নিশিগন্ধা
ঘুমোতে যাবার আগে-
তোমার নাইটিতে যোগকরে নাও আরো কিছু;
কাঁচুলি খুলে তাতে লিখে রেখো ফেরারী ঘুমের উৎসব।
মেঘডুমুরের উল্টো পিঠে ঠিক-ঠাকা গুজে নিও-
জলপাখিদের আশ্চর্য নখবিলিখন।
সে পর্যন্ত ভালো থেকে-
ওগো আমার সুখ রাত্রি জাগার উপকরণ।
কারন,
রহস্যময়তার ট্যাবো উন্মচনের আগে
একবার পান করে নেওয়া ভালো।
নিশিগন্ধা-২
তোমার ঐ ঘুমঘরের আলোসৃণতার সুগন্ধে
মোহিত থাকুক রাস্তায় জেগে থাকা জীবিত
গাছগুলোর ছায়া। তারাদের সংরক্ষিত
বোধের বাগানে উপচে উঠুক অজস্র কর্মবিরতীর ঘ্রাণ।
তোমাকে আমি নিশিগন্ধা বলেই ডাকব; কেননা-
তোমার কথা মনে পড়লেই আমার-
আনারস খেতে ইচ্ছে করে।
নদী ও নিজস্ব ব্যাঞ্জনা-৭
ওগো নদী,
তুমি ভদ্রবতী হও
আমি ভগীরথী সকাল হব।
উত্তাল আমার শিশ্ন স্নানে
নিভে যাক তোমার আঁচলে লুকানো মাভৈ আগুন।
নদী তুমি পূর্ণবতী হও-
মঙ্গলময় তোমার জলধারায়
পূর্ণ হোক আমাদের কামনা বিলাস।
তুমি চাইলেই আমি-
গৌতমবৃক্ষ হতে পারি।
নদী ও নিজস্ব ব্যঞ্জনা-৮
আত্মজ স্মৃতিরা সমাগত হলে,
সাবলীল বোধের বারান্দয় চলে আসো
তুমিতন্ত্রের মুদ্রাদোষ
এর পর শুরু হলো আমাদের নগর কেন্দ্রীক
পাণীয় পাত্রে জল ভরার দীর্ঘ লাইন।
তোমাকে শস্যহীনা জেনেও
কলাবতী বিকেলগুলো যেভাবে
চাষ করে ছাইদানি সুখ।
ভুলে থাকার ভঙ্গিমায় যেমন
ঝুলে থাকে বয়সের খড়া জাল!
নদী ও নিজস্ব ব্যঞ্জনা-৯
সেই তুমি ফিরলে
রপ্তানির বর্জ নিস্কাশনের পর
তবুও প্রতিব্রতা তুমি
তোমার ধ্যানে, তোমার স্নানে
পবিত্র হলো আমাদের-
অনার্য নগরী।
নদী ও নিজস্ব ব্যঞ্জনা – ১০
একাকিনী তোমার কোলে
কতো যে আ-গাছার আবাস
বেওয়ারিস কতো-কুলিঙ্গের অনিত্য বসবাস
হয়তো ঈশ্বর জানেন-
পরবাসে রেখে এসেছ কত-
আনারী স্বকাল।
নদী ও নিজস্ব ব্যঞ্জনা – ১১
কুলবতী তোমার কূলে
কৃপাবাসে আসা
জোয়ারী জঞ্জাল
তোমাকে ছুড়ে দিলে
বেফাস ক্ষুধার সিম্ফোণী;
তুমিও দানবীর মত খেয়ে নিলে সব
নিরাময় পথ্য ভেবে-
নিত্যানন্দের রঙ সমেত
বাউরী বাতাসে ধূ-ধূ।
আমাকে পাটাতনে হেলান দিতে-দিতে
পাঠ করে নিতেই হলো
তোমার হাঁমুখো আর দীঘল-
জোয়ারী নদীর মন।
আমার পুষে রাখা ভ্রুণ: তোমার দৃষ্টরজ পতন
অনেক তো হলো যাপিত জলে-
মাখামাখি সুখ;
ভাবছি, এবার দুঃখ বিলাসে যাব
নিধু, পালসের ছাতাটা ঠিকঠাক মেলে ধরো।
বারন্ত দুপুরের অনুবাদ শেখাটা ভীষন জরুরী
দেখেছ কেমন জন্মান্ধ মাকু (!)?
হৃদয়ে পূর্ণ শৃঙ্গারে প্রতিনিয়ত
বুনে যায় কেমন আনারি স্বকাল !
আহা! কী শিল্পিত অনুমানে
সভ্য হলো আমাদের মাছ ধরা।
মাকুরা কেবলই জন্মান্ধ থেকে যায়
এপাশ-ওপাশ,
খট্টাস-খটাস….
এখন সে পরবাসে
ভাব দেখে মনে হয়
কী ভীষণ আনারী
নিধুবন জ্বালাতেই
ষোলআনা কাচারি।
এইখানে জল-অগ্নি-উরু-সন্ধি
এইতো এখানেই মিশে আছে
বায়ু বরাবর- ফসলী জ্ঞানের চাষাবাদ;
এখানেই মিলেছে সকল
বিশ্ব চরাচর।
রমাদি,
কী আশ্চর্যময় সরল তোমার সমাধী!!
মানুষ-ফুল-পাখি ও প্রকৃতি
ফুল হতে চেয়ে মানুষগুলো
মসনদ মুখী হলো;
ককটেল আর পেট্রোলবোমার ভয়ে
ঘরমুখী হয়ে প্রকৃত ফুলেরা, অবোধের মত বসে কাঁদে
সময় শিকারীর জালে আটকা পরা
উদ্দমী ঘোরার সম্ভাবনার শিল্পায়ন।
সন্ধ্যা তারা বন্ধা হলে ধানশালিকের সংসারে
উটপাখিদের পার্লামেন্ট যখন-
গানের খাতা খুলে বসে ফেরারী সুর
আমরা ঢকার পায়োই-
প্রাকৃতিক গুজবে দুলে উঠি!
মনিবের দয়ার খানিকের জন্য
গ্যালন-গ্যালন তেল মেখে বসে থাকিÑ
লাইন বাই লাইন…
গোপীনাথে এক প্রভাতে
কতিপয় বন্ধুদের পাল্লায় মাপা হলো
যৌবনের আর একটি রাতের ঘুমঘোর
উত্তেজনাময় বনশ্রী অপেরা।
বরাতের বামে রাধা-বল্লোভ,
সহস্রাধীক ঐতিহ্য পৈথানে রেখে
আমাদের হালের রুচী- রসে আর রমনে ভিজে
কেমন জবজবা হয়ে মোচড় মেরে বেঁচে উঠে
প্রচন্ড নারকীয়তায় নিভে যাবার আগে।
হায়! কী দারুণ আমাদের জেগে থাকা!
রনি বর্মন
জন্ম: ৪ জানুয়ারী ১৯৮৫ খ্রি.
শেরপুর, বগুড়া।
সম্পাদনা: বিতল (ছোট বড় মিলে মধ্যবয়সী কাগজ)
বামিহাল (চিন্তার খসড়া)
ফোনঃ ০১৭৪৩৯১৮৯১৬
আকাশডাক: roniburmon@gmail.com