… গোলাপিপাড়ার অফিস ফেরতা হরিণী বিকেল
আমার কোন জনমের সর্ব্বনাস …
ঈশ্বরের কাছ থেকে ক্ষমতার এজমালী যারা পেয়েছে। ধরা যাক, তারাই সরকার। কখনো ভেবেছ? পায়খানায় বসে ভাত খাওয়া যায়! একবার করলে কি সময়ের বহুমুখী ব্যক্তিগত প্রকল্পে পয়ঃত্যাগের সময় দাঁত মাজছিলে, তুমি বমি করে দিলে। সরকার বাহাদুর এই কাজটি যখন বৃহত্তর পরিসরে করবে, তখন তুমি কিছুই বলতে পারবে না। বরং প্রশংসা করবে। এখন বলবে উদাহরণ দেও? বল তো পিলখানার হস্তিরা স্নান করার জন্য যে ঝিলে যাতায়াত করত তার নাম কী? প্রশ্নের উত্তর না পারলে তোমার বিসিএস হবে না। কেন চোখের সামনে দেখনি? মুরগীর ফার্ম কীভাবে কেজি স্কুল হয়ে যায়। কেজি স্কুল কীভাবে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল হয়ে যায়। এবং বিশ্ববিদ্যালয় কীভাবে বিসিএস কোচিং সেন্টার প্রাইভেট লিমিটেড হয়ে যায়। যাও গিয়ে পাবলিক লাইব্রেরিতে ঢু মেরে দেখ। মুরগীর ফার্ম বন্ধ হল কেন? লাভ নেই। ব্যাটায় কি ক্ষেত বেচে লস দেবে! মুরগী ব্যবসায় লস কেন? ধর, বয়লার মুরগীর লালনকৌশল শিখে তুমি শহরব্যাংক লি. থেকে লোন নিলে। অনেক কষ্ট করে যখন বিপণনে গেলে, দেখলে কি মুরগী প্রতি ৫ টাকা মুনাফা করতেই তোমার শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য অক্সিজেন কিনতে হয়। তোমার শেডে বড় হয় বড় জোর ৪০০/৫০০ মুরগী। যার শেডে বড় হয় ৫ লক্ষ মুরগী নিশ্চয়ই তার উৎপাদন খরচ তোমার থেকে কম। বাজারে বিক্রি করার সময় খুচরা ব্যবসায়ী যার কাছ থেকে কম দামে পাবে; তার কাছ থেকেই তো মুরগী কিনবে? তখন তুমি বড় ব্যবসায়ীর সঙ্গে আর পার না। শহরব্যাংকের দারিদ্রতা যাদুঘরে পাঠানোর ধাপ্পাবাজি স্লোগান— তোমার ঘুমের ভেতর আততায়ীর মত ঘুরে বেড়ায়। উচ্চ সুদ চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়ে। শহরের সুয়ারেজ লাইনের সংযোগ যে ঝিলে, সন্ধ্যার পর আলোর রোশনাই আর নৌকাবিহার তোমার মনটাকে ঘুড়ী হতে সহযোগিতা করবে। যাও গিয়ে ঘুরে আস। তোমার বারবার মনে হবে সেনেরা কি সুন্দর ফুল ফুটিয়েছে ময়লার ভাগাড়ে। নর্দ্দমার মাঝে আলোকবাতীর জলঢেউয়ের ঢোরাকাটা তরঙ্গ। নগরীর নতুন বিস্ময়। গার্লিক নানের সঙ্গে মুরগীর ঝলসানো ব্রেস্ট পিস খাওয়ার সময় গু-শুঁটকির গন্ধ মায়াবী পর্দ্দার মত দোলে। বর্ণালী সালাদের মাদকতায় দুর্গন্ধ নিঃশেষ যায়। নাগরিকরা সেই সন্ধ্যার পিকচার মুখমুঞ্জিকার বদৌলতে মনে রাখে অনেক দিন। লাইক আর কমেন্স একটা বিয়ে রাত্রির ইমেজ তৈরি করে। নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছ, সরকার