অনাথ
চাতকের জল পিপাসায় আমারই জন্মদাগ, অথচ হাত থেকে খসে পড়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান, প্লেটোর ধারণা …
অচিন পাখীর খাঁচাটা ভাঙা হল না আর শিরদাঁড়ার প্রকারভেদে সেই জলাজমী
নিরম্বু অস্তিত্বের কাছে পথ দু’ভাগে বিভক্ত— এক : সপুস্পক, দুই : অপুস্পক …
দুঃসময় থেকে যে শিশু বেরিয়ে আসে সেও বুঝে গেছে আমলা আর আলপথ
শূন্যস্থানে আঙুল ডুবাতেই দুটি প্লেটের ধাক্কা, চালতা পাতার ফাঁক দিয়ে প্রজাপতী উড়ে যায়
কেটে যায় অপ্রস্তুত ইচ্ছে, তেতাল্লিশ তিপান্ন সঞ্জীবনী তুচ্ছ করে যুদ্ধ থামেনি আজও
কেবল ফুটে উঠছি ধানের ডগায় আর আকাশ তার আঁচল বুলিয়ে দেয়—
পরাগ
খালের ধারে দাঁড়াই, সূর্য্যোদয় থেকে সূর্য্যাস্ত পর্য্যন্ত সাঁতরে বেড়ায় গুমোট দুপুর—
ঢেউগুলি স্থির হতে হতে ভাটিয়াল হয়ে যায়—
কচুরিপানার কিনারায় জীবনগুলি ক্ষতবিক্ষত ও শান্ত— তার সাথে অনন্ত অবগাহন, লেপটে থাকা নিরন্তর পরিক্রমায় দূরত্বের খরতাপ, আকাশ বিস্তারের মরণ বাঁচনের বাঁশী
বাতাসের শব্দে দাঁড়কাকের লাস্যময় উঠানামা— কখনো জলে কখনো স্থলে— ঘাসের ওপরেই উত্তমের ঘর—
রুক্ষ খোঁপায় তখন সবুজ ফড়িংয়ের হাঁফছাড়া নিশ্বাস
কেঁপে উঠি রোজ
কতখানি অমানুষ
আগে পরে কে জানি না
ধানক্ষেতের জনপদে সহস্র চোখ, উন্মুক্ত পিঠে সেই উত্তরপথ—
পলে পলে বদলে যায় আকাশের রঙ—
কিছু ছায়া আর ইতিহাসগাছ— বুকে আঁকড়ে রাখে মাটী
কাছে আমার অপেক্ষা; বহন করে পরাগ— মাঠ পেরিয়ে যাই— এক উঠোন রোদ্দুর—
লক্ষ্মীকান্ত মণ্ডল
জন্ম— ১৯৬৯ সালের জুন মাস।বাবা— গোরাচাঁদ মণ্ডল; মা— গীতা রাণী মণ্ডল।
পেশা— প্রাথমিক শিক্ষক
গ্রাম— বরদা; ডাক— মোহাড়; জেলা— পশ্চিম মেদিনীপুর; পশ্চিম বঙ্গ; ভারত।
মোবাইল— ৯৭৩৩৬০২৯০৩; মেইল— mandallk69@gmail.comকবিতার বইগুলি—
হঠাৎ হঠাৎই (১৯৯৮)
মানুষের নদী (২০০০)
খরানদীর বৃষ্টি সম্ভব (২০১০)
সজনেফুল ও নিঃশর্ত সমর্পণ (২০১১)
আঁধারের পাঁজর (২০১২)
কালো নৌকার তৃষ্ণা (২০১৩)
তিলক জন্মের ছায়া (২০১৫)
হরিত প্রাণের কম্পাঙ্ক (২০১৮)
জাম রঙের পুরুষ (২০১৯)
প্রচ্ছদ ও অলঙ্করণ : মেহেরাজ হাসান শিশির
{পরাগ ও অনাথ / লক্ষ্মীকান্ত মণ্ডলের কবিতা [বঙ্গীয় শব্দকোষ (শ্রী হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়), বঙ্গীয় শব্দার্থকোষ ও ক্রিয়াভিত্তিক-বর্ণভিত্তিক ভাষাদর্শন (কলিম খান-রবি চক্রবর্ত্তী) অনুসৃত] চারবাক-এর বানান রীতিতে প্রকাশিত হল।
— সম্পাদকীয়}