে সক্ষম। এক্ষেত্রে নাজমুল হোসাইনের কবিতা আমার কাছে সবচেয়ে ভিন্ন ও স্বতন্ত্র মনে হয়েছে। তার একটিমাত্র কারণ তার কবিতায় ‘গাণিতিক দর্শন’।
ওজঃগুণসম্পন্ন, মহান, ভাবগম্ভীর, উপমা-উৎপ্রেক্ষা, অনুপ্রাসভূষিত, অলঙ্কারসমূহ ও বিষয়বস্তুর একেকটি ইঙ্গিত এপিক তথা মহাকাব্যকেও চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে প্রস্তুত। শিল্প ও সংস্কৃতির সূক্ষ্মসুতার ওপর যে কবিতা দাঁড়িয়ে আছে তার ওপর নাতিদীর্ঘ হয়ে টানটান করে এগিয়ে যাওয়া দুরূহ ব্যাপার। হোক সীমিত শব্দ অথবা বৃহত্তর, অভিজ্ঞতার নতুন নির্ম্মাণ চেতনার মার্গে সবচেয়ে প্রয়োজন হল গাণিতিক সাবলীল বিনির্ম্মান ও ইমেজের সমমাত্রিক উপস্থাপন। গুহামুখে ব্রহ্মাণ্ডসমেত পাঠের পর খুব উপলব্ধি করেছি, নাজমুল হোসাইন প্রচলিত কবিতা করার জন্য কখনো তাড়াহুড়ো করেননি। কবিতায় যে গাণিতিক দর্শন, এধরণের চিত্রকল্প বিরল। এ প্রসঙ্গে আমি বিনয় মজুমদারের কথা বলতে পারি, যিনি কখনো কবিতায় প্রচলিত উপমা ধারণ করেননি। তাঁর অন্তর্জগৎ ভালোভাবে উপলব্ধি করলে বোঝা যাবে, মানুষের বসবাস একান্ত সম্পন্ন হয়েছে প্রকৃত প্রস্তাবে কিছু ধ্বনি, ব্যঞ্জনা ও শূণ্যের অবলোকন থেকে। এ প্রসঙ্গটি আরো স্পষ্ট হওয়া যাক বিনয় মজুমদারের একটি কবিতা পাঠ করে:
x = 0
এবং
y = 0বা,
X = 0 = yবা,
X = y
শূণ্য 0 থেকে প্রাণী x ও y সৃষ্টি হল
এভাবে বিশ্ব সৃষ্টি শুরু হয়েছিল।।
হয়ে গেলো বিশ্ব সৃষ্টি। মানুষ সৃষ্টি হল। বিনয়ের সূত্র ধরে নাজমুল হোসাইন সৃষ্টি করলেন “মানুষ = ?”
পথ জানে মানুষ ৯০ ডিগ্রি এঙ্গেল ছাড়া দাঁড়াতে পারে না
সুতরাং সব মানুষই জ্যামিতিদাসডটের ওপর ডট বসালেই সংখ্যায় বাড়ে না
এইসব খেলা, জেনেও, মানুষ ভূমির ওপর দাঁড়ায়
শরীর দিয়ে লম্ব আঁকে, দৃষ্টি যার অতিভুজচোখ ² = শরীর ² + পথ ²
অর্থাৎ, মানুষের কল্পনা শরীরের চেয়েও দীর্ঘতর
পুরো একটা দর্শনের বোঝা চেপে গেছে মগজে। সৃষ্টি ও মানুষ মূলত স্পর্শের বাইরে! এই গাণিতিক দর্শন আমার মত দুর্ব্বল পাঠক দ্বারা আবিষ্কার করা অসম্ভব। ঠিক এই কারণে আফালাতুন বলেছিলেন, “যারা অংক বোঝে না, তাদের এই অ্যাকাদেমিতে আসার প্রয়োজন নেই”। নাজমুল হোসাইন মানুষ নামক যন্ত্রণটির ৯০ ডিগ্রী এঙ্গেল আবিষ্কার করার পর বলে দিলেন মানুষ জ্যামিতিদাস। নট এ্যালাউড ফুল, পাখি, চাঁদ কল্পনার যোগসমূহ। নাজমুল হোসাইন এই “মানুষ = ?” কবিতায় স্পষ্ট প্রমাণ করেছেন, মানুষের