বাহাদুরের কেরামতি! কাল থেকে ঘুম ভাঙার পর উত্তরে বন্ধনা করবে সরকার বাহাদুর। দক্ষিণে বন্দনা করবে সরকার বাহাদুরে। পূর্ব্বে বন্দনা করবে সরকার বাহাদুর। তারপর পশ্চিমে বন্ধনা করবে…। তুমি যেদিন ইডিপাসের কাহিনী শোন। রাজার মায়ের গর্ভে সন্তান উৎপাদনের বর্ণনা শোন। তখন তোমার মনে হয়েছিল মাথাটা বোধহয় থ্যাতলে গেছে। জুকাস্টা যখন খোঁপার কাঠী দিয়ে চোখ দুটি গেলে ফেলে— সেই মুহূর্ত্তটা প্রেত্মাতার মত ঘোরে ঘোরে ঊনপঞ্চাশ বায়ুতে ঘূর্ত্তা খায়। মূলত তামিল নায়িকার নাভীর জন্য তুমি হিন্দি ফিল্ম দেখ। তুলু ভাষার কথা জান? এ ভাষায় কর্ণাটক এবং কেরালার প্রায় বিশ লাখ মানুষ কথা বলে। এবার পড় একটা তুলু ভাষার কাহিনি কাব্য :
এক রাজার একটি মাত্র কন্যা। সে বছর প্রচণ্ড খরা। সেচের জন্য জল পাচ্ছিল না। রাজা মাঠ তদারকি করে প্রাসাদে ফিরে দেখে, ছাদে তাঁর মেয়ে জামার বোঁটাম আঁটছে। বুকের এক ঝলক রোশনাই দেখে, রাজার তখনই মেয়েকে বিয়ে করার ভাসনা জাগে। রাণীর কাছে যায় এবং বলে, নিজের গাছের ফল খাওয়া কি ঠিক?— রাণী বলে : অবশ্যই ঠিক। মন্ত্রীদেরও একই প্রশ্ন? তারাও বলে, যে গাছ আপনি লাগিয়েছেন তার ফলতো আপনি খেতেই পারেন। রাজার বিয়ের আয়োজন শুরু হয়। রাজ্যে রাজ্যে নিমন্ত্রণ পত্র পাঠানো হয়। বিয়ের দিন দূরের মানুষ, কাছের মানুষ, শহরের মানুষে ভরে যায় রাজ্য। সবাই সজ্জিত। কিন্তু কেউ জানে না। কে হবে নতুন রাণী? রাজকন্যা আগেই বুঝতে পেরেছিল। তাই ছুতোরকে বলে, এক বিরাট সিন্ধুক বানিয়ে রাখে। সেটি কন্যার শোবার ঘরে লুকানো ছিল। বিয়ের দিন কন্যা সিন্ধুকে ঢোকে ছিটকিনি আটকে দেয়। রাজা দাসিদের পাঠায় কন্যাকে সাজাতে। দাসিরা খুঁজে আর খুঁজে। কোথাও রাজকন্যাকে পায় না। রাজার মাথা পুরাই নষ্ট। অতিথিরা অদ্ভুত ভোজ খেয়ে যার যার বাড়ী ফেরে। কয়েক দিন পর মেয়ের ঘরের দিকে তাকাতেই রাণীর অসহ্য লাগে। ঘর দেখলেই মেয়ের কথা মনে পড়ে। মেয়ে নেই তো সিন্ধুক দিয়ে কী হবে। বাদীদের বলে সিন্দুকটা নদীতে ভাসিয়ে দিতে। নদীর স্রোত বাক্সটা ভাসিয়ে নিয়ে গেল অন্য রাজ্যে। সে রাজ্যের রাজা আর মন্ত্রী বালি নিয়ে নদী পাড়ে খেলছিলেন। বাক্স দেখে রাজা নির্দ্দেশ দিলেন জিনিসটা ধরতে। মন্ত্রী ধরতে যায় কিন্তু বাক্স ধরা দেয় না। রাজা যখন পানীতে নামে বাক্সটা কাছে আসে ধরা দেয়। রাজা লোকজন ডেকে বাক্সটা রাখলেন তাঁর শোবার ঘরে। রোজ রাতে রাণিমা ছেলের জন্য এক গ্লাস দুধ আর এক ছড়া কলা রেখে যান। শোবার আগে রাজা দুধ কলা খান। যেদিন থেকে বাক্সটা ঘরে