ফরহাদ নাইয়ার গুচ্ছকবিতা

0

সাইকেল

পোষা সাইকেলের বেল বাজাতে হয় না। সে নিজেই বেজে চলে আরোহী কে লেপ্টে দিয়ে। ইঁদুরের গর্তের সামনে রেখেছি কালো বিড়াল। ধানের গোলায় ইঁদুর মারার কল। তবু ধান খায় ইঁদুরের দল। আমার কাশ্-ফ খোলা। চোখ বুজে দেখি সোলেমানী পিঁপড়ারা পৃথিবীটা মুখে নিয়ে ছুটছে স্টিফেনের গর্তের দিকে। স্টিফেন হুইল চেয়ারে মুখ ঘষতে ঘষতে দেখলো বড় ব্যাঙ কোলাব্যাঙ মুতে মুতে নিভাতে চাইছে নমরুদের আগুন। ছাতিসংঘ থামিয়ে দিতে চাইছে তুমুল বর্ষণ। অবাধ বাণিজ্যে আমি আমাকে বেচে দিয়েছি দুটো ডুমুর ফুলের বিনিময়ে। মাছিরা জানতে চাইছে কে দিয়েছে গুয়ে মুখ। উৎসুক জনতার ভীড় ঠেলে আমি দেখলাম আমার গলিত লাশ শকুন চুচ্ছে না।

দূরবীন

দুরবীন দিয়ে কাছে টেনো না। ভালো বাসো। ছুড়ে ফেলো নিকষ অন্ধকারে। গহব্বরে। অসুখের চোখের কোটরে। যে ভুল! উলে বোনা গরম কাপড়। তাকে কি তোমরা শীতবস্ত্র বলতে শিখেছো। হিম। আমাকে সাদাভালুক করেছে। বরফের মন থেকে তুলে দিয়েছে শীলের শরীর। কাফনে মুখ গুজে আমি তবু ঝপেছি সূর্যের নাম । অতি দূর থেকে চেয়েছি আগুন। দোযখ। উত্তাপ। হাবিয়া জাহান্নাম।

রঙ

রাঙিয়ে দাও। আলকাতরা ঢেলে দ্যাও গায়ে। রাতের থেকেও গভীর করো। বুনো মোষের পিঠে চড়িয়ে দাও। আমিতো ছাপিয়ে গ্যাছি সে অন্ধকার। যেখানে জমেছিলো দুফোঁটা ভীত পরাগ। আমার কিছুই শেখা হয়নি। ক থেকে ম পর্যন্ত ঝিমুনিতে কেটেছে। বর্গীয় স্পর্ধায়। বাকি হরফে আমার তীব্র অনিচ্ছা। কিভাবে চলবে…। বিশ্ব মহাবিশ্ব দেশ সমাজ রাষ্ট্র মানুষ অমানুষ। আমি নীরু। আমার চোখ উঠা। আমার মাইগ্রেন। আমার যন্ত্রণায় পৃথিবীটা ঘুরছে। আমি ঘুমিয়ে গ্যাছি বলে বিশ্বব্রহ্মা-ে নেমে এসেছে মৃত্যুর নীরবতা। আমি গান গাইনি বলে পাখিরা থেমে গেছে। আমার তো কিছুই করা হয়নি। দাঁত ব্রাশ, সকালের নাশতা, জমপেশ গোশোল। চা কফির আড়ালে লুকিয়ে লুকিয়ে শুধু ক্যাফেইন দেখেছি আমি। কিভাবে সৃষ্টি হয় শব্দের উত্তেজনা। রিকসার- বাসের- ট্রাকের। কালো ধোঁয়া ছাড়ো। আমি ভেসে যাই। ফেঁসে যাই। বেআব্রু মেঘের কাছে। শিবকে পাঠিয়ে দাও। দীপাবলী আসুক। অসুরেরা আসুক। ঘুম থেকে উঠে  দেখবো একটি নতুন ভোর। চোখ খুলে দেখবো একঝাঁক পাখি। একবুক জল নিয়ে ছুটে চলা নদী। রাঙিয়ে দাও। আলকাতরা ঢেলে দাও। রাত করে দ্যাও সকল মিথ্যে দিন।

শেয়ার করুন

মন্তব্য

টি মন্তব্য করা হয়েছে

Leave A Reply

শেয়ার