উন্মুলিতও উড়তে জানে
তোমার প্রবঞ্চনার গোলটেবিলে
টুকটাক আমাকেই নেড়ে নেড়ে,
ঠিক কতটা ঈর্ষা ঘৃণায়,
চোখের বেগুনী পৃষ্ঠায় –
আমাকে উড়াও?
আমার বিপথগামী স্বপ্নের শিকে ছিঁড়ে,
কড়ে আঙ্গুলের অভিমান গলে পড়ে-
আমারই লোভের পৃষ্ঠায়।
“তুমি কি কিছু একটা
ভবিষ্যৎ দেখতে পাও?
যার প্রধান ফটকে বেঢপ চাঁদ সেঁটে দেয়া,
অথচ কারও চোখের সাঁকোতে
ভোগের তাড়া নেই।
নিকট আলিঙ্গনে ছায়ার স্মারক উধাও।
বিকেলপূর্ব আকাশ পরানো
একতাল বসত বাড়ি,
তুমি কি ভিজে দুপুরে,
চোখের উঠোনে রাখতে পারো?
আর রেখেছো কি জেনে,
ঘাসময় সেই বাস্তুভিটেয়,
আধদুপুর পরিশ্রমের পর
জোড়াছুট নুপুরের ইতিহাস নেই?
এর পালক সিঁড়িতে মেঘের সুতো
ধরে ধরে কেউ কবিতা ছোঁয় না।
বর্ষার পতিত আহ্লাদে তার শয্যা কক্ষ
ঘুমিয়ে বাজে, প্রথম প্রেমেরই মত।
সবুজ শিফন উড়ে না কখনো
ডাইনিং মেঝে ছুঁয়ে।
ড্রেসিং টেবিলের নাভিমূলে,
রিবনের ঝলক ডানায় ফুলের রূপান্তর নেই।
পর্দার মুঠো ধরে নীলিমার যাতায়াত
ঘটেনি কোনও কালে।
ছাদের সিঁড়িপথে ভুল আড্ডার
মুখরতা নেই।
নেই পিঠের দেয়ালে কাতর পুরুষ।
কিংবা গোপনজলে
উন্নাসিক পতন ধ্বনি।
বিপরীত শোরগোলে আলোগৃহটা
আমৃত্যু খোঁড়ানো বালিকা।”
রোদ রাত, শ্রাবণ স্কেচ, অঢেল ভোরে
পাখির মিছিল…আমি হয়তো পেতে পারি না,
ভিক্ষের জলটুকু গড়িয়ে কাঁদে
প্রবঞ্চনার গোলকধাঁধায়।
কিন্তু,
যদি,
ধ্রুবপুরুষ নিয়ে আসে,
ফিতে বাঁধা জোনাক ঘণ্টা,
ফিরতি বিকেলে ব্যালকনি থেকে
হাত বাড়িয়ে,
আমিও তো চাইতে পারি,
সূর্যের গোপন বিস্তার!
অভিমানিতা সেই ল্যান্ডফোন
পাহাড়ের জানালায় জলমেঘ ফুল দিয়েছি।
নদীতে নদীতে ভীষণ আকাশ।
তুমি মাত্র নূতন,
মাত্র প্রখর কিছু কথা হল কানফোনে।
ভালবাসার বংশবৃদ্ধি হল না কোন।
তুমি চোখ খোঁজ।
মুখে খোঁজ কথার ধূলো।
তুমি কি আমাকে খোঁজ?
কিংবা মিহিমাত্র বোঝ?
ভেতর রাতে, ভেতর বোধে
কিছু কিছু, হয়েছিল কিছু।
হাত দিতে যেন না বাঁধে,
তাই তিলে তিলে তিলোত্তমায়
মাঠে মাত্র গেলাম আমি।
খোঁজে খোঁজে কি কাক ছিলে তুমি?
আমিও ছিলাম, এটাই দেখনি।
যখন কথাদের ছেড়ে দিলে কল্প বিন্দু ঝড়ে,
রিসিভারটা চেপে দিলাম আর
জল, মেঘ, ফুলদের ভিজিয়ে রেখে
অথৈ রাতে আমি কোথায় ছিলাম,
দেখনি সেই সন্ধি, সৎকার।
তাই বলছি বাড়ন্ত নদী নিয়ে,
দ্রোহিতা বুকে,
আমি শুনছি না আর তোমায়।
জল মিথ, জল কিঞ্চিৎ
আহা শঙ্খবণিক,
পরাজিত জল তুমি কত দেবে আর?