রেখেছে রাজা পান আধ গ্লাস দুধ আধ ছড়া কলা। মাকে একদিন বলে, আধ গ্লাস দুধ আধ ছড়া কলা দিয়ে যাও কেন? না— বাছা! আগের মতই তো দেই। এ কথা শুনে রাজা একদিন ঘরে লুকিয়ে থাকে। মা এলেন, দুধ আর কলা রেখে বেরিয়ে যান। তখন এক হলিউড সুন্দরী বাক্স থেকে বেরিয়ে, দুধ আর কলা খেয়ে যেই না বাক্সে ডুকতে যাবেন রাজা তার হাত ধরে ফেলে। কে গো তুমি? তোমার ব্যাপারটা কী? রাজকন্যা সব কথা বিস্তারিত বলে। সেই থেকে রাজা শোবার ঘরে বেশী সময় কাটান। অন্য যত মেয়ে তাদের দিকে ফিরেও তাকান না। কিন্তু যুদ্ধ লেগে গেলে রাজাকে যুদ্ধের ময়দানে যেতে হয়। যাবার আগে রাণিমাকে বলে যান : রোজ রাতে শোবার ঘরে যেন দুধ আর কলা দেয়া হয়। এদিকে এক দাসী তো দরজা ফাঁক করে সব দেখে। রাতে রাজা বাক্স খোলেন, বেরিয়ে আসেন এক সুন্দরী কন্যা। আগে রাজার খুব প্রিয় ছিল এক রক্ষিতা। দাসী আতিপাতি করে তার কাছে গিয়ে গোপন কথা ফাঁস করে। সে মেয়ে তো হিংসুটি। তখনি সে ঠিক করে রাজ কন্যাকে নিকেশ করবে। সে গিয়ে রাণিমার কাছে রাজার শোবার ঘরের চাবী চায়। রাণিমা তো তাকে কিছুতেই চাবী দিবে না। হিংসুটি তাকে কৌশলে রাজি করায়। তারপর গোপনে সেই বাক্স তার বাড়ীতে নিয়ে আসে। বাক্স খুলে দেখে রূপবতী। তখনই সে তাকে বিকলাঙ্গ করতে শুরু করে। প্রথমে হাত কাঁটে। রাঙা আলুর ক্ষেতে পুঁতে রাখে। পা দুটো কেটে নিয়ে সারের গর্তে লুকায়। বুক কেটে ঢোকায় ধানের তুষের ডোলে। চোখ খুবলে নিয়ে আচারের বয়ামে রাখে। তারপর ঘরের পিছনের এক গর্তে দেহটাকে ফেলে দেয়। না-বাঁচা, না-মরা অবস্থায় হাত-পা-চোখহীন হলিউড সুন্দরী পড়ে পড়ে আর্ত্তনাদ করে। সেইদিনই সেইপথ ধরে যাচ্ছিল এক বুড়ী। সে তো সেই গোঙানি শুনেছে। গর্তে নেমে দেহটা বয়ে নিয়ে যায় নিজের বাড়ীতে। পরদিন সকালে হলিউডী বুড়ীকে বলেছে, হিংসুটির বাড়ীর আচারের বয়ামে আমার চোখ দুটো, নিয়ে আস। বুড়ী তো হিংসুটিকে চিনে। গিয়ে বলল, টক খাইতে মন চাইছে। একটু আচার দেও। হিংসুটে বলল, যাও ভাঁড়ার ঘর বয়াম আছে। সেখান থেকে নিয়ে যাও। বুড়ী সযত্নে রাজকন্যার চোখ নিয়ে যায়। চোখের গর্তে চোখ বসিয়ে দিতেই রূপসী দৃষ্টি ফিরে পায়। পরদিন রাজকন্যা বলে দিদি মা গো দিদি মা, আমার হাতদুটো রাঙা আলোর বাগানে পুঁতা আছে নিয়ে এস। বুড়ী গিয়ে হিংসুটিকে বলে, একটা রাঙা আলো চাই? —যাও বাগানে, তুলে নাও গে! বুড়ী রাঙা আলুর বাগানে মাটীতে হাত চালিয়ে খুঁজে খুঁজে হাত দুটো পেল। ঘরে নিয়ে জুড়ে দিল রাজকন্যের কাঁধে। রাজকন্যে হাত ফিরে পায়। পরদিন রাজকন্যা বলে, দিদি মা গো দিদি