কল্পনাময় জগতের সাথে এসবের বিন্দুমাত্র যোগসূত্র গাঁথা নেই। আর এটা লিনিয়ান, মেন্ডালা, ডারউইনের মত স্পষ্ট ও ধ্রুব সত্য। ডটের ওপর ডট বসালেই সংখ্যা বাড়ে না, তা কেবল ডট-ই হয় অথবা ০ = ০। এখানে নাজমুলের চিন্তার জগত আদি, ব্যাপক ও বিস্তৃত। একটা বিষয়কে সরল বিস্ময়াভিভূত করার অসাধারণ ক্ষমতা তার। তিনি স্পষ্ট উপলব্ধি করেছেন বিনয় মজুমদারের মত, সবকিছু মূলত গণিতের সরলের ওপর দাঁড়িয়ে আছে। এখন যদি প্রশ্ন করা হয়, গণিত কি সরল? উত্তর ‘না’ হবে। কিন্তু আমাদের সকল সত্যের উর্ধ্বে আরেকটি সত্য হল যে গণিতের ওপর দাঁড়িয়ে আছে পৃথিবী। মানুষের অনুভূতি এক, কিন্তু সিদ্ধান্ত আরেক। সময়ের ওপর অধিকার খাটানোর জন্য মানুষ নিরন্তর জীবনকে নিয়ে সংঘর্ষ করে যাচ্ছে, অথচ সে জানেই না যে, সময় এক গন্তব্যহীন দ্রুতগামী ট্রেন। “সময়ের সাথে সম্পর্ক” কবিতায় নাজমুল হোসাইন সময়ের সাথে নিজেকে সমকামী বলে আখ্যায়িত করেছেন। কিন্তু কেন? এখানে ঠিক অধিকার করার বোধ, মানুষের এই সংঘর্ষের বিষয়টি আসছে না? এটা সত্য যে আমরা সময়ের অংশ, তাই বলে অধিকার খাটানোর মূঢ়তা করে মানুষ এই মানবজনমে অনবরত দোল খাচ্ছে। যেখানে নাজমুল হোসাইন স্পষ্ট বলে দিয়েছেন কবিতায়—
“মানবজনমে— দোল খাচ্ছি একে অন্যের মুখে”
ডিসটোপিয়া কথাটির অর্থ হল, আমাদের সাম্প্রতিককালের স্থিরচিত্র। মানুষ তার ক্ষমতার অপব্যবহার করে মানুষ থেকে মানুষের ভেতর যে লীলার কারবার চালায় তা মোটেও কাম্য নয়। সামাজিক, রাজনৈতিক ও প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় মানুষ যে মেরি এলেনের মত ফটোর জন্ম দিচ্ছে তাতে কিন্তু আয়ু, মস্তিষ্ক ও প্রবৃদ্ধির হিতে বিপরীত হয়ে পণ্ড হয়ে যাচ্ছে সব। পোষাকের মতই শরীর ও মন বদলাচ্ছে রি রি রি গতিতে। যার কারণে অপরাধ করার পরও রাতের আঁধার আরেকটি অপরাধের জন্ম দিচ্ছে। অজ্ঞাত এক ভায়োলিনের সুরে মানুষ ছুটছে। অথচ মানুষ জানছে জীবন কত ছোট তার। এ প্রসঙ্গে কথাসাহিত্যিক চঞ্চল আশরাফের কথাটি স্মরণে আসছে আমার। তিনি বলেছেন:
“জিজ্ঞাসা চিহ্নের নিচে যে একটি ছোট ফোটা রয়েছে জীবন তার থেকেও ছোট”
কথা প্রসঙ্গে চঞ্চল আশরাফ বলেছিলেন, “এই বাংলাদেশে সবচেয়ে সস্তা জিনিসটির নাম হল মানুষ জীবন ও মৃত্যু”। নাজমুল হোসাইন তার “গুহামুখে ব্রহ্মাণ্ডসমেত” কাব্যগ্রন্থে স্পষ্টভাবে ভাব ও ব্যঞ্জনার অনুরণনে বুঝিয়ে দিয়েছেন। মানুষের দৈনিক চিন্তার অনুরণন ঠিক তার “চিচিং ফাঁক, শরীর” কবিতাটি পাঠ করলে বোঝা যায় “নৃত্যের কর্মশালা শেষে রাত্রি হয়ে ওঠে নূপুরঘুম”
