রাশেদুন্নবী সবুজের ‘এ ড্যান্স নাইট জার্নাল’ থেকে আটটি কবিতা

0

ভূমিকাএ ড্যান্স নাইট জার্নাল

‘সকলেই কবি নয়, কেউ কেউ কবি’ আপাতত ‘সকল’ দলের সদস্য হিসেবে কিছু শব্দ জুড়ে জুড়ে জুড়ে জুড়ে অর্থপ্রকাশ কতটুকু কবিতা হয়ে উঠেছে তা বলার মত সাহসের অভাব আমার যথেষ্ট রয়েছে। আবার সেগুলো কতটুকু লেখা হয়ে উঠেছে সেটিও একটি প্রশ্ন!

মহান পাঠক, আপনি যদি মনে করেন কিছুই হয়নি তো ‘toilet tissue’ হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন বিনা বাঁধায়। আর যদি ধরে নেন কোনো একটি লেখা আপনার, তো তাই ঠিক; আপনি ব্যবহার করতে পারেন আপনার ব্যক্তিগত সম্পত্তি হিসেবে। তবে; এবার একটু অস্বস্তি বোধ করুন- লেখাগুলোকে পণ্য ভাববেন না। (সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণঃ পণ্য ভেবে বেচাকেনা করলে পাছায় বাঁশ ও হাতে লণ্ঠন ধরিয়ে দেয়া হবে। আর এসবের জন্য যাবতীয় ব্যায়ভার পুস্তক সঙশ্লিষ্ট সকল কারিগরের।)

লেখাকে পণ্য করে বাঁচা যায় না। যদিও কেউ কেউ চেষ্টা করেন। তবে তারা ঝড়ে পড়েন দৈনিক। দৈনিক প্রকাশ খুব একটা জাগায় না। ঝিমানোর ক্ষেত্র তৈরি করে মাত্র। আমরা জেগে থাকতে চাই..।

প্রায় লেখাই বিভিন্ন সময়ে প্রকাশ করেছে প্রথম প্রেমিকাদের এক ‘বিন্দু’। আর এখন মলাটে বন্দি করছে ‘বাঙ্ময়’।

দেখা, না দেখা। কথা বলা, না বলা। ভালোবাসা, না বাসা সকল কারিগর-এর জন্য শুভ যোগ ইচ্ছা..

এ ড্যান্স নাইট জার্নাল

ছোপ ছোপ অন্ধকার, নিঃসাড় ধরলা পাড়..
মগজের প্রধানতম নর্তকী, ব্যস্ত, হৃদয়নীড়ে
তা-তা-থৈ-থৈ, থৈ-থৈ-তা-তা, ছাতা!
অর্থহীন, যতসব উৎসব;
অলোকসুন্দরকুমারী মুখ লুকায় সবুজ পাতায়
তার, সময়, যেনবা পাখিডাকাভোর
ঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃ
কিন্তু পাগলীবতী কাঁটায় আমার রক্ত মেখে
ও গাছের সাদা গোলাপ এখনও লাল হয়ে ফোটে
ঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃঃ
শুনেছি, আষাঢ় এসেছে ফিরে, চোখ..
উত্তরের দিকে; দক্ষিণের দিকে;
পুবের দিকে; পশ্চিমের দিকে;
দৃষ্টি, ফেলছে না; কেঁপে, উঠছে না

এটি একটি প্রেমের কবিতা হতে পারতো

টাইটানিক প্রত্যয় ছিলো আমার উপর তোমার,
সত্যের সামনে দাঁড় করাতেই তুমি ভেঙে পড়লে টুইন টাওয়ারের মতো;
মিগ টোয়েন্টি নাইনে মন ছুটতো তোমার পাড়ায়,
ভেঙে দিলে পাড়াটা বেবিলনের শূন্যদ্যানের মতো।

কৃত্রিম উপগ্রহে ধরা পড়েনি আমাকে দেয়া তোমার প্রথম চুমু,
তোমার ভালোবাসা পাওয়া পাঞ্জাবিটা ব্রিটিশ মিউজিয়ামে স্থান করে নিয়েছে;
রোমিও-জুলিয়েট  লাইলি-মজনু  খুনি শাহজাহানের মতো তোমাকেও জানবে,
ডব্লিউ ডব্লিউ ডব্লিউ ডট মেঘবালিকা ডট কম-এ ঠিকানায়।

বরাবর / সম্মানীত.. / ও / সর্বময়..

আল্লাহু আকবার আল্লা.. হু আকবার সম্মানীত কাছিম ও সর্বময় শামুক তোমরা এগিয়ে যাও, না পারলে মৃত্যুর পর বল হরি হরি বল আমরা শবদেহ পৌঁছে দেবো গন্তব্যে। জগৎ-এ সকল প্রাণী সুখি হোক ওই ভাঙা পথের মসৃণতা আমার জানা। প্রিয়, নীল ছায়া আমিও পান করেছিলাম একদিন। নতুন তোমাদের মাথায় হাত বুলিয়ে দেবে, লজ্জার আগেই খোলসে ঢুকে যাও। জল ও কচি পাতা খেতে দেবো তোমাদের, আর তোমরা হাসতে হাসতে প্যান্ট খুলে দেবে। তোমাদের সাদাকালো বাচ্চারা লজ্জা পাবে, ইশ্বর তোমাদের সহায় হোন!

কাঁচা মরিচের তীক্ষ্ণতায় বাগানেই কাঁটা পরে উত্তপ্ত ছুরি..