মা। পা দুটো যে সারের গর্তে নিয়ে এস না। তো বুড়ী গিয়ে হিংসুটিকে বলছে, কটা শসার দানা পুঁতেছিলাম। চারা বেরিয়েছে। কিছু সার দিতে পারলে গাছের তেজ বাড়বে। তোমার গর্ত থেকে নেই? যত চাও নিয়ে যাও। বুড়ী সারের গর্ত থেকে রাজকন্যার পা নিয়ে জুড়ে দিল। রাজকন্যার পা হল। পরের দিনে রাজকন্যা বলে দিদি মা গো দিদি মা। হিংসুটির বাড়ীর তুষ রাখার ডোলে আমার বুক দুটো আছে। এনে দাও না। বুড়ী গিয়ে হিংসুটিকে বলছে, বাছা! মাটীর নতুন হাঁড়ী কিনলাম ক’টা। চারটি তুষ পেলে ছাই আর তুষ মাখাতাম। বেশ কালো হতো হাঁড়ীর গা। দেবে চারটি তুষ? — আমাদের অঢেল তুষ আছে। যত চাও নিয়ে যাও না কেন? বুড়ী তুষ হাতরে রাজকন্যের বুক জোড়া পেল, ঘরে এনে জুড়েও দিল। এখন রাজকন্যে আগের মত সর্বাঙ্গে হলিউডী সুন্দরী। ওদিকে যুদ্ধ শেষ। রাজা ফিরে এল। এসেই গেলেন শোবার ঘরে। বাক্সও নেই রাজকন্যাও নেই। মাকে ডাকলেন বাক্স কই? রাজা জিজ্ঞেস করে বাক্স কই? সে বলে নদীতে ফেলে দিয়েছি। নদীর খর স্রোতে— কোথায় ভাসিয়ে নিয়ে গেছে হয়তোবা সমুদ্রে। ভাঙা বুকে প্রাসাদে ফিরেন। দু হাতের বালুকে মাথা রেখে বসে থাকেন। কদিন বাদে রাজকন্যা শুনল রাজা যুদ্ধ থেকে ফিরেছেন। বুড়ীকে বললেন, একটা বিশাল জলসার আয়োজন হোক। খবর পেয়ে সবাই অবাক। কী করে এক গরিব বুড়ী এমন আয়োজন করবে? আবার কৌতূহলও হচ্ছে। রাজারও দেখতে সাধ গেল, কেমন করে বুড়ী এ আয়োজন করে। বুড়ীর ছোট কুঁড়েঘরেই বসল সবাই। হঠাৎ, আচমকা রাজকন্যা হাতে তম্বুরা নিয়ে ঢুকলেন। তার বেঁধে নিয়ে গান গেয়ে উঠলেন। গানের মধ্যে তার কাহিনী বলে গেলেন। রাজা তো বুঝেছেন এ তো তারই রাজকন্যে। অমনি উঠে গিয়ে তার হাত ধরে।
কাহিনীর পর তোমার বিয়ে করার সাধ জন্মাল। তোমার তো রুটিরুজির ব্যবস্থা নেই। তোমাকে স্বেচ্ছায় কোন মেয়েই বিয়ে করবে না। বিসিএস-এর জন্য প্রস্তুতি নাও। দেখ কী হয়। তোমার সরকারি চাকরীর বয়স নেই। আরে বাবা। যদিও পুজার সময় দুর্গাকে করে। সমাজ তো আর মাতৃতান্ত্রিক না। কেন? এক সময় তো গাড়োদের মত মেয়েরাই পুরুষের ভার নিত। কেন? বর্ত্তমানে নারীরাই তো সব কিছুতে উন্নতি করছে। প্রযুক্তি এখন পরিশ্রমের কাজ কমিয়ে দিয়েছে। ১০ টনের ট্রাক দিব্যি নারী চালাতে পারে। সত্যিকার অর্থে শিল্পবিপ্লব নারীদেরকে পৃথিবীতে পুনরায় রাজ করবার অধিকার দিয়েছে। ভালো কথা— তুমি পত্রিকায় একটা বিজ্ঞাপন দাও। কোন কর্ম্মজীবী মহিলা তোমাকে বিয়ে করবে কি না? নারীর এই যে এত উন্নতি। পাবলিক বাসে কোন তরুণকে কোন তরুণী সিট ছেড়ে দিয়েছে শুনেছ! নারীর