গুহামুখে ব্রহ্মাণ্ডসমেত কাব্যগ্রন্থে কবি নাজমুল হোসাইন চেতনার মার্গে উঠে বিষয়ের গভীর অনুধ্যান থেকে জীবনের ছোট ছোট দর্শনকে তার সামর্থ্য অনুযায়ী তুলে ধরেছেন। প্রজ্ঞা, মনন ও চিন্তনের সমবায়ে তার কবিতা ক্রমশ হয়ে ওঠেছে তত্ত্বভিত্তিক অনুরণন। “জোকার” কবিতায় কবি নাজমুল হোসাইন নিজের ভেতরে সৃষ্টি করেছেন স্রষ্টা-শোভন-গ্রেট সাব্লাইম। সাব্লাইম কথাটি এজন্য ব্যবহার করলাম যে, যে লেখা পাঠককে সেভাবে স্পর্শ করে না এবং পাঠকের অন্তরে প্রতিক্রিয়া জাগায় না তা কোনোভাবে ‘সাব্লাইম’ নয়। “জোকার” কবিতায় কবি নাজমুল হোসাইন হয়ে ওঠেছেন স্বতন্ত্র আর্টিস্ট। প্রেম; দেখা তা অবশ্যই মর্ম্মচোখে দেখা যদি স্বাভাবিক হয় তথাপি “দেখানো” একটি স্বতন্ত্র দক্ষতানির্ভর ক্রিয়া। ক্রিয়া ও অক্রিয়ার কলাকৈবল্যবাদ বুঝে ওঠার আগে মানুষ যে মরে যায় অথবা ইমেজির আলো-ছায়ায় আর্ট অব ন্যাচার থেকে বহির্ভূত হয়ে যায়। মহৎ ধারণা সৃষ্টির সামর্থ্য, শক্তিশালী উদ্দীপনা সৃষ্টির ক্ষমতা, দ্বিবিধ অলংকার সৃষ্টিতে কৃতিত্ব, মহান কাব্যভাষা তথা বাকপ্রতিমা, সামগ্রিক ভাবোন্নয়নে দক্ষতার ফলশ্রুতিতে প্রয়োগে সাফল্য, এর সবকটি কবি নাজমুল হোসাইন “জোকার” কবিতায় স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছেন। বিষয়বস্তু ও শব্দের ব্যাপারে বেশিরভাগ কবি অতিশয়োক্তির আশ্রয় নেয় ঠিকই কিন্তু পরিমিতবোধ নিয়ন্ত্রণ করতে অক্ষম। দুঃসহ বিস্তার যেমন নিষ্প্রাণ (prolixity is lifeless) তেমনি অতিরিক্ত হ্রস্বতা সাবলিমিটি নষ্ট করে।
‘‘নঞর্থক আমি” এবং “নিহিলিস্ট তরমুজ: নঞর্থক আমি” কবিতায় নাজমুল হোসাইন ক্ল্যাসিক দর্শনের সমষ্টিগত অনুভব এবং অভিজ্ঞতার মধ্যে ঐক্যানুসন্ধান করে তা প্রকাশ করেছেন ব্যক্তিনিরপেক্ষ সত্য হিসেবে। একই সুর ও মৃদু স্বরে দৃশ্য-অদৃশ্যমান বস্তুজগতের ভাবের সম্মিলিত স্বতঃচঞ্চল ও প্রবাহমান দিকটি ফুটিয়ে তুলেছেন। একজন কবি যে শিল্পী হতে পারেন বস্তু, ঘটনা এবং তৎসন্নিহিত ভাবের নৈর্ব্যক্তিক ও বুদ্ধি-নির্ভর আর্টিস্ট, ঠিক সে বিষয়টিকে নাজমুল হোসাইন স্পষ্ট করেছেন। তিনি হৃদয়বৃত্তির রঙীন আলোকে তার ব্যক্তি-অনুভবের মোহন পর্দ্দার ভেতর দিয়ে জীবন ও জগৎকে উপলব্ধি করেছেন। অ্যামপ্লিফিকেশন তথা সম্প্রসারণের দ্বারা একটি ভাবকে ভাষা ব্যবহারের কৌশল দিয়ে পুরো চিত্রপটকে সম্প্রসারিত করেছেন। এ প্রসঙ্গে চার্লস ডিকেন্সের অ্যামপ্লিফিকেশনের কৌতূহলোদ্দীপক দৃষ্টান্তটি লক্ষ্য করা যাক:
“Mr and Mrs veneering were bran-new people in a bran – new house in a bran – new quarter of London. Everything about the Veneerings was spick and span new. All their furniture was new, all their friends were new, their carriage was new, their harness was new, their horses were new, their pictures were new, they themselves were new ; they were as newly – married as was lawfully compatible with their having a bran – new baby……”
অ্যামপ্লিফেকেশনের পাশাপাশি নাজমুল হোসাইনের আরো একটি দিক উপলব্ধি হবে যে প্রকাশভঙ্গির সারল্য ও ঋজুতা। স্বতঃস্ফূর্ত্ত প্রকাশভঙ্গীর মাধ্যমে জীবনানুভবের সহজ সরল অলংকারকে উৎসারণের তীব্র আকাঙ্খা। যেমনটি “নদীসুলভ কবিতা”য় ব্যাপকভাবে শিল্পের নতুন আত্মার দিকে আকৃষ্ট হয়ে অনৈক্য, অন্তর্কলহ এবং চিন্তনের নবজীবন-সম্ভাবনাকে অঙ্কুরিত করেছেন। মূলত এই সৃষ্টির অন্তরালে নান্দনিকতার সাথে দার্শনিকতার মিশেল ঘটিয়েছেন। এর ফলে কবিতাটি শিল্প তথা জ্ঞান-মাধ্যমের শেকড় ও বীজকে পুরো একটা সজোরে ধাক্কা দিয়েছে। যার কারণে ধরে নিতে পারি ‘‘নদীসুলভ কবিতা”টি প্রাতিস্বিক অভিজ্ঞতার রূপায়ণমূলক কবিতা। যেখানে স্বপ্নকল্পনার অবাস্তব ও অতিবাস্তবের রহস্যলোকে কবিতার মাধ্যমে জীবনকে উপলব্ধি করেছেন ঠিক এইভাবে:
‘‘আমার ডানহাত বাম হাত নেই
এসব ছাড়াই দেখতে খানিকটাঃ
↑
←● ○ ●→
↓
: এমন
এখানে ক্ল্যাসিকবাদী কাব্যদর্শকে সরিয়ে নাজমুল হোসাইন নতুন প্রাণবন্ত আবেগ-নির্ভর, আত্মমুক্তিকামী হয়ে প্রথাবিরুদ্ধ হয়ে ওঠেছেন।
সবিশেষ, পরাবাস্তববাদী হয়ে নয়, পরাবাস্তববাদ অনুকরণ করেও নয়, নাজমুল হোসাইন বাস্তবিক অর্থে উপলব্ধি করেছেন, কবিতায় বিস্ময় সবচেয়ে সুন্দর, যা কিছু বিস্মকর তা-ই সুন্দর এবং শুধুমাত্র বিস্ময়-ই সুন্দর। মানুষের কেন্দ্রীয় চরিত্রের চেতনার যত দৃশ্য এবং ঘটনাবলী অভিঘাত তার সবকিছু “গুহামুখে ব্রহ্মাণ্ডসমেত” বিশ্বস্তভাবে ধরবার প্রয়াস করেছেন।
দুর্জয় খান
জন্ম: ১২ ই অক্টোবর ১৯৯৬, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী।
প্রকাশিত বই:
মানসিক অতৃপ্তির আখ্যান (কাব্যগ্রন্থ; ২০২০) ও ছায়াক্রান্তের শব্দানুষঙ্গ (কাব্যগ্রন্থ; ২০২১)