নাগরিক টার্নিং পয়েন্ট,
ভিজে প্রিয় দাঁড়কাক।
স্বপ্নডিঙ্গার ডুব খেলা শেষে,
মেঘান্ত প্ল্যাকার্ড ঢাকা
“হৃদিভূমি” চাই একটা।
প্রতীচ্য ডাহুক রোজ রোজ
সুপ্রভাত দেখতে আসে…
আমি শুধু লজ্জানীতা নারী হয়ে,
পিরিয়ড গুঞ্জনে,
ভেঙ্গে দিতে চাই- অপরিণত ব্যর্থতা।
দ্রোহী মেঘ, ঢেউ পাখি, অভিন্ন প্রণয়,
পেন্টাগন কম্পনে বিধ্বস্ত।
শেষ ফিচার তবু-
প্রতিবাদী সিগন্যাল।
আমার ভীষণতায় যদি
চারতারা বাজে,
আমার প্লাবিত অভিমান, অভিযোগ
যদি হয়ে যায় উৎসব কান্না,
তবে- অগোচরে রেখে,
নদী, জল, ভালবাসা,
আমিও একদিন অন্তঃচিতায় যাব
প্রধূমিত সাজে।
সূর্য নিভে নিরুত্তরে
আজ যদি পাখিই হলাম,
শূন্যে স্থাপিত আকাশটা আমার।
যদি আজ বেদনার বাঁশি হই,
কান্নাদের সুরে পৌঁছিয়ে,
রাত দুটোয় আমি চাঁদকে লুটাবো
এই দূরের নদী ঘরে।
প্রজাপতির রঙের ক্যাটওয়াক,
বৃষ্টির শৈত্যের অহং…
আমাদের শুধু স্বপ্নই ভেঙেছে।
গড়েছি যাদের বছরে বছরে…।
দুপুরের মুচকি বাতাসে হেসেছি খুব একা,
দুর্নিবার রোপন জয়ে…
তারা পলকে মরে গেছে।
আমি খুব একা আবার,
দাফন শেষে চোখ ধুয়েছি।
আজ যদি দুটাকার
এক মোমবাতি হলাম,
পুড়োচ্ছি তোমাদের স্পর্ধা আর মিথ্যের চমক।
দুঃখে স্থাপিত এই বুকটা আমার,
জল জল মৃত্তিকায়।
সন্তাপে লিখে যাই
ক্ষোভ কিছু বাকি নেই।
দূরত্বের গল্পে লুটিয়ে থাকা
শরতেরা ছিল।
ছিল পাখা প্রিয় পরিণত স্বপ্ন
আর খড়কুটো সকাল।
এখানে কার বুকে কার সাধনা,
কোন হাতে চৈত্রের টান?
আর কার চোখগুলো ঘুম পাড়াতে জানে
ভয়ংকর কোলাহলে?
জন্ম থেকে দোলছি কোন গন্ধের মায়ায়?
তাই তুলে নেয়া ক্ষোভ
আর ক্ষয়িত যুদ্ধ ।
কাউকে চাই না আর বলতে কিচ্ছু।
দ্যা ফ্যাক্ট
তালগোল হেসে হেসে
গোল হয়ে বসে থাকি।
শখের পাল্লায় সুখ চুরি
হয়ে যায়, বসেই থাকি।
দ্যা মিটিং
আজ কিভাবে পথটা এক আর
আয়নার মত তুমি দাঁড়িয়ে?
তোমার হাতে খুঁজি দুপুর রোদ্র।
যে তোমার মানবী সে কেন নেই ছায়ার ভাঁজে?
সব পাখিরা চুপচাপ দেখতো আর
করতো কিছু হৃদয়ের রাণী আলাপ।
আমি মুগ্ধ আর রুদ্ধ হতাম
তোমাদের দুপুর জানালায়।
পৃথিবীটা পথেই দেখিয়ে দেয় কেন
পাথরিয় প্রার্থনা?
আমি চাই না আর কাঁদতে খুব।
বৃষ্টিতে ভিজিয়ে বুকটা
চলে যেতে নদীর কাছে।
যখন তুমি ছিলে না,
জেনেছি দুপুরের একা পাখিটার
কত দরকার গাছের বাহুল্য।
নিজেকে লুকাতে আকাশ কেন
মেঘের দোপাট্টা উড়ায়।
সন্ধ্যের রক্তপাত শুধু
সূর্যের ফ্যাশন সেন্স না।
আর আমার মা কেন রোজ ভোরে
আমাকে দেখে দীর্ঘ বদল নেয়।
জীবনটা জিততে পারিনি জীবন্ত উচ্ছলে,
তাই যাবতীয় যন্ত্রণায় যাপিত আমি।
তুমি যাও তাই একদম অদৃশ্যে ।
একরত্তি মুহূর্তে চাই না আমি,
একলক্ষ হার্টবিট।
আশা তবু ঠিক ঠাক
অবারিত গেরস্থালী,
জল তুলে নদীর বংশরক্ষা।
আকাশের সম্মানে
রোদ কুমার গল্পের
আবারও লুটপাট।
আমাদের এমনি কাটে দিন।
উত্তরপাড়ায় সু-ভাগ্যের
বৃষ্টি আসে যায়,
আমরা তাকিয়ে উদ্ধার।
বাঁশপাতা খেলাঘর
ঝাঁট দিই রোজ দু বেলা।
সবুজ স্বপ্নে উঠোনের কথা বলি।
চারদিকে চোখ রাখি,
যদি ফেরত আসে
দিগন্ত পাখির দৌড়!
নগরের গন্ধ আসে
দূর গাঁয়ে কোনদিন।
উৎসুক আড্ডায়
বৈধব্যের চকচক।
সেখানেও মেঘেদের পাল্টাপাল্টি।
এভাবেই রোদ কেনা বেচা,
নিঃস্ব রাতে ঐশ্বরিক চাঁদ।
তবু দিন কাটে, বংশ বাঁচে।
মুক্ত হাঁস দুপুরে
হয়তো বুকের ডাকে আগুনও লাগে।
ইতিহাস অতিদূরে
আমাদের প্রিয় দিন, চারফালি
শোক পৃষ্ঠার ছায়াভার তুলে নিয়ে
কবেই গোপন।
ভুলে গেছেন কি,
সে পাড়ার পাখি গল্পের রমণীরা?
মেয়েটা ছিল, সাতপাড়া উড়ে যাওয়া
যীশুঘণ্টার মত।
শতবর্ষী ধার চোখেরা বুঝি
শয্যায় বিশ্রামে আটা
ছেলেটা মলিন, স্মৃতিভ্রষ্ট,
বেঠিক চলনে বাতিল স্তূপ।
কাঁধচড়া বৃক্ষের ইতিহাস ডালে
পাতা গুঁজে আছে।
আমারও যে মেঘমুঠো কিছু
স্মৃতি জমে আছে।
আমি অনুমতি ভিখিরি,
রেখে যেতে পারি কি,
অযুত মৃত্যু অবধি তা
এই শহরের বিবরণে?
বালিকা তোমার গল্প বল
ডোরা কাটা বালিকা, নদ জড়ো চোখে,
চুল ঝড়ো দর্শনে, মেঘ ঘেঁষা বুকে।
চুপচাপ এই সে ছায়াহীন ঘুমে,
টুপ করে মিথ্যেটা মৃদু করে চুমে।
ছিপটানা শরত এ বালি হাঁস পাঠে,
তিন দুই পেছনে বালিকাটা হাঁটে।
চারু কারু বিদ্যেতে পাখি পত্র বাসে,
টুপ করে সত্যটা মৃদু করে হাসে।
হাত মুঠো দুঃখটা পোস্ট কার্ড হয়ে,
কিঞ্চিৎ মেঠো বর্ণে কাঁধ ভারী লয়ে।
চুপচাপ বালিকাটা পাখি ভিজে সাজে,
টুপ করে নিজেকে মৃদু করে ভাজে।