সহ্যসীমা পুরুষের থেকে অনেক বেশী। মানসিক দিক দিয়ে একজন ছেলের চেয়ে একজন মেয়ে ১০ বছর এগিয়ে থাকে। পুরুষের বিবাহের পূর্ব্ব শর্ত্ত তার অর্থনৈতিক শক্তি। যেহেতু তোমার কোনো ব্যবসা নেই চাকরী নেই। কেউ তোমাকে বিয়ে করবে না। একবার তুকতাক বিশ্বাস করে দেখতে পার। আধুনিক সেনেরা যেখানে ফুল চাষ করেছে। তুমি যদি নিয়মিত সেখানে যাও। কোন একদিন চাঁদের হালকা ধোঁয়া আলো দেখতে পাবে। ১০০০ টাকার নোটের জলছাপের সে রাত্তিতে তুমি হাঁটতে হাঁটতে ম্যানহোলের ঢাকনা অথবা গাড়ীর দরজা খোলে যেতে পারে। ভয় পেয়ো না। মৃত্যুকে গলার তাবিজের মত বেঁধে তুমি তার পিছু পিছু ধাও। সে গোলাপিপাড়ার কোন এক অভিজাত ফ্ল্যাটের বাসিন্দা। গোলাপিপাড়া যেন কোথায়? কোহেকাফ নগরীর পাশে। কোহেকাফ কোথায় সেটা আর জিজ্ঞেস কর না। অক্ষত রূপ যৌবনা পূর্ণিমা তিথিতে তুমি, বার্সিলোনার ক্ষ্যাপা ষাড়ের সামনে গিয়ে দাঁড়াও। আর কিছুই করতে হবে না। ভাগ্যের বন্ধ্যা কেটে যাবে। একই রকম বিল্ডিং, একই রকম ফ্ল্যাট, একই রকম রুম, একই রকম পালঙ্ক, একই রকম নাইটী, একই রকম শরীর, একই রকম ব্লাউজ, একই কাটিংয়ের ব্রা, ঝোলা অথবা লম্বা অথবা টাইট অথবা শুকনা বৃন্ত চিহ্নের— ঠিক মাঝখানে চুম্বন চিহ্ন আঁকলে এটিএম বুথ কল কল করে কথা বলবে। অর্থ সম্পদ হওয়ার পর কৃতজ্ঞতা স্বরূপ গোলাপিপাড়ায় যেতে হবে। ঠিক সেই ফ্ল্যাটে। যেখানে তুমি চুম্বন চিহ্ন রেখেছিলে। চুম্বন কি ফ্রিজে রাখা যায়? কিন্তু তার আগে ২০টাকা দিয়ে গুদারাঘাট বাজার থেকে সন্ধ্যার পরে টকটকে লাল মাংস ঝুলানো দোকানের পাশের দোকান থেকে সিঁদল কিনতে হবে। তোমার গাড়ী থাকার পরও হাঁটতে হবে। ব্যানানা ব্যান্ডের মোবাইলে কথা বলতে বলতে তুমি নির্দ্দিষ্ট সড়কের— নির্দ্দিষ্ট বাড়ীর— নির্দ্দিষ্ট ঘরের দিকে এগিয়ে যাচ্ছ। ফোনে কথা বলছ তো বলছ। তোমার হাতে ঝুলছে সিঁদলের প্যাকেট। পুকুরে জাল দিয়ে বেড়ি দিলে মাছ যেভাবে লাফিয়ে ওঠে। কুকুরটা আগে থেকেই ওঁৎ পেতে ছিল। তোমাকে দেখা মাত্র ছোঁ মেরে নিগ্রোয়েট পিস্তলটা নিয়ে কোথায় যেন পালিয়ে যায়। রক্তাক্ত অংশ-শরীরের কী নাম দেব— বুঝতে পারছি না।
খালেদ চৌধুরী
জন্ম : কুমিল্লার চড়ানলে, ৯ নভেম্বর ১৯৮৫। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা : বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতকসহ স্নাতকোত্তর। পেশা : বেসরকারি অফিসের কামলা। প্রকাশিত বই : ‘পাস নম্বর ৩৩’ (কাব্য ২০১৭), ‘লাল জিহ্বার নিচে’ (গল্প ২০১৯), ‘+চিহ্ন’(কাব্য ২০২১)
প্রচ্ছদ ও অলঙ্করণ মেহেরাজ হাসান শিশির