মণিমা
মণিমা শোন তোকে বলছি ।
আটপৌরে বুঝিস তো?
সেই যে গঞ্জে দেখেছিলি তারে ।
আমি তার কথায় বলছি ।
জানিস তো সেইদিন কী হয়েছিলো?
আমি স্বভাববশত থ্রি কোয়ার্টার পরেছিলাম ।
এক পকেটে সিগারেটের প্যাকেট
আরেক পকেটে লাইটার ।
আরো কি কতো খুচরো ছিল মনে নেয় ।
তবে দু’পাতা কবিতা ছিল ।
আমি হাটছি মণিমা,
দেখ তো চাঁদটা বড় হয়েছে কিনা?
আমার চোখ ঝাপসা হয়ে আসছে ।
আমি বুঝতে পারি না কি ছাই হল চোখে ।
সমুদ্র ভর করেছে যেন ।
মণিমা, তুই ফিরে যা এইবেলা ।
আমি আরো কিছুদূর হাঁটবো ।
মণিমা, তাকে দেখলে বলিস,
আমি ভালো নেই একদম ।
কোহেকাফ
অস্থিরতার জ্বীন-পরীর দেশ কোহেকাফ নগরী ।
আমি ঘুরে বেড়াচ্ছি বাজারে ।
পরীদের ডানা ঝাপটানো যেন তাসুরের দান,
জোড়া জোড়া চিৎকার,
এই নে গোলাম, বিবি, টেক্কা ।
আমি বাজি ধরেছি মগজ আর রক্তের
তাসের আড্ডায় ধনেপাতা আর জল;
সবাই আমার মগজ খেতে উৎসাহী ।
সাথে পানাহারে রক্ত ।
এখন আমি মরিয়া খেলোয়ার,
খেলছি বোধশক্তি বাঁচানোর লড়াইয়ে ।
পতিতার স্বপ্ন
অফিসের দেরি হয়ে যাচ্ছে । কিন্তু ব্রাসিয়ার লাগানোর পিনটা খুজে পাচ্ছে না নায়িকা । তার সুন্দর বুকজোড়া হচ্ছে না সুন্দর উপস্থাপন । সিনেমা হলে পিনপতন নীরবতা । যে পতিতা এতক্ষণ একদম পেছনের সিটে শীৎকার করছিলো, সেও ক্ষণিকের জন্য উঠে বসে । একটু সামনে বসা বুড়োটা বারবার ফিরে দেখছে পতিতার খোলা বুকের দিকে । বাড়তি পয়সা নেই, তাই মাগী একটা বলে সামনে ফিরে গ্রোগাসে গিলতে থাকে নায়িকাকে । অবশেষে নীরবতার সমাপ্তি হয় । নায়িকা খুঁজে পেয়েছে পিন তার স্ক্রিপ্ট অনুসারে । সবাই ফিরে গেছে নিজেদের চিন্তায় । শুধু পতিতার মনে নতুন চিন্তার উদয় । আহা আমার বুকজোড়াও যদি এত সুন্দর হতো!
প্রাজ্ঞতা
বৃক্ষ অন্ধকার করে থাকে,
এক রাশ কালো কথার আঁধার ।
পাখি আর বানর চিৎকার
করে,
অভিশাপের কারণে কেউ বুঝে না তাদের জ্ঞান।
চুপ করে থাকে প্রাজ্ঞ বাতাস,
তারা জ্ঞান বিলোবে না আর মানুষের ভাষায় ।
বুড়ো ঘোড়া
বুড়ো রংচটা ঘোড়া নিজের যৌবনকে মনে করে দীর্ঘশ্বাস । সত্যবতী শূন্য প্রাণহীন জগতে । অতি পৈশাচিক এক অপরাধবোধে ভুগছে সে! অস্তিত্বের প্রশ্নে নাজেহাল । সজীব ঘাস মুখে নেয় না অনেককাল । গড়পরতা বুড়ো পৃথিবীর সাথে বেঁচে থাকতে তার কষ্ট হয় । চিরন্তন সত্য কি তবে মিথ্যা! বুড়ো হলুদ ঘাস আর সে মুখোমুখি ।
– ক্রুশবিদ্ধ হবো কি? ছায়াময় শান্তির নিশ্চয়তা আছে তো?
– না। এ হবে পালিয়ে যাওয়া।
– তবে কী করবো আমি?
– ঘুরে দাঁড়াও, উপভোগ করো ।
– উপভোগ মানে কী?
– যেখানে তুমি সত্য তাই উপভোগ । নিজেকে নিজের করে নাও…
ঈশান বড়ুয়া
কবি
1 Comment
Pingback: নবপর্যায়ে প্রথম সংখ্যা । জুলাই ২০১৬ | চারবাক