ভোর—
মাদ্রাসার তরুণীটী, প্রেমিকের সাক্ষাতে হিজাব খোলার মুহূর্ত্ত।
ভোর—
গিটারিস্ট বন্ধুটীর স্বপ্নের ভেতর চরম উত্তেজনায় বাকী রুমমেটদেরও ঘুম ভেঙ্গে যাওয়া।
ভোর—
স্কুল ছুটির পর বাসে জানালার পাশে বসে বাড়ী যাচ্ছে, সুলতানা।
শফিক সাইকেলে বাড়াচ্ছে প্যাডেলের গতি। ভোরকে এমন মুহূর্ত্তও মনে হয়।
ভোর—
নামাজ পড়ে এসে খক্ খক্ ইশারার কাশিতে,
মুয়াজ্জিনের প্রেমে পড়া মেয়েটির, জানলা খুলে যাওয়ার মুহূর্ত্ত।
ভোর—
কোরান পড়িয়ে এসে আনিসউল্লার চোখে অনেক ঘুম।
ঘন্টা পরে ডেকে দিতে বলল প্রিয় বন্ধুটিকে। হরিচরণ তাকে ডেকে দিবে বলে জেগে আছে। অন্যদিন এর উল্টোটাও হয়, আনিসউল্লাহ হরিচরণকে। যখন হরিচরণ টিউশনি শেষ করে আসে। এবং কিছুক্ষন পর আবার বেরুতে হবে। ভোর হল ঘুম আর জাগরণের এই সুন্দর মুহূর্ত্ত।
ভোর—
শুধু দিনের পূর্ব্বাভাস নয়, আরেকটি রাতের পূর্ব্বাভাসও।
ভোর—
ভোর হল প্রথম প্রেমের চিঠি। অক্ষরে অক্ষরে প্রেম ঝড়ে পড়ে ধীরে ধী-রে।
ভোর—
যেন মুখোমুখী চোখে চোখে আলাপনে উড়না সরে যাচ্ছে, অবচেতন হাওয়ায়।
…
ভোর—
প্রেমিকার মাস্ক খোলার আনন্দের মুহূর্ত্তটুকু, শুধু মুগ্ধতা।
ভোর হল দিনের বয়ঃসন্ধিকাল।
ভোর—
প্রশান্তির মধুমনে প্রেম চুঁইয়ে চুঁইয়ে পড়তেছে, হা করে আছে
মৌমাছি।
ভোর—
বীজধান থেকে বের হল প্রথম কুঁড়ি। কচিপাতায় জেগে উড়ছে ধীরে প্রজাপতী, প্রজাপতীর ঘুম ভাঙ্গল।
বনের পথ, জলের পথ, অবশেষে মনের পথ পেরিয়ে, বাড়িটির সামনে পৌছালাম।দরজায় টোকা দিয়েছি। দরজাটি কেউ খুলল না। কিছুক্ষন পর আবার টোকা দিলাম।কিছুক্ষন পরপর আবার আবার। এভাবে সারারাত …
কিছুটা কান্না, কিছুটা হাসির ঢঙ্গে,
শিশুর মত হামাগুড়ি দিতে দিতে
যখন হল ভোর—
ভেতর থেকে কড়া নাড়ার শব্দ পেলাম।একবার দুইবার তিনবার। ক্রমাগত …তারপর, ধীরে ধীরে আবার মনের পথ, জলের পথ, বনের পথ মাড়িয়ে, ঢুকে পড়লাম আলোর ভেতর।
মুহিন তপু
জন্ম, বেড়ে ওঠা পাহাড়ে। খাগড়াছড়ী জেলার রামগড়ে। স্বভাবে বোহেমিয়ান। অস্থায়ী হিসেবে বর্ত্তমানে চট্টগ্রাম থাকেন।