মঈন চৌধুরীর চিত্রকর্ম্ম— বিস্ফোরণ
বিদ্রোহ
হাতটী মাথায় রেখে আশীর্বাদ কর
অবলীলা, আমাকে আরেকবার ছুঁয়ে যাও—
কবী নজরুলের বিদ্রোহী কবিতার
সারবত্তার ভিতর দিয়ে আমাকে হাঁটিয়ে আন
স্পার্টাকাসের শরীর থেকে হাড় এনে
শল্যচিকিৎসায় গেঁথে দাও মেরুদণ্ডে।
আপোষকামিতার নির্লিপ্ত ঘেরাটোপে বন্দী
ঘোর অমানিশা সময়ের অন্ধকারে
মশাল মিছিল সত্য—
বর্শাবিদ্ধকালে প্রতিবাদ ছাড়া অন্য কোন ভাষা
হতেই পারে না সত্য—
আমি নূর হোসেনের মিছিলের যূগপৎ সঙ্গী।
মঈন চৌধুরীর চিত্রকর্ম্ম— পাখীর চোখে দেখা
সুবর্ণ বাংলাদেশ
পূজা কড়া নাড়ছে দুয়ারে
পূজারী এসেছে জানাতে আমাকে আমন্ত্রণ—
আমি তো বাঙাল, বাঙালী মুসলমান
দোয়া খায়েরের শেষে খুলেছি দরজা
সামনেই পূজা, স্বাগতম।
যাব, নিশ্চয়ই পাতে পাব বুটের ডালের তরকারী
কচিপাঠার মাংস, লুচী, নারকেল নাড়ু—
এই নাও, কচকচে সবুজ পেয়ারা
সামনের ঈদে তোমারও নিমন্ত্রণ
ভুরিভোজ হবে ঝুরঝুরে হাতের সেমাই
মোঘল-মাটন বিরিয়ানি আর লাউ দুধের পায়েসে।
ক’দিন কাটবে দেবীর বোধনে, নিবেদনে, উদ্বেল উল্লাসে
ত্রিতাল ঢোলের বাদ্যে, দুর্গতিনাশিনী মায়ের আরাধনায়
তারপর হাজারো ভক্তের বিসর্জনের বেদনা।
বীরের পাঁজর পোঁতা মাটীর ঢেলায়
সহস্র ফুলের পাপড়ির দোলা
সুফিসাধকের পূণ্য চারণ ভূমীতে
শ্রমজীবী মানুষের কায়িক সাধনা
এ মাটী ভুবনজয়ী, বড্ড মোহময়ী।
বিশদ আকাশে বহু বর্ণের বর্ণিল ছটা
হাওয়ায় ভাসে সুমধুর আযানের ধ্বনি, ভাটিয়ালী সুর,
নানা পথ ও মতের ত্রিবেণী সংগমের
মিল অমিলের মহাসম্মিলন তীর্থ
নান্দনিক বৈচিত্রের সুন্দরের খনি, প্রাণের স্বদেশ
তোমাকে সালাম সুবর্ণ বাংলাদেশ। …
হাবিব আহসান
জন্ম : ২৯ নভেম্বর, ১৯৬৪।
জন্মস্থান : যশোর।
বেড়ে ওঠা : চট্টগ্রাম।
পড়াশোনা : বাকলিয়া স. উ. বিদ্যালয়, চট্টগ্রাম;
হাজী মু. মহসিন কলেজ, চট্টগ্রাম;
চট্টগ্রাম কারিগরী মহাবিদ্যালয়।
প্রকাশনা : যুঁই পুড়ে নির্জল বারুদে (কবিতা পত্র; ১৯৮৬),
আজন্ম আরতি (কাব্যগ্রন্থ; ১৯৯৫)।
সম্পাদনা : লিটল ম্যাগাজিন ”সুদর্শনচক্র” (প্রথম সংখ্যা ১৯৯৬)।
পেশা : ব্যাবসা।
বর্ত্তমান অবস্থান : ঢাকা।
প্রচ্ছদ : মেহেরাজ হাসান শিশির
{বিদ্রোহ ও সুবর্ণ বাংলাদেশ || হাবিব আহসানের কবিতা [বঙ্গীয় শব্দকোষ (শ্রী হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়), বঙ্গীয় শব্দার্থকোষ, ক্রিয়াভিত্তিক-বর্ণভিত্তিক শব্দার্থ বিধি (কলিম খান-রবি চক্রবর্ত্তী) ও প্রকৃতিপুরুষভাষাদর্শন অনুসৃত] চারবাক-এর বানান রীতিতে প্রকাশিত হল।
— সম্পাদকীয়}