এখানে পুণ্যবিরুদ্ধতা
পবিত্র পাপাত্মা কুড়ায় বিশুদ্ধতা; অবিরাম
তবুও অমাবশ্যার নিস্তব্ধতা ছুঁতে পারে না বুড়ো শ্মশান
অন্তহীন পথে নকশা এঁকে চলে অঘ্রাণের ঘাসপাতা
ছায়ার ভেতর অমরতা খুঁজে পায় কালো শরীর
ক্ষুধার্ত শিশু (জীবন্ত কংকালও হতে পারে)
যেনবা আকাশ দেখে মুচকি হাসে
অথচ পাঁচ মুহূর্ত শব্দ দূষণ সেরেও বেরিয়ে পড়ে সারিবদ্ধ কাস্তে..
আস্তে..
বলে ‘দিয়েছেন, বাঁচাবেন’
শালা, কুত্তা, বাচ্চা..
ফাইজলামোর জায়গা পাস না..

শ্রীমতি শোচনিয়া ব্যাধি

পৃথিবীর যে দিকে যেতে চাও যেতে পারো
হতে পারো নীলাভ পানশালার ঝলমলে পেয়ালা
কিংবা শুধুই পানীয়; কেননা
তোমার সুস্বাদু মাঙসের লোভ আমার নেই..
পশ্চিমে আন্দোলিত হৃৎপিন্ডের ঊর্ধ্বাংশ
আর আমায় কাঁপায় না; কারণ
শহীদ মিনারে দাঁড়িয়ে থাকার চেয়েও
পাজামার ব্যাপক গিট খোলা অনেক বেশি সহজ
কিছুই পারবে না জানি; যেহেতু
গৃহপালিত যুবতী কালবোশেখির তলায়
পাপড়ি মেলে একফোঁটা সাঁতার কাটে না
আমার বন্ধ চোখের আলপথে; অতএব
পরস্পরকে আরশোলা ভাবার সুতোয়
কফিন মুড়িয়ে মাঙসের গন্ধ ওঠানো পাপ..

অদেখা সমাচারে অস্তিত্বের উৎসব

নয় / ইশ্বর / নয়
পুস্তক / পাঠে কাঁপে না /
আমার হৃদয় / শিশির ভেজা কিশলয় /
নিজেকে দেখে নিজের ভয় /
নিজের সাথে চলতে হয় /
অপরিবর্তনশীলতায় প্রতিস্থাপিত নাটক /
আহ্ /
আর নয় /
ইলিচীয় পিপাসায় / কলসি কলসি আষাঢ়-শ্রাবণ ঢেলেও /
এক টুকরো ঢেঁকুর আশা করা বোকামি / কারণ
মূলা বাড়িতে বাড়িতে ডাঙ্গর হইলেও আকাশ দেখে না /

রাঙানো পংক্তিমালার স্মৃতিচারণে কিছু ভুল ছিলো

ও আমার সহেলী লাল / শিশির সকাল /
ভিজে একাকার / তবু একবার / জাল
বুনে / মুক্ত খুনে / আসেনি কো কেউ / ? / ? /
একা বসে উজবুক / রেলপথে ধুক ধুক /
কাটা পড়ে বুক / সুখ / আলোহীন মুখ /

দীপাবলির মুখোমুখি..

গাঢ় অন্ধকার ফোটার শুরুতে গর্ভবতী প্রসব বেদনা বন্ধ করে
একফালি চাঁদ জ্যোৎস্নাসমেত নগ্ন আঙুল ছুঁলো ভেজা অশ্রুতে
তবু আন্দোলিত হলো না বুট’র ওপর দাঁড়ানো ঘৃণার শরীর
শুধু পেছন দেখিয়ে হাত’র ইশারায় পাঠ দিলে, যা ভাগ
স্তন থেকে দু’ফোঁটা গভীর দুগ্ধ বেড়িয়ে এসে বিদ্রোহ করে
সঙহতি প্রকাশ করে লাল পিরান’র প্রতিটি কালো বোতাম
গন্ধমাখা মোজা-ট্রাউজার-অন্তর্বাস-নিতম্বে ভাসা ঘাম
তবু সিগারেটে চুমো খেয়ে প্রজাপতি উড়িয়ে দিলে জলে
যা কিছু ভালোবাসি না তারাও নেকড়ের সুরে বলে ওঠে, যা ভাগ

মস্তকে কুয়াশা জমা কতগুলো কুতুর কুতুর লেলিয়ে চারদিকে
ভূতভবিষ্যতের জল-টলো-মলো মুলো চোষাচ্ছে রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ
ক্ষুধা আমাকে ভিক্ষা নয় মৌচাকের সৌন্দর্য বিলাতে শিখিয়েছে
মিলনের সুখে মৃত্যু পানে মৌমাছির যেমন কোনো দুঃখ হয় না
তেমনি দেবতাহীন বসুন্ধরায় জলপাই পাতা’র অযুত বধ্যভূমি
তৈরি করতেও শ্রমিকের হাতুরি-শাবল একটুও কেঁপে ওঠে না
নিশ্চয়ই চাঁদের আলো অচিন পাহাড়ের সীমানায় খুঁজে নেয় ঠিকানা
বিশাল নগ্ন সমুদ্রে ঝুঁকি’র ভাঁজে ভাজভারাতুর নীল নীলে নীল হয়ে
সবুজ জনতায় ঘুরে এসে স্মিত হেসে ফেললাম একটি পদক্ষেপ

প্রকাশনা সংক্রান্তঃ
প্রকাশকঃ বাঙ্ময় । প্রকাশকালঃ    ফেব্রুয়ারি ২০১৫ । প্রচ্ছদঃ    চারু পিন্টু । অক্ষরবিন্যাসঃ নান্দনিক কম্পিউটার্স । বিনিময়ঃ    পঁচিশ টাকা

শেয়ার করুন

মন্তব্য

টি মন্তব্য করা হয়েছে

Leave A Reply

শেয়ার