মুক্তি সিরিজ – রেজওয়ানুল হাসান

0

হলুদ প্রজাপতির ডানা জুড়ে সুখ
কালো ফোঁটা ভুলের বয়ান রাখো,
স্মৃতি ধোয় বুড়িগঙ্গা ঘোলা জল
বাথরুমের পাইপে লেগে থাকে কষ্ট।
আসাদগেটের ফুলগুলো জানে ব্যথা
তোমার চোখের তারার হতাশা গাঁথা,
রঙ চুষে সজীব আকার হয়ে বেরোয়
ফুলের সৌন্দর্য ভালোবাসার গজল শোনায়।
আগামী দিনের স্বপ্ন বোনে রৌদ্ররেণু
যান্ত্রিক হৃদয়ে চাষ চলে স্বার্থটুকু,
প্রেমের আরতি পেয়ে হেসে উঠে চাঁদ
সাগরের নোনা জলে বাঁচে শৈবাল উন্মাদ।
আশিকের কণ্ঠে খেলে মমতার ধ্বনি
আকুল রোদন বোঝে প্রেমমণি।

২.
মাটির বুকে মমতায় রাখে মাতৃরূপ তার
ঘ্রাণ আসে প্রতি শ্বাসে ফুসফুস হয় ভার।
আকাশ বাতাস নিয়ে শূন্য মাঝে খেলে খেলা
কালো থেকে শুরু নীল রঙ দেখে কাটে বেলা।
সত্য ফ্রেমে বন্দি থাকে মিথ্যা করে পায়তারা
তারো উর্ধে ক্রিয়াহীন দেখো হাচা মিছা গড়া।
দোয়েলের পালকে এঁকেছ আদি রঙ কথা
ফুল দল রাঙ্গা রঙে কালোহীন কষ্ঠ গাঁথা।
নীল মাছি উড়ছে ভনভনিয়ে কালো মাছি
লাল মাথা দুলিয়ে ময়লা তুলে নেয় চাঁছি।
কালার বাহার লাগে ভালো পাখির শরীরে
মাছগুলো রুপালি রুপের কৌটা খুলে ধরে।
বিচিত্র খেলায় হাসে বঙ্গমাতা প্রাণ খুলে
সেই দোলায় দুলে উঠে বিশ্বের মহাকালে।
ফড়িং স্বচ্ছ পাখা নেড়ে বসে করে বিশ্রাম
ঘাস ফুল লজ্জা পেয়ে মাথা নাড়ে অবিরাম।
 
৩.
লিখে রাখি ভাষাহীন কথাগুলো যতো
সদ্য জন্মা শিশু ফুটে থাকে মা’র কোলে।
পুত্র কন্যা ভেদাভেদ আছে সমাজেই ততো
পিতা-মাতা ঘর আলো করে সেই শিশু বলে।
আঁতুড় ঘরটি ভরে যায় বেহেস্তী সুগন্ধে
বাচ্চার মুখের ভাষা ফোঁটে উঁয়া শব্দে।
ক্ষুধা তৃষ্ণা এই বোল মার লাগে ধন্ধে
পলে পলে দিন যায় কান্না হাসি শব্দে।
চাঁদ সূর্য উঠে ডুবে তার নাই খেয়াল
মাই তার বিশ্বধরা এই পৃথিবীর মাঝে।
নারী সত্ত্বা আজ পূর্ণ যেনো হয়ে উঠলো
সন্তান রাখলে বুকে বেদনা হারায় সাঝে
ভালোবাসার প্রথম পাঠ নেয় শিশু
এই প্রেম মেলে কি আর অন্য কিছু।

৪.
জীবন চলছে ঢেউয়ের মতো বয়ে
উত্থান পতন অবিরত লাগে গায়ে,
খেলছো খেলা স্বাক্ষী রেখে দিয়ে
জবাফুল ফোঁটে ঝড়ছে খয়রী হয়ে।
পাখিগুলোর বাচ্চা দেখি তরুণ দেখি
বৃদ্ধ দেখি জোড়া দেখি মৃত কি দেখি,
সম্পর্ক জুড়ে দিয়ে ভাঙ্গতে বসেছো যে
গড়তে পারবে নতুন করে ধরে যদি সে।
জানি এসব ছাই পাশ লিখে হয় কিছু
বৃথা শ্রমে লিখছে তোমার জ্ঞানী হয় পিছু,
অর্থের পিছে ছোটাও খায়েশ অনুযায়ী
দিকভ্রান্ত পথিক তোমরা ভাব মনের খুশী।
আঁধারের মাঝে আলো যেনো রুপসি
ক্ষণেক আঁধারে ক্ষণেক আলোর সওয়ারী।

৫.
দক্ষিণা বাতাস গেয়ে যায় গান সুর
বাজাও বীণায় সারেগামা লাল ঠোঁট,
পদ্মদল কোমল রাঙ্গাল যুগল পা’র
সুরের তরঙ্গে দুলছিলো প্রেম ঘাট।
সরোবর স্বচ্ছ জল তাল দেয় রাজহাঁস
পালকে ঝলকে উঠে কিরণ তোমার,
বাতিঘরে খেলে যেমন আলোর ফাঁস
নাবিকের চোখের তারায় চমৎকার।
কালো কালি ধরতে পারে না কভু রঙ
মরিচীকা দৃশ্যপট স্থির হয়ে থাকে,
অতীত তোমার নাগাল কর শুধু ঢঙ
ছলনা আড়ালে হলে কেবা আর ডাকে।
খেলা শেষে তৈরি করো নতুন খেলা
খেলোয়াড় বাছতে তোমার যায় বেলা।

৬.
সংখ্যা গুণে আয়ু বেড়ে যায় স্পোকের
চাকার সাথেই নিবীর সম্পর্ক শলাকার,
রিক্সা জ্যান্ত চালক আরোহী ভ্রমণরত
ঘামের বিনিময়ে কেনা তার স্বপ্ন যতো।
আরোহী শ্রম বেচো টাকা বিলাসে মত্ত
নির্বিকার আসন বোঝার ভার কত,
পথিক ডানে বামে রেখে ছুটে রিক্সা
পেছনে তুলিতে আঁক জনপ্রিয় তরিকা।
পেশীবহুল হাতে ধরা হাতল দুটি
ভালোবাসায় ভরেছে নরম কঠিন জুটি,
কল্পনায় স্মৃতি মন্থন সজাগ দৃষ্টি
পেছনে বসা আরোহীরা করে খুনসুটি।
নব দম্পতি ফোয়ারার মতো কলরব
সাক্ষী চালক শ্রোতা ফ্রেম হুট আর সব।

৭.
বুদবুদ শব্দে তরকারী জ্বলছে চুলায়
নীল আলো আগুন তাপ লাগে হাড়ি,
অভুক্ত উদর অপেক্ষায় থমকে যায়
রান্না শেষে মিলবে আহার যেনো সবারি।
খাবারের জন্য বেঁচে আছে পৃথিবীর মাঝে
সূর্য উঠে চাঁদ ডোবে দিন রাতকে মেনে,
জঠর জ্বালা জ্বলে সবার শরীর মাঝে
অর্থ শ্রম যাচ্ছে চলে আনন্দ থাকে মনে।
খালি পেটে লাগে ভালো মধুর মধুর কথা
সংযম করার অভ্যাস শেখাবে আমায়,
শিশুকাল থেকে মিটাও ক্ষুধা যথা তথা
কেউ খায় কেউ আবার খাওয়ায়।
গল্প চলে নতুন দিনে নতুন রূপে
হাসি কান্না ঘিরে থাকে পেটের তাপে।

শেয়ার করুন

মন্তব্য

টি মন্তব্য করা হয়েছে

Leave A Reply

